ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: প্রথমে সংক্রমিত হয় গবাদি পশু। তারপর তা ছড়িয়ে পড়ে মানুষের মধ্যেও। এই ধরনের রোগকে বলা হয় জুনোসিস। একইরকম রোগ ব্রুসেলোসিস (Brucellosis)। পুরো নাম ব্রুসেলিয়া অ্যাবরোটাস। অন্তত ৪০ জন এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলে স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে খবর। নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ ও বর্ধমান জেলার প্রাণিবন্ধুদের মধ্যে এই রোগ দেখা গিয়েছে।
কলকাতার স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে প্রায় ১০০ জন প্রাণিবন্ধু জ্বর, গা ব্যথা, মাথার যন্ত্রণা-সহ বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে দেখাতে এসেছিলেন। ট্রপিক্যালের ভাইরোলজি বিভাগে তাঁদের রক্ত পরীক্ষা করে ব্রুসেলোসিস রোগ শনাক্ত করা হয়। সমস্ত তথ্য পাঠানো হয়েছে স্বাস্থ্যভবনে। আক্রান্তদের পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। তাঁদের অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা হবে।
[আরও পড়ুন: WBJEE Exam 2022: অফলাইনেই হবে রাজ্যের জয়েন্ট এন্ট্রান্স, ঘোষিত হল পরীক্ষার সূচি]
মূলত গবাদি পশুর দুধ, চিজ এমনকী শ্বাসপ্রশ্বাস থেকেও এই রোগ ছড়াতে পারে। সেজন্য গবাদি পশুর ব্রুসোলোসিস রুখে দেওয়ার জন্য ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। এখন প্রশ্ন হল, এই ৪০ জন প্রাণিবন্ধু কীভাবে আক্রান্ত হলেন? তাঁরা যে জায়গায় কাজ করছিলেন সেখানে কি পর্যাপ্ত গবাদি পশুর রোগ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা ছিল না? এই তথ্যও জানতে চাইছে স্বাস্থ্যভবন। ভাইরোলজিস্টদের বক্তব্য, গবাদি পশুকে কৃত্রিমভাবে গর্ভাধান করার সময় রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা বেশি। ব্রুসোলোসিস রোগে গবাদি পশুর মৃত্যু হতে পারে। তবে সংক্রমিত ব্যক্তি থেকে অন্য কেউ নতুন করে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। ভাইরোলজিস্টদের বক্তব্য, গোটা বিষয়টি নিয়ে আরও সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। দরকার আরও গবেষণার যাতে মানুষের মধ্যে এই রোগ কোনওভাবে সংক্রমিত না হয়।
মূলত খামার থেকেই রোগ সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই সংক্রমিত বা অসুস্থ গবাদি পশুকে আলাদা করে রাখতে হয়। তাদের থেকে যাতে রোগ না ছড়ায় তার জন্য ব্যবস্থা করতে হয়। আর শুরুতেই সমস্ত গবাদি পশুকে ব্রুসোলোসিস ভ্যাকসিন দিয়ে রাখলেই সতর্কতা মিলবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।