ধীমান রায়, কাটোয়া: অস্তিত্ব ‘তাদের’ আগে থেকেই ছিল। তবে বংশবিস্তার ছিল নিয়ন্ত্রণে। তাই রোগী বা রোগীর পরিজনদের ততটা মাথাব্যথার কারণ হয়ে ওঠেনি ‘তারা’। কিন্তু দীর্ঘ লকডাউনের সুযোগে এখন লাগামছাড়া বংশবিস্তার ঘটিয়ে রীতিমতো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ছাড়পোকার দল। তাও আবার হাসপাতাল চত্বরে। আর তাতেই বিপদ বেড়েছে। প্রতি মুহূর্তেই প্রায় সকলকে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে তারা।
পূর্ব বর্ধমান জেলার ‘অনাময়’ হাসপাতালে ঝাঁকে ঝাঁকে ছাড়পোকা বাহিনী রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে রোগীদের। তাদের আক্রমণ থেকে বাদ যাচ্ছেন না রোগীর সঙ্গে থাকা পরিজনরাও। হাসপাতালের কর্মীরা ছাড়পোকার অস্তিত্বের কথা স্বীকার করে জানান, ছাড়পোকা মারতে প্রতি দু-তিন সপ্তাহ অন্তর স্প্রে করা হয়। তার জন্য একটি এজেন্সিকে দায়িত্ব দেওয়া আছে। কিন্তু দীর্ঘ লকডাউনের কারণে ছাড়পোকা নিধনকারী ওষুধ স্প্রে করার লোকজন আসেনি। তাই ছাড়পোকার বংশবিস্তার অনেক বেড়ে গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: রাজ্যে করোনার বলি দু’শো ছুঁইছুঁই, স্বাস্থ্য দপ্তরের নতুন বুলেটিনে বাড়ল উদ্বেগ]
বর্ধমান মেডিকেল কলেজের অধীন সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল এবং ট্রমা সেন্টার হল ‘অনাময়’। ৯০ শয্যার এই হাসপাতালে মূলত নিউরোলজি এবং কার্ডিওলজি বিভাগের চিকিৎসা হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজ্যে নামডাক আছে অনাময় হাসপাতালের। রাজ্যের বিভিন্ন জেলা তো বটেই, ভিনরাজ্যের রোগীরাও এই সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসেন। জটিল রোগীদের চিকিৎসা হয়। তার জন্য রোগীর সঙ্গে তাঁদের পরিবারের একজনকে সর্বক্ষণ থাকা বাধ্যতামূলক।
হাওড়া থেকে আসা এক রোগীর আত্মীয় দেবু মান্না বলেন, “অনাময় হাসপাতাল যথেষ্ট পরিষ্কার পরিছন্ন। চিকিৎসা উন্নতমানের। এসব নিয়ে আমাদের কোনও অভাব-অভিযোগ নেই। কিন্তু এত ছাড়পোকার উপদ্রব যে রাতে চোখের পাতা এক করার জো নেই। ঝাঁকে ঝাঁকে ছাড়পোকা ছেঁকে ধরছে। শরীরের সর্বাঙ্গ ফুলিয়ে দিচ্ছে।” সাদ্দাম শেখ নামে এক রোগীর কথায়, ”শুধু রাতেই নয় দিনের বেলাতেও ছাড়পোকা কামড়াচ্ছে। আমাদের বেডের তলায় শয়ে শয়ে ছাড়পোকা বাঁসা বেধেছে। ছাড়পোকা মারার ব্যবস্থা করলে ভাল হয়।”
[আরও পড়ুন: নষ্ট হল রেশনের বিশেষ রমজান প্যাকেজ, দ্রুত ভেজা শস্য সরাচ্ছে খাদ্যদপ্তর]
তবে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক কর্মী বলেন, “আনাময় হাসপাতালে আগে ছাড়পোকার উপদ্রব ছিল না। বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে রেফার করা রোগীদের থেকেই এখানে এসেছে। পাশাপাশি ছাড়পোকা মারার ওষুধ ছড়ানোর দলটিকে বারবার জানানো সত্বেও তারা লকডাউনের কারনে আসছেন না। তাই অনেক বেড়ে গিয়েছে।” পূর্ব বর্ধমান জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায়কে এ প্রসঙ্গে জানতে একাধিকবার ফোন করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন না ধরায় মতামত জানা সম্ভব হয়নি।
The post বর্ধমানের সুপার স্পেশ্য়ালিটি হাসপাতালে নতুন বিপদ, রোগীদের রাতের ঘুম কাড়ছে ছাড়পোকার দল appeared first on Sangbad Pratidin.