সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সিদ্ধান্ত নেওয়ার পালা শেষ। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন হচ্ছেই ব্রিটেন। বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে ইইউ-এর সদর দপ্তরে চিঠি পাঠিয়ে ব্রেক্সিট চুক্তি পিছনোর আরজি জানানো হলেও, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং আরেক মন্ত্রী এমনই ঘোষণা করে দিয়েছেন। এখানেও একটি বড়সড় গোলমাল পাকিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী জনসন। প্রথম চিঠিটি নিজের সই ছাড়াই পাঠিয়ে
দিয়েছিলেন। তা জানাজানি হতেই, শোরগোল ওঠে। এরপর বরিস দ্বিতীয় চিঠিটি পাঠান সই করে। যদিও চিঠিটি তিনি স্বেচ্ছায় পাঠাননি বলেই দায়সারাভাবে জানিয়েছেন, ‘এটা আমার চিঠি নয়, পার্লামেন্টের চিঠি।’ এনিয়ে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাউন্সিল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক।
[ আরও পড়ুন: স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবিতে জ্বলছে স্পেনের কাতালুনিয়া, বিক্ষোভ দমনে কড়া বার্তা মেয়রের]
আসলে ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে গোড়া থেকেই বেশ নাকানিচোবানি খেতে হয়েছে ব্রিটেনের নয়া প্রধানমন্ত্রীকে। তাঁর কেরিয়ারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জই ছিল এই ব্রেক্সিট। যার জন্যে পূর্বতন প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে’কে পদত্যাগ করতে হয়। এবং ব্রেক্সিটপন্থী হিসেবে ব্রিটেনের শাসনভার তুলে নেন লন্ডনের প্রাক্তন মেয়র বরিস জনসন। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বারবার ব্রেক্সিট চুক্তি পেশ হওয়ার কথা থাকলেও, বিরোধীদের চাপে তা বারবারই পিছিয়ে যাচ্ছিল। ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়নে ব্রিটেনের থাকার সময়সীমাও পিছোচ্ছিল। শেষ সময়সীমা দেওয়া হয় ৩১ অক্টোবর। আর বরিস জনসন তার মধ্যেই একটা চূড়ান্ত মীমাংসা করার সংকল্প নিয়ে ফেলেন।
শনিবারও ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট চুক্তি পেশ করার তোড়জোড় থাকলেও, কনজারভেটিভ পার্টির এমপি অলিভার লেটউইন তা পিছিয়ে দেওয়ার পক্ষে জোরদার সওয়াল করেন। তাঁর যুক্তি, এখনও চুক্তিটি পেশ হলেও, মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে তা নিয়ে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়। তাই এর জন্য আরও খানিকটা সময় নেওয়া হোক। তাঁর এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসেন অনেকেই। ফলে
ভোটাভুটিতে ব্রেক্সিট চুক্তি পেশ আরও খানিকটা পিছিয়ে যায়।
[ আরও পড়ুন: ১৩ বছরের কিশোরের কাঁধেই জাপানের রাজ পরিবারের ভবিষ্যৎ]
এরপরই একেবারে ক্ষেপে ওঠেন বরিস জনসন। তিনি প্রায় একতরফাভাবেই জানিয়ে দেন নিজের সিদ্ধান্তের কথা। তাঁর মতে, এভাবে বারবার পিছিয়ে যাওয়া কোনও কাজের বিষয় নয়। বরং এতে ব্রিটেনের আরও ক্ষতি হচ্ছে। যা-ই হোক, ব্রেক্সিটের শেষ দিন ৩১ অক্টোবর থেকে পিছনোর কোনও জায়গাই নেই। এসবের পরই প্রধানমন্ত্রী নিজে ইইউ কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠিয়ে তাতে লেখেন যে পার্লামেন্টের সিদ্ধান্ত যেন গ্রহণ না করে ইইউ কর্তৃপক্ষ। তাঁদের তরফে দেওয়া চূড়ান্ত সময়সীমা যেন পিছিয়ে দেওয়া না হয়। এই দুটি চিঠিকে হাতিয়ার করে আবার নতুন করে বিরোধিতায় নেমেছে লেবার পার্টি। চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীর দ্বিচারিতাই ধরা পড়েছে বলে তাঁদের কটাক্ষ। চুক্তিহীন ব্রেক্সিট অর্থাৎ যে পথে হাঁটতে চাইছেন জনসন, তা ব্রিটেনের ভবিষ্যতের জন্য সর্বনাশা বলেই মনে করছেন দেশের অধিকাংশ মানুষ। আর এই বিষয়টিই এই মুহূর্তে ব্রিটেনের ভবিষ্যত নির্ধারক। এর উপরে নির্ভর করছে বরিস জনসনের ভাগ্যও।
The post ‘৩১ অক্টোবরই বেরিয়ে যাবে ব্রিটেন’, ব্রেক্সিট পিছনোর আরজি জানিয়েও দাবি মন্ত্রীর appeared first on Sangbad Pratidin.