দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: ইতিহাস গড়ল চুঁচুড়া (Chinsurah) মহকুমা আদালত। ২০২২ সালের শেষ তথা চতুর্থ লোক আদালতে শনিবার বিচারকের আসনে দেখা গেল সমাজকর্মী তথা তৃতীয় লিঙ্গের (Third Gender) অত্রি করকে। হুগলির ত্রিবেণীর বাসিন্দা অত্রি। ত্রিবেণীর একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা তিনি। এবার তাঁকেই দেখা গেল বিচারকের আসনে।
শনিবার চুঁচুড়া মহকুমা আইনি পরিষেবা সমিতির আয়োজনে চুঁচুড়া আদালতে চতুর্থ ন্যাশনাল লোক আদালত বসে। শনিবার পাঁচটি বেঞ্চে চার হাজার মামলা নিষ্পত্তির জন্য ওঠে। তিন বিচারকের সমন্বয়ে এক-একটি বেঞ্চ গঠিত হয়। এর মধ্যে প্রথম বেঞ্চে সমাজকর্মী অত্রি কর বিচারকের ভূমিকা পালন করেন। সবপক্ষের আবেদন শুনে যুক্তি বিবেচনা করে ন্যায়ের রায় দেন। লোক আদালতের কাজ শেষে অত্রি কর জানান, ”আজকের এই দিনটি আমাদের কমিউনিটির কাছে অত্যন্ত সম্মানের। আমি নিজে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তর কাছ থেকে একসময় পুরস্কার গ্রহণ করেছিলাম। যাঁরা একসময় বিভিন্ন কেসের বিচার করেছেন, তাঁরাই আজ পাশে বসে আমাদের কথা শুনছেন, সম্মান দিচ্ছেন – এটা অত্যন্ত সম্মানের।”
[আরও পড়ুন: ইস্তফা গ্রাহ্য নয়, শীতকালীন অধিবেশনে রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গেই]
এদিন জেলা লোক আদালতে (Lok Adalat) বিচারকের আসনে বসলেও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষজনকে নিয়ে সমাজের সামগ্রিক পরিস্থিতি ততটা আশাব্যঞ্জক নয়, তা মনে করেন অত্রি। তাঁর বক্তব্য, রাজ্য ও জেলা আইনি পরিষেবা কেন্দ্রগুলি তাঁদের সম্মান দিলেও তাঁদের সম্পর্কে মানুষের অজ্ঞতা এখনও যায়নি। অত্রির কথায়, এখনও প্রশাসনের অনেক জায়গায় তাঁদের দেখলে অনেকে হাসাহাসি করেন। প্রশাসনিক অনেক জায়গাতেই পেশা ভেদে এবং লিঙ্গ ভেদে সম্মান নির্ভর করে। এটা যদি না হতো তবে আজ লোক আদালতে এভাবে তাঁদের ডাক পড়ত না। জেলা আইনি পরিষেবা কেন্দ্রের পক্ষ থেকে শর্মিষ্ঠা ঘোষ জানান, অনেকদিন ধরে যে মামলাগুলো চলছে তা একদিনে মিটিয়ে ফেলা এই লোক আদালতের উদ্দেশ্য। আর সেখানে অত্রি যথেষ্ট দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছেন।