সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: নিতান্ত দৈবক্রমে বাধা পেরিয়ে, হামলা থেকে আত্মরক্ষা করে ডায়মন্ড হারবারের সভায় পৌঁছনো সম্ভব হয়েছে। সভার শুরুতেই তাই ‘মা দুর্গার’ কৃপার কথা বললেন বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা (JP Nadda)। আরও বললেন যে বুলেটপ্রুফ গাড়িতে তিনি ছিলেন বলে বেঁচে গিয়েছেন। তাঁদের প্রত্যেকটি গাড়িতে তৃণমূল কর্মী, সমর্থকরা হামলা করেছে বলে অভিযোগ তাঁর। এদিনের সভা থেকে ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রে ঘাসফুলকে ধুলিসাৎ করে পদ্ম ফোটানোর অঙ্গীকার করলেন তিনি।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারে (Diamond Harbour) গিয়ে সুর আরও খানিকটা চড়াবেন বিজেপি (BJP) সর্বভারতীয় সভাপতি, তেমনটাই মনে করা হয়েছিল। তবে যাওয়ার পথেই বাধা পেয়ে আরও আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে দেখা গেল তাঁকে। বললেন, ”এ রাজ্যে জঙ্গলরাজ চলছে, আইনের শাসন বলে কিছু নেই। শুধু কাটমানি আর কাটমানি। মোদিজি অর্থ দিচ্ছেন আর কাটমানিতেই সব শেষ হয়ে যাচ্ছে। ডায়মন্ড হারবারে কার্যকর্তাদের বৈঠকে আসার পথে আমার কনভয় হামলা হয়েছে। মুকুল রায়, কৈলাস বিজয়বর্গীয়র উপরও আক্রমণ হয়েছে। দেখুন, তাঁরা জখম। এই আক্রমণের তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছি। পুলিশ প্রশাসনেরও রাজনীতিকরণ হয়ে গিয়েছে, বোঝা যাচ্ছে।” এরপর সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের নাম নিয়ে নাড্ডার হুঙ্কার, ”মমতাজির দিন শেষ। বর্বর সরকার উৎখাত হবেই। এখানে পদ্ম ফুটবে। মমতাজি, আপনি বিশ্রাম নিন। এবার বিজেপিকে বাংলার উন্নয়নে কাজ করতে দিন।”
[আরও পড়ুন: ডায়মন্ড হারবার যাওয়ার পথে সরিষায় নাড্ডার কনভয়ে হামলা, গাড়ি ভাঙচুর]
সংক্ষিপ্ত ভাষণের পর খুব কম সময়ের জন্য দলীয় কর্মীদের সঙ্গে একান্ত আলোচনায় বসেন জেপি নাড্ডা। বিজেপির কার্যকর্তাদের প্রতি তাঁর নির্দেশ, আগামী চার মাস বিভিন্ন বুথে বুথে ঘুরে মানুষের কাছে যেতে হবে, মানুষের সঙ্গে কথা বলতে হবে। খোঁজখবর নিতে হবে তাঁদের অভাব-অভিযোগের। এদিকে, ডায়মন্ড হারবারের পথে কনভয়ে হামলার কথা নিজেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে জানিয়েছেন বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। আর সঙ্গে সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে রাজ্যের কাছে এ বিষয়ে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। এদিকে, এই হামলার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টে থেকে সন্ধে ৬টা পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে বিজেপি।
[আরও পড়ুন: এখনও হল না উলেন রায়ের দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত, পুলিশের বিরুদ্ধে FIR মৃত বিজেপি নেতার স্ত্রী’র]
তবে এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছে তৃণমূল (TMC)। দলের বর্ষীয়ান নেতা এবং রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের দাবি, প্ররোচনার উদ্দেশে এটা বিজেপিরই পরিকল্পিত গন্ডগোল। তৃণমূল কর্মীদের কাছে তাঁর অনুরোধ, কোনও প্ররোচনায় পা দেবেন না। এছাড়া পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, কেন্দ্রের নেতারা নিজেরাই নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে আসেন। রাজ্যকে জানানোরও প্রয়োজন মনে করেন না।