সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আস্থা, ভরসা কিছুই রইল না। অনেক আশা জাগিয়েও ব্রাজিলে চিনের (China) করোনা ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শেষপর্যন্ত স্থগিত হয়ে গেল। শেষ দফা ট্রায়ালের আগে কোনও কারণ ছাড়াই স্থগিত করে দেওয়া হল চিনা সংস্থা সিনোভ্যাকের তৈরি করোনাভ্যাক (CoronaVac)। সোমবার ব্রাজিলের স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক অধিকর্তা আনভিসা জানিয়েছেন, কিছু কুপ্রভাবের কারণে ট্রায়াল আপাতত বন্ধ করা হল। এই মুহূর্তে ব্রাজিলে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার ক্ষেত্রে আচমকা প্রতিষেধকের পরীক্ষা স্থগিত বড়সড় ধাক্কা বলেই মনে করা হচ্ছে।
করোনা ভাইরাস (Coronavirus) দমনে অব্যর্থ হাতিয়ার খুঁজে পেতে এই মুহূর্তে বিশ্বজুড়ে চলছে প্রতিষেধক আবিষ্কারের তোড়জোড়। সেসব তৈরির পর পরীক্ষামূলক প্রয়োগ পর্ব চলছে। চিনের করোনাভ্যাক এই মুহূর্তে শেষ পর্যায়ের ট্রায়ালের জন্য প্রস্তুত। তবে তারই মধ্যে চিন নিজের দেশে জরুরি পরিস্থিতিতে খুব কম হলেও প্রতিষেধকটি ইতিমধ্যেই প্রয়োগ করা শুরু করেছে। এই ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের পর ‘সবচেয়ে নিরাপদ’ বলে তকমা দিয়েছিল ব্রাজিল (Brazil)। শেষ দফা পরীক্ষার প্রস্তুতির মাঝে আচমকাই সাও পাওলোর গভর্নর দেশবাসীকে এতে অংশ নেওয়ার ফরমান জারি করেন। তা নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল ব্রাজিলের এই শহর। কেন চিনা প্রতিষেধকের পরীক্ষায় স্বেচ্ছাসেবক হওয়ার জন্য সকলকে বাধ্য করা হচ্ছে, এই প্রশ্ন তুলে সাও পাওলোর রাস্তায় বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।
[আরও পড়ুন: পূর্ব আফ্রিকার মোজাম্বিকে ‘আল্লাহু আকবর’ বলে ৫০ জনের শিরচ্ছেদ করল ISIS জঙ্গিরা]
এতেই কিছুটা ভাটা পড়েছিল করোনা প্রতিষেধকের শেষ দফার ট্রায়ালে। অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল, আদৌ ট্রায়াল হবে তো? শেষমেশ সেটাই সত্যি হল। ‘সবচেয়ে নিরাপদ’ ভ্যাকসিনেরও কুপ্রভাব পড়ছে বলে কার্যত স্বীকার করে নিল ব্রাজিলের স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা। জানা গিয়েছে, গত ২৯ অক্টোবর থেকেই সেখানে স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে করোনাভ্যাকের ট্রায়াল। এতদিন তা গোপন করা হয়েছিল। সোমবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা।
[আরও পড়ুন: করোনা মহামারীর কারণে হতে পারে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ, সতর্কবার্তা ব্রিটিশ সেনাপ্রধানের]
এই মুহূর্তে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই ক্রমশ কঠিন হচ্ছে ব্রাজিলে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে থাবা আরও চওড়া করছে মারণ জীবাণুটি। পরিসংখ্যান বলছে, ব্রাজিলের ৫৬ লক্ষ মানুষ আক্রান্ত, করোনার বলি দেড় লক্ষের গণ্ডি পেরিয়েছে আগেই। আশা করা হচ্ছিল, চিনের প্রতিষেধকের চূড়ান্ত ট্রায়াল হয়ে গেল আগামী বছরে প্রথমার্ধ্বে হয়ত তা দেশবাসীর হাতে আসবে। কিন্তু তা স্থগিত হওয়ায় সেই আশা বিশ বাঁও জলে। এই মুহূর্তে ব্রাজিলের পাশাপাশি তুরস্ক এবং ইন্দোনেশিয়াতেও করোনাভ্যাকের ট্রায়াল চলছিল। তারা অবশ্য এখনও কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।