shono
Advertisement
Buddhadeb Bhattacharjee

বামপন্থীরা অস্তিত্বের সংকটে ভুগবে, মোদি প্রধানমন্ত্রী হবেন, অনেক আগেই ভবিষ্যদ্বাণী করেন বুদ্ধ

বুদ্ধবাবুর সেই ভবিষ্যদ্বাণী মিলে গিয়েছে অক্ষরে অক্ষরে।
Published By: Subhajit MandalPosted: 01:02 PM Aug 09, 2024Updated: 03:50 PM Aug 09, 2024

বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: ১৩ সালের ৫ জানুয়ারি। পূর্ব মেদিনীপুরের চন্ডীপুর। জেলা সিপিএমের প্রকাশ্য সমাবেশ। ভিড়ের চাপে বাইকে করে সভাস্থলে আসতে হয় সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে। সভা শেষে মঞ্চের পিছনে এক হাতে চায়ের কাপ, অন্য হাতে সিগারেটে সুখটান দিতে দিতে অমোঘ ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (Buddhadeb Bhattacharjee)। বলেছিলেন, এবার গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন। আর সেই সঙ্গে কমিউনিস্টরা অস্তিত্বের সংকটে পড়বে। শুনে চমকে উঠেছিলাম। কারণ তখনও ১৪ সালের লোকসভা নিয়ে তেমনভাবে আলোচনাই শুরু হয়নি। সেই ভবিষ্যদ্বাণী আজ বাস্তব।

Advertisement

তখন কয়েকমাস হয়েছে রাজ্যে পালাবদল হয়েছে। ৩৪ বছর পর বামফ্রন্ট সরকারের পতন হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তিনি প্রাক্তন। কিন্তু যেহেতু বিরোধী দল সিপিএমের জনভিত্তি রয়েছে এবং বুদ্ধবাবুর জনপ্রিয়তাও রয়েছে তাই বৈদ্যুতিন মাধ্যমের হয়ে সেই সমাবেশ কভার করতে যেতে হয়। প্রথমেই যেটা চমকে দিয়েছিল তা হলো সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রাম পরবর্তীতে রাজ্যে ক্ষমতা পরিবর্তন। অথচ চন্ডীপুর মাঠে উপচে পড়া ভিড়। খবর এলো ভিড়ের জন্য মাঠে আসতে পারছেন না বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। মাঠ থেকে অনেক দূরে কনভয় থামিয়ে এক কমরেডের বাইকের পিছনে চেপে বসেন। ভিড় ঠেলে কোনওক্রমে সভাস্থলে পৌঁছন। প্রায় ৪০ মিনিট বক্তৃতার পর মঞ্চের পিছনে একটি জলপানের জন্য একটি জায়গা করা হয়েছিল। সেখানে গিয়ে বসেন। অতি উৎসাহী আমরা তিনজন সাংবাদিক উঁকিঝুকি মারছি। দেখতে পায়েই আমাদের ভিতরে আসতে বললেন। যথারীতি রাজ্য ও জাতীয় রাজনীতি নিয়ে কথাবার্তা শুরু হয়। আচমকাই মনের ভিতরের থাকা প্রশ্নটা করে ফেলি।

[আরও পড়ুন: পাম অ্যাভিনিউয়ের নাম বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সরণী! প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে শ্রদ্ধা জানাতে সিদ্ধান্ত পুরসভার]


জিজ্ঞাসা করলাম, দেড় বছর পর লোকসভা নির্বাচন। কি হতে পারে? প্রশ্ন করতেই বললেন, “গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বিজেপি প্রধানমন্ত্রী মুখ করবে।” কারণ জানতে চাইতেই বলেন, “এর পিছনে মূলত তিনটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, মোদিকে নতুন করে হিন্দুত্বের প্রমাণ দিতে হবে না। আর হিন্দুত্বই বিজেপির প্রধান অস্ত্র। দ্বিতীয় কারণ, গুজরাটের উন্নয়ন ও শিল্পায়নের বিরোধিতা কংগ্রেস বা কমিউনিস্টরা বিরোধিতা করতে পারবে না। আর তিন নম্বর কারণ, ইউপিএ সরকারের দুর্নীতিতে মানুষ বিরক্ত। মোদির দিকেই ঝুঁকবেন দেশের মানুষ।” তাহলে আগামী দিনে দেশ কোন পথে চলবে? প্রশ্নের উত্তরে যা বললেন তাও চমকে দেওয়ার মতো। জানিয়েছিলেন, নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হলে সবচেয়ে বেশি আক্রমণ নেমে আসবে বামপন্থীদের ওপর। আক্রমণ এতটাই তীব্র হবে যে বামপন্থীরা তার মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হবে। ফলে দেশজুড়ে বামপন্থীরা অস্তিত্বের সংকটে পড়বে। পার্টিকে জানিয়েছেন আপনার আশঙ্কার কথা? জানান, অনেক আগেই জানিয়েছি। সেইমতা প্রস্তুতিও চলছে। কিন্তু কতখানি কি করা যাবে তা জানি না।

[আরও পড়ুন: মেনুতে মৌরলা-ইলিশ, কুমড়ো ফুলের বড়া! ‘খাদ্যরসিক’ বুদ্ধবাবুকে স্মরণ পুরুলিয়ার পাচকের]

সন ও তারিখ বলে দিচ্ছে ১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের তখনও প্রায় দেড় বছর বাকি ছিল। নির্বাচন নিয়ে সংবাদমাধ্যম বা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোনও আলোচনা ছিল না। নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে তো একেবারেই নয়। তারও প্রায় একবছর পর বিজেপি মোদিকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী মুখ বলে ঘোষণা করে। আজ ২৪ এ ১৩ সালে করে যাওয়া ভবিষ্যদ্বাণী বাস্তব। তৃতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর অস্তিত্বের সংকটে বামপন্থীরা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • সিগারেটে সুখটান দিতে দিতে অমোঘ ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।
  • বলেছিলেন, এবার গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন। আর সেই সঙ্গে কমিউনিস্টরা অস্তিত্বের সংকটে পড়বে।
Advertisement