সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ক্রিকেটের প্রতি ভালবাসার দৃষ্টান্ত দেখলে অবাক হতে হয়। কেউ শরীরে প্রিয় তারকার ট্যাটু বানিয়ে ফেলেন তো কেউ সাইকেল চেপেই দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে বিশ্বকাপের সাক্ষী থাকেন। তবে এবার যে ক্রিকেটভক্ত শিরোনামে উঠে এসেছে, তার কথা জানলে চোখের কোণ ভিজবেই। অ্যাসেজ দেখার জন্য চার বছর ধরে ডাস্টবিন সাফ করার কাজ করেছে ১২ বছরের খুদে।
ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম বড় লড়াই অ্যাসেজ সিরিজ। অ্যাসেজের ইতিহাস ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে বাইশ গজের শত্রুতাকে আরও দৃঢ় করে তোলে। গোটা দুনিয়ার ক্রিকেটপ্রেমীরা এই সিরিজের জন্য মুখিয়ে থাকে। তেমনই এক ভক্ত অ্যাসেজ দেখার জন্য চার বছর পরিশ্রম করেছে। তার নাম ম্যাক্স ওয়েট। দীর্ঘ পরিশ্রম শেষে অ্যাসেজ দেখার স্বপ্নপূরণ হয়েছে তার। শুধু সাধারণ দর্শক হিসেবে ম্যাচ দেখাই নয়, খুদে ভক্তর সঙ্গে কথাও বলেছেন কিংবদন্তিরা। আপ্লুত ম্যাক্স বলছে, “স্টিভ ওয়া, জাস্টিন ল্যাঙ্গার এবং নাথান লিওনের পাশে বসেছিলাম। জাস্টিন আমাকে তাঁর বই এবং নোটগুলি দেখালেন। স্টিভের সঙ্গে কথা বলেও দারুণ লাগল।” অস্ট্রেলিয়ার সমর্থক ম্যাক্স জানাল স্টিভ স্মিথ আর প্যাট কামিনসের খেলাই তার সবচেয়ে ভাল লাগে। সেই ফেভরিট তারকাদের সঙ্গেও কথা বলার সুযোগ পেয়েছে সে।
[আরও পড়ুন: ভরসার এই প্রতিদান দিলেন কোচ! চোখে জল নির্যাতিতা সাঁতারুর বাবার]
২০১৫ সালে ঘরের মাঠে নিজের দলকে বিশ্বকাপ হাতে তুলতে দেখেছিল ম্যাক্স। তখনই মনে মনে ঠিক করে ফেলেছিল একবার ইংল্যান্ডে গিয়ে অ্যাসেজ সিরিজের সাক্ষী হবেই। কিন্তু ক্যাঙারুর দেশ থেকে ইংল্যান্ড পাড়ি দেওয়া তো আর মুখের কথা নয়। এর জন্য মোটা অঙ্কের অর্থের প্রয়োজন। তবু ছেলের উৎসাহে ভাটা পড়তে দেননি বাবা ড্যামিয়েন। বলেছিলেন, ছেলে যদি ১৫০০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার জমাতে পারে, তাহলে ম্যাক্সকে খেলা দেখতে যেতে দেবেন। কীভাবে এত টাকা রোজগার করবে, প্রথমে ঠাউর করে উঠতে পারেনি কিশোর। তারপর মায়ের সঙ্গে পরামর্শ করে ঠিক করে, এক অস্ট্রেলীয় ডলারের বিনিময়ে প্রতি সপ্তাহে প্রতিবেশীদের ডাস্টবিনের ময়লা ফেলে আসবে। এই মর্মে একটি চিঠি লিখে প্রতিবেশীদের দেয় সে। সকলেই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায়। আর গত চার বছর ধরে এভাবেই বাড়ির ময়লা সাফ করেছে ম্যাক্স। শরীর খারাপ থাকলে কখনও-সখনও সে কাজ করে দিয়েছেন তার মা-বাবা ও ভাইও।
শেষমেশ প্রয়োজনীয় অর্থ জমিয়ে ফেলতেই কথা রাখেন বাবা। গোটা পরিবার মিলে ম্যাঞ্চেস্টারে অ্যাসেজের ম্যাচ দেখতে যান তাঁরা। খুদের এমন মানসিকতাকে বাহবা জানিয়ে তাদের কাছে টেনে নেন অজি কোচ ল্যাঙ্গার। অজিদের টিম বাসে চেপে ওল্ট ট্র্যাফোর্ড পৌঁছায় ম্যাক্স ও তার ভাই। ইচ্ছাপূরণের এ স্মৃতি ম্যাক্সের কাছে অত্যন্ত মধুর। নিঃসন্দেহে, একেই বলে ভালবাসা।
[আরও পড়ুন: মন ভরলেও ভরল না পয়েন্টের ঝুলি, হার দিয়েই প্রাক-বিশ্বকাপ অভিযান শুরু ভারতের]
The post অ্যাসেজ দেখার ইচ্ছাপূরণ করতে চার বছর ধরে সাফাইয়ের কাজ করেছে এই খুদে appeared first on Sangbad Pratidin.