সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 'দবদবা প্রদর্শন'। বাংলা করলে দাঁড়ায় 'শক্তি প্রদর্শন'। শনিবার উত্তরপ্রদেশের কাইজারগঞ্জ সাক্ষী থাকল বিতর্কিত বিজেপি (BJP) নেতা ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের বিরাট সভার। প্রভাবশালী এই জাঠ নেতা কুস্তিগিরদের যৌন হেনস্তায় অভিযুক্ত। তাই শেষপর্যন্ত প্রার্থী করা হয়েছে তাঁর ছেলেকে। এই পরিস্থিতিতে ছেলের মনোনয়ন জমা দেওয়ার আগেই বিপুল সভা করে নিজের 'শক্তি প্রদর্শন' করলেন ব্রিজভূষণ।
হাজার দশেক মানুষ অংশ নিল সেই সভায়। যে ময়দানে সভা, তার আশপাশে ৫০০ থেকে ৭০০ এসইউভি গাড়ির ভিড়। বিধায়ক, জেলা পঞ্চায়েতের মাথা, বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্ব কে নেই সেই সভায়। অযোধ্যার ধর্মীয় নেতারাও ভিড় করলেন। কিন্তু সেই সভার মধ্যমণি ছিলেন ব্রিজভূষণই (Brij Bhushan)। হলুদ কুর্তা, কমলা স্কার্ফ ও ধুতি পরে হাতে মাইক্রোফোন নিয়ে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা গিয়েছে তাঁকেই। এখানেই শেষ নয়। বাকিদের জন্য সাধারণ চেয়ার থাকলেও ব্রিজভূষণের জন্য বরাদ্দ ছিল নরম কাউচ। সেখানে শরীর ডুবিয়ে প্রায় 'নায়ক' হয়ে উঠতে চাইলেন বিতর্কিত নেতা। তবে রাজনৈতিক বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়ে উত্তরপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী কেশবপ্রসাদ মৌর্য কিংবা নিজের ছেলে, কারও কাছেই ঘেঁষেননি ব্রিজভূষণ। বরং সভায় উপস্থিত জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করা এবং সকলের সঙ্গে যোগাযোগ করার কাজটা করে গেলেন তিনি। এমনকী, তাঁর ছেলে করণভূষণ সিং মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার সময়ও তাঁর সঙ্গে গেলেন না তিনি। জানিয়ে দিলেন, ''পাঁচজন মানুষকে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তাই ওরা যখন মনোনয়ন জমা দিতে গেল, আমি এখানে থেকেই এখানকার ব্যবস্থাপনার বিষয়ে লক্ষ রাখছিলাম।''
[আরও পড়ুন: ছিলেন ডাক্তার, হয়ে গেলেন দুধ বিক্রেতা! সিদুঁরদানের আগেই মুখোশ খুলল ‘গুণধরে’র, তার পর…]
এদিকে ব্রিজভূষণের ছেলে টিকিট পাওয়ায় পদত্যাগ করেছেন বিজেপির জোটসঙ্গী আরএলডির মুখপাত্র রোহিত জাখর। তাঁর দাবি, ব্রিজভূষণের ছেলেকে টিকিট দেওয়ার বিরোধিতা করেই তিনি ইস্তফা দিয়েছেন। প্রসঙ্গত, তিনি রাষ্ট্রীয় জাঠ মহাসংঘের সভাপতিও। এহেন প্রভাবশালী এক নেতার ইস্তফা বুঝিয়ে দিচ্ছে, ব্রিজভূষণের ছেলের প্রার্থী হওয়া বিজেপির জোটসঙ্গীদের অনেকের মধ্যেই অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিপুল ভোট পেয়েছিলেন কুস্তি ফেডারেশনের তৎকালীন সভাপতি ব্রিজভূষণ। কিন্তু গত বছর থেকেই একের পর এক অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। মহিলা কুস্তিগিরদের হেনস্তার অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের হয়। তবু এমন প্রভাবশালী নেতাকে উপেক্ষা করা কঠিন ছিল বিজেপির পক্ষে। তাই শেষপর্যন্ত তাঁর প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা কার্যত শূন্য হয়ে যেতেই তাঁর ছেলেকে প্রার্থী করেছে দল।