শেখর চন্দ্র, আসানসোল: সালানপুরের যুবতী খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার ‘ভিক্ষাদাদা’। পুলিশ সূত্রে খবর, সম্পত্তি নিয়ে বচসার জেরেই ‘ভিক্ষাদাদা’র হাতে বোনকে খুন হতে হয়েছে। সালানপুর থানার পুলিশ ধৃতকে আদালতে পাঠায়।
বৃহস্পতিবার সকালে সালানপুর থানার মাধাইচক থেকে বোলকুন্ডা যাওয়ার রাস্তার পাশেই মিঠু রায়ের অর্ধনগ্ন অবস্থায় মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দারা ধর্ষণের অভিযোগ করলেও ময়নাতদন্তের পর জানা যায় শারীরিক অত্যাচার হয়নি। সেরকম কোনও অত্যাচারেরও চিহ্ন তাঁর শরীরে পাওয়া যায়নি। তবে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। মিঠু রায়ের বাবা দামোদর রায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেই প্রেক্ষিতে তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, মিঠু রায়কে (৩৪) খুন করেছে তাঁরই ‘ভিক্ষাদাদা’ লাল্টু চট্টোপাধ্যায় (৪০)।
[আরও পড়ুন: বাবরি ধ্বংসে যোগ দিয়ে হারিয়েছিলেন হাঁটার ক্ষমতা, মোদির কাছে বিশেষ আর্জি সেই করসেবকের]
তদন্ত নেমে মিঠু রায়ের মোবাইল ফোনের কল ডিটেলস বের করে। পরীক্ষা করে জানতে পারে বোলকুন্ডা গ্রামের বাসিন্দা মিঠুর ‘ভিক্ষাদাদা’ লাল্টুর সঙ্গে তাঁর সবথেকে বেশি কথা হয়। সন্দেহের বসেই পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে লাল্টু স্বীকার করেন, দামোদর রায়ের সম্পত্তি নিয়ে তাঁর সঙ্গে মিঠুর দীর্ঘদিন ধরে অশান্তি চলছিল। জানা গিয়েছে, দামোদরের সব সম্পত্তির হিসেবনিকেশ বহুদিন ধরেই লাল্টু রাখতেন। এদিকে বয়স বাড়তেই মিঠু সেই হিসেবনিকেশ দেখতে চাইতেন। তা নিয়েই অশান্তি। দামোদর আগেই ঘোষণা করেছিলেন, তাঁর সম্পত্তি সমান দুই ভাগে ভাগ হবে। এতে আপত্তি ছিল মিঠুর। মিঠু ও লাল্টু দুজনেই সম্পূর্ণ সম্পত্তির অধিকার চাইছিলেন। মিঠু নিজের সমস্ত খরচ লালটুকে দিতে বাধ্য করতেন বলে অভিযোগ।
তদন্তে পুলিশ জানতে পারে মঙ্গলবার মিঠু রায় বাড়ি থেকে পিকনিকের নামে বেরোলেও তিনি প্রথমে যান লাল্টুর পাহাড়গোড়ার বাড়িতে। সেখানে খরচ বাবদ টাকার দাবি করেন। এই নিয়েই মিঠুর সঙ্গে প্রথমে ঝগড়া পরে হাতাহাতি বাঁধে। রাগের বশে মিঠুর মুখ চেপে ধরে লাল্টু। তার জেরেই মৃত্যু হয় মিঠুর। তার পর দেহটি বোলকুন্ডার রাস্তার পাশেই জঙ্গলে ফেলে পালিয়ে যায় লাল্টু। লাল্টু পুলিশের কাছে দোষ স্বীকার করে।