বিক্রম রায়, কোচবিহার: সুকুমার রায়ের 'সৎপাত্র' গঙ্গারাম উনিশবার ম্যাট্রিক পরীক্ষায় বসেছিল। লাগাতার ব্যর্থতা সত্ত্বেও তার মনের জোর যে অদম্য ছিল তা বোঝাই যায়। কিন্তু দিনহাটার এক কিশোর পরীক্ষার ভয়ে ঘটাল মারাত্মক কাণ্ড। পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হতে পারে এই আশঙ্কায় নিজেই নিজের অপহরণের গল্প বানাল সে। যদিও শেষমেশ পুলিশের কাছে ধরা পড়ে যেতে হল। তবু তার ছক যে কোনও থ্রিলার সিনেমার চিত্রনাট্যকেও হার মানাবে।
ঘটনাটি কী? একটু পরিষ্কার করে বলা যাক। বৃহস্পতিবার রাত আটটা নাগাদ পুলিশের কাছে খবর আসে ষষ্ঠ শ্রেণির এক পড়ুয়াকে রাস্তায় ক্লোরোফর্ম দিয়ে বেহুঁশ করে গাড়িতে তুলে অপহরণ করা হয়েছে। তবে সে কোনও রকমে সেই গাড়ি থেকে পালিয়ে এলাকার একটি বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। ঘটনার তদন্তে নেমে কিশোরের কাছে ঘটনার বিবরণ শোনে পুলিশ। যে বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল সেই পরিবারকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সেই বয়ান শুনে সন্দেহ হয় তদন্তকারীদের।
[আরও পড়ুন: উপনির্বাচনের দিন আগ্নেয়াস্ত্র হাতে যুবকের ছবি ভাইরাল, বহিষ্কৃত পুলিশ আধিকারিক]
কিশোরটিকে যে জায়গায় অপহরণ করা হয়েছিল বলে দাবি করা হয়, সেই জায়গা ও আশপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ। সেই ফুটেজ দেখে চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায় পুলিশের! কারণ ছেলেটি যে জায়গার কথা বলেছিল, দেখা যায় সেখানে সে যায়ইনি। বরং অন্য একটি এলাকা থেকে টোটোতে উঠতে দেখা যায় তাকে।
অপহরণের ঘটনাটি মিথ্যা মনে হতেই কিশোরটিকে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রশ্নের মুখে সত্যি ঘটনা স্বীকার করে সে। জানায় সামনে পরীক্ষা। প্রস্তুতি ভালো না হওয়াতেই খারাপ ফলাফলের ভয়ে নিজেই অপহরণের গল্প সাজায় সে। দিনহাটা পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, "কিশোরটি পরীক্ষায় খারাপ ফলাফলের ভয়ে অপহরণের মিথ্য়া গল্প তৈরি করে। আমরা বাচ্চাটির কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা করছি। এই ধরনের ঘটনা আর না ঘটাই কাম্য।" ওই কিশোরকে পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছে পুলিশ।