সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নির্বাচন এলেই প্রতিটি দেশে আচমকা কিছু ভোট পণ্ডিতের উদয় হয়। এদের কেউ কেউ আগেভাগেই জানিয়ে দেন কে কত আসন পাবে। কে জিতবে, কে হারবে। টিভিতে শোতে বসলে বা খবরের কাগজে কলম ধরলে তাদের যেন পাণ্ডিত্য শেষ হতে চায় না। বুথ ফেরত বা প্রাক নির্বাচনী সমীক্ষাতেও কত রকমারি তথ্যের হিসাব থাকে। তবে ভোটের ফল বেরোলে দেখা যায় অধিকাংশই তাদের অঙ্ক মেলাতে পারেন না। সেই ভুল স্বীকার করা দূরের কথা, তথাকথিত পণ্ডিতরা পুরনো তথ্যই আর মুখে আনতে চান না। দুনিয়া জুড়ে এই প্রবণতার মধ্যেও উলটপুরাণ ব্রিটেনে। নির্বাচনে লেবার পার্টি ৪০ শতাংশ আসন পাবে। নিজের দেওয়া এই হিসাব মেলাতে পারেননি ম্যাথু গুডউইন। ভুল স্বীকার করেই থামা নয়, ওই রাজনৈতিক বিশ্লেষককে টিভি চ্যানেলে লাইভ অবস্থায় বইয়ের পাতা চিবিয়ে পাপস্খলন করেছেন।
[অবশেষে হোয়াইট হাউসে থাকতে আসছেন মেলানিয়া, ব্যারন]
ব্রেক্সিটের রায় নিজেদের পক্ষে পেয়েছিলেন থেরেসা মে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে আরও দ্রুত বের হতে আত্মবিশ্বাসী মে নির্বাচন এগিয়ে আনেন। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠতার কিছুটা আগেই থামতে হয় মে-র কনজারভেটিভ পার্টিকে। পরপর জঙ্গি হানা, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। ব্রিটেন জুড়ে পরপর ঘটনার ঘটঘটা হলেও ভোটের ফল নিয়ে ইংরেজরা রীতিমতো উত্তেজিত ছিলেন। নির্বাচনের ফল কী হতে পারে, আদৌ কি চমক দেখাতে পারবে লেবার পার্টি। কনজারভেটিভরা কি ফের আসছে ব্রিটেনের মসনদে। এই নিয়ে শুরু হয় চুলচেরা বিশ্লেষণ। ৮ জুন ব্যালট বক্স খুলতেই বোঝা যায় ব্রিটেনের ভবিষ্যৎ ত্রিশঙ্কু হতে চলেছে।
ভোটের আগে অনেকেই থেরেসা মে-কে কার্যত জিতিয়ে দিয়েছিলেন। লেবার পার্টির জেরেমি করবিন গুরুত্ব পেলেও কেউই তার হয়ে সেভাবে বাজি ধরেননি। সেই দলেই ছিলেন ম্যাথু গুডউইন। কেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতির এই অধ্যাপক ব্রিটেনের পরিচিত নাম। রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসাবে তাঁর ব্যাখ্যা গুরুত্ব দেন ইংরেজরা। এহেন ম্যাথু ভোটের আগে জানিয়েছিলেন লেবার পার্টি এবার ভাল টক্কর দেবে। তাঁর ভবিষ্যৎবাণী ছিল লেবার পার্টি খুব বেশি হলে ৩৮ শতাংশের কাছাকাছি ভোট পাবে। কিন্তু ভোটের ফলে দেখা যায় ৪০.৩ শতাংশ ভোট পেয়েছে লেবার পার্টি। ম্যাথুর পূর্বাভাসের থেকে যা মাত্র ২ শতাংশ বেশি। ফল ঘোষণা হতেই লেবার পার্টির সমর্থকরা চোখা চোখা বিশেষণে ভরিয়ে দিয়েছিলেন গুডউইনকে। স্কাই নিউজের স্টুডিওয় ভোটের বিশ্লেষণ করেছিলেন ম্যাথু। জানিয়েছিলেন পূর্বাভাস ভুল হলে নিজের লেখা বই চিবিয়ে খাবেন। অঙ্ক মেলাতে না পেরে অজুহাত নয়, নিজের ভুল স্বীকার করে নেন ওই অধ্যাপক। সবাইকে অবাক করে নিজের লেখা ব্রেক্সিট নিয়ে বই চিবিয়ে খান। এমন অদ্ভুত কাণ্ড নিয়ে টুইটারে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ম্যাথু গুগউইন। তিনি লেখেন, ‘আমি যা বলেছিলাম তা ভুল। ভাবতে পারিনি জেরেমি করবিনের নেতৃত্বে লেবার পার্টি এতটা ভোট পাবে। আনন্দের সঙ্গে আমার নতুন ব্রেক্সিট বই চিবিয়ে খেয়েছি।’ গুডউইনের এই নজির অবশ্য তথাকথিত অনেক পণ্ডিতদের বুঝিয়ে দেওয়া হল মানুষমাত্র ভুল হয়। নিজের ভুল মেনে নিলে আর কোনও সমস্যা থাকে না।
The post মেলেনি সমীক্ষা, তা বলে এ কী করলেন ব্রিটেনের ভোট বিশ্লেষক! appeared first on Sangbad Pratidin.