নব্য়েন্দু হাজরা: ট্রেনে টিকিট নেই। গাড়ির ভাড়াও দিনে দিনে চড়ছে। ১৫ আগস্টের ছুটিতে যে কাছেপিঠে দীঘা-মন্দারমনি ঘুরে আসবে মধ্যবিত্ত বাঙালি, তারও উপায় নেই। এসি বাসের ভাড়া এখনই দ্বিগুণ। কোনও কোনও বাসে তো তার চেয়েও বেশি। যত দিন যাবে এই ভাড়া আরও বাড়বে বলেই জানাচ্ছেন বাসমালিকরা।
এখন অনলাইনে এসি বাসের টিকিট কাটতে গেলে দ্বিগুণ ভাড়া দেখাচ্ছে। যেহেতু দূরপাল্লার বাসে ফ্লেক্সি ফেয়ার করা হয়েছে, মানে চাহিদা বাড়লেই দাম বাড়বে, তাই হচ্ছে এখানে। সাধারণ সময়ে ধর্মতলা থেকে দীঘার এসি বাসের ভাড়া থাকে ৪২০ থেকে ৪৫০ টাকা। ১২ আগস্ট সেই ভাড়া এখনই চড়েছে ৯০০-৯৫০ টাকায়। ১৩ এবং ১৪ পর্যন্ত দীঘাগামী বাসে আর ১৫ এবং ১৬ আগস্ট কলকাতায় ফেরার বাসের ভাড়া ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গিয়েছে। ওই দু’দিন বাসের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে বলেই জানিয়েছে বেসরকারি বাস সংস্থাগুলো।
[আরও পড়ুন: বৃষ্টিতে ভিজেই পঞ্চায়েতে জয়ের জন্য ধন্যবাদ জানালেন মমতা, আবেগে ভাসল জনতা]
এবার ১৫ আগস্ট মঙ্গলবার। মাঝে সোমবার ছুটি নিলেই শনি থেকে মঙ্গল টানা চারদিন ছুটি। এই ছুটিটাকে কাজে লাগিয়েই দিন তিনেকের জন্য কাছেপিঠে ঘুরে আসতে চাইছেন বহু মানুষ। আর তাতেই হু হু করে বাড়ছে বাস-গাড়ির ভাড়া। হোটেলেরও এক অবস্থা। দীঘা, মন্দারমণি, বকখালি, পুরুলিয়া-বঁাকুড়ার হোটেলের ভাড়াও এই ক’দিন বেড়ে গিয়েছে। অধিকাংশ জায়গাতেই তিন-চার মাস আগে থেকে পর্যটকরা বুকিং করে রেখেছন বলে জানাচ্ছেন হোটেল মালিকরা। তঁাদের কথায়, কিছু ঘর রেখে দেওয়া হয়েছে, চাহিদা অনুযায়ী সেগুলোর ভাড়া বাড়বে। শুধু দীঘা নয়, বকখালি, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বঁাকুড়াগামী বাসের ভাড়াও চড়ছে।
বাসমালিকদের দাবি, টানা এরকম ছুটি পড়লেই বাসের ভাড়া বাড়িয়ে দেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। একাধিক বেসরকারি বাস সংস্থা নিজেদের মধ্যে ঠিক করে ভাড়া বাড়িয়ে রাখেন। ফলে সাধারণ মানুষ বাধ্য হয়েই অনলাইনে বাড়তি টাকা দিয়ে টিকিট কাটেন। ধর্মতলা এবং হাওড়ায় হয় টিকিটের কালোবাজারি। সরকার এবিষয়ে কোনও নজরদারি চালায় না।
[আরও পড়ুন: একুশের মঞ্চে মজবুত INDIA! কংগ্রেসকে নিয়ে একটিও শব্দ খরচ করলেন না মমতা]
পরিবহণ দপ্তর সূত্রে খবর, এসি বাসের সরকারি বিজ্ঞপ্তি আছে। সেই অনুযায়ী ২ টাকা ২০ পয়সা প্রতি কিলোমিটার ভাড়া হওয়ার কথা। হিসেব মতো সেক্ষেত্রে কলকাতা থেকে দিঘার দূরত্ব ১৮০ কিলোমিটার। ভাড়া হওয়ার কথা ৪০০ টাকা। বড়জোর ৪২০ টাকা। অথচ সেই ভাড়াই এখন উঠেছে ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা। এরপর তা আরও বড়তে পারে। কারণ চাহিদা বাড়লেই নিজেদের মতো করে এর ভাড়া বাড়ে। তা নিয়ন্ত্রণ করে বাসস্ট্যান্ডে থাকা স্থানীয় সিন্ডিকেট। সরকারি বাসে অবশ্য ভাড়া বাড়ার কোনও বিষয় নেই। তবে সেই এসি বাসে সিটও নেই। অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সরকারি ছুটি পড়লেই দূরপাল্লার বেসরকারি বাসের ব্যাপক টিকিটের কালোবাজারি শুরু হয়। সরকারের এটা নজর দেওয়া উচিৎ।’’