সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আশা করা হয়েছিল, কিছু না কিছু প্রতিকার তিনি করবেন। বাংলা ক্রিকেট, সিএবির (CAB) লোকজন আশা করেছিল যে, ক্রিকেট জীবনের মতোই ময়দানে ক্রিকেট-কলঙ্ক রোধে চারিত্রিক বলিষ্ঠতা তিনি দেখাবেন। কে জানত, সিএবি প্রেসিডেন্ট স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় তার আশপাশ দিয়ে যাবেন না! উল্টে বলে দেবেন, প্রিমিয়ার ডিভিশন লিগে মহামেডান-টাউন ম্যাচে গড়াপেটা যে হয়েছে, তার প্রমাণ কোথায়?
যা অত্যন্ত অবাক করা। টাউন বনাম মহামেডান ম্যাচে ‘দুর্নীতি’তে অভিযুক্ত সিএবি যুগ্ম সচিব দেবব্রত দাসের বিরুদ্ধে কোনও ‘ব্যবস্থা’ তো নিলই না সিএবি, বরং তাঁর প্রতি ‘সহমর্মিতা’-র হাত বাড়িয়ে দিল! সিএবি প্রেসিডেন্ট স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় (Snehasish Ganguly) বলে গেলেন, ‘‘ওই ভিডিও দেখে কীভাবে প্রমাণ করা যাবে যে এটা গড়াপেটা? আমরা একটা বৈঠক ডেকেছি। যে সব টিম অবৈধ ক্রিকেটার খেলানো নিয়ে প্রতিবাদ জমা দিয়েছে, সেটা নিয়ে আলোচনা হবে। আর টাউনও তো মহামেডানের অবৈধ ক্রিকেটার খেলানো নিয়ে অভিযোগ জমা দিয়েছে।’’
[আরও পড়ুন: ভোটের মুখে ফের বাড়ল বাণিজ্যিক গ্যাসের দাম, ধাক্কা আমজনতার]
যার পর স্থানীয় ক্রিকেটমহলে কয়েকটা পরপর প্রশ্ন উঠছে। বলা হচ্ছে, ধরে নেওয়া গেল তদন্ত না করে সিএবি প্রেসিডেন্ট নিজের পদে বসে বলতে পারেন না যে, গড়াপেটা হয়েছে। কিন্তু স্নেহাশিস নিজে ক্রিকেটার ছিলেন। বাংলার হয়ে খেলেছেন। ভাঙা পা নিয়ে বাংলাকে ম্যাচ জিতিয়েছেন। তা, তাঁর ক্রিকেটীয় অভিধানে কি সেই সমস্ত ‘ন্যক্কারজনক’ শট আছে যা কি না টাউন বনাম মহামেডান ম্যাচের ভিডিও ফুটেজে দেখা গিয়েছে? গোটা দুনিয়া সেই ভিডিও দেখে দুর্নীতির কটূ গন্ধ পাচ্ছে, চারদিকে ছি-ছিক্কার চলছে, কেউ বলছে ‘গড়াপেটা’, কেউ বলছে ‘ব্ল্যাকমেল’–আর তিনি, স্নেহাশিস নিজে ক্রিকেটার হয়ে ‘সন্দেহজনক’ কিছু দেখতে পাচ্ছেন না?
রাতের দিকে স্থানীয় ক্রিকেটমহলের কেউ কেউ দুঃখ করে বলছিলেন, সিএবি পারত অনেক কিছু করতে। সিএবি বলতে পারত, একটা তদন্ত কমিটি গড়া হবে। বলতে পারত, পুরো ঘটনা তদন্ত করে দেখা হবে। সিএবি পারত, অভিযুক্ত কর্তা দেবব্রতকে সাময়িক ভাবে পদ থেকে সরিয়ে দিতে। তাঁর ডানা ছেঁটে দিয়ে বলতে পারত, তদন্তে আপনি নিষ্কলঙ্ক প্রমাণিত হলে আবার চেয়ারে বসবেন। কিন্তু সিএবি কিছুই করল না। অনেকেই বলছিলেন যে, দেবব্রতকে নাকি সরানো সম্ভব নয় মেয়াদের আগে। তাই? তা হলে, ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মহাবিপর্যয়ের পর চেয়ারম্যান-সহ ভারতের নির্বাচকমণ্ডলীকে কী করে বরখাস্ত করে দিয়েছিল ভারতীয় বোর্ড? মেয়াদ তো তাঁদেরও ছিল। কিন্তু মেয়াদ আছে বলে তো রেয়াত করা হয়নি। আসলে ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়। ইচ্ছে থাকলে অনেক কিছু করাও যায়। শুধু সবার আগে ইচ্ছেটা থাকতে হয়!