হেমন্ত মৈথিল, মহাকুম্ভ নগর: মহাকুম্ভে মহাসমারোহে শুরু হল ব্রহ্মচর্য দীক্ষা অনুষ্ঠান। অন্ধকার থেকে আলোর পথে রওনা দিয়ে মহাকুম্ভের পবিত্রভূমি প্রয়াগরাজে চৈতন্যের সন্ধানে নতুপন পথ বেছে নিচ্ছেন তরুণরা। বুধবার মহাকুম্ভ মেলা প্রাঙ্গণে শ্রী শম্ভু পঞ্চঅগ্নি আখড়ায় দীক্ষাদান শুরু হয়েছে। কথায় বলে, ব্রহ্মচারী হওয়া সহজ নয়। ব্রহ্মচর্য পালনের জন্য ধর্মমার্গের গূঢ় তত্ত্বের সন্ধানে মনপ্রাণ নিবেদন করতে হয়।
![](https://mcmscache.epapr.in/mcms/434/a8a2c017e2b91afd0d2f9fd5d52ed44cbc32e704.jpg)
শুধু তাই নয়, মনুষ্য সমাজে তার প্রচারও করতে হয়। নিষ্ঠা সহকারে পালন করতে হয় কঠোর নিয়ম। বলে রাখা ভাল, চতুর্নামের ব্রহ্মচারীরা আদি গুরু শঙ্করাচার্যের ঐতিহ্য অনুসারে এই আখড়ায় রয়েছেন। শঙ্করাচার্যের মতে, ব্রহ্মই হল একমাত্র সত্য। এখেত্রে 'ব্রহ্ম' বলতে তিনি আত্মার কথা বলেছেন। অর্থাৎ ব্রহ্মকে জানার মানে নিজেকে জানা। এই আখড়ায় প্রকাশ, স্বরূপ, চৈতন্য এবং আনন্দের মধ্যেই শঙ্করাচার্যের স্বরূপ ফুটে উঠেছে। এখানে ঋগ্বেদ, সামবেদ, যজুর্বেদ ও অথর্ববেদ অধ্যয়ন করা হয়।
সমাজে গিয়ে ধর্মপ্রচারের জন্য ব্রহ্মচারীদের প্রস্তুত করা হয়। শ্রী শম্ভু পঞ্চঅগ্নি আখড়ার মহামণ্ডলেশ্বর সম্পূর্ণানন্দ মহারাজ জানিয়েছেন, এই আখড়ায় লক্ষাধিক ব্রহ্মচারী আছেন। তাঁর কথায়, "ব্রহ্মচর্যে দীক্ষিত হওয়ার বাসনা নিয়ে এলেও সহজে কাউকে দীক্ষা দেওয়া হয় না। সবার প্রথমে তাকে আখড়া এবং সনাতন ধর্মের ঐতিহ্যগুলি বুঝতে হবে। যখন আখড়ার পঞ্চরা মনে করেন যে তিনি ব্রহ্মচারী হওয়ার জন্য উপযুক্ত হয়ে উঠেছেন তখনই তাকে দীক্ষা দেওয়া হয়।"
মহারাজ আরও বলেন, একজন ব্রহ্মচারী হলেন সেই ব্যক্তি যিনি ধর্ম অনুসরণ করেন এবং সনাতন ধর্মের ব্যাখ্যা ও প্রচার করতে সক্ষম হন। শুধু তাই নয়, সাংসারিক জীবন ত্যাগ করে এখানে আসতে হয়। দীক্ষিত হওয়ার পর তাঁদের উপাধি দেওয়া হয় এবং যোগ্যতা অনুযায়ী সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সম্পাদক, শ্রীমহন্ত, মহন্ত, থানাপতি, কোতয়াল, পূজারির মতো পদে নিয়োগ করা হয়।