স্টাফ রিপোর্টার : কলকাতা ফুটবলে সবচেয়ে কঠিন কাজ ডার্বি জয়। আর তারচেয়েও কঠিন ডার্বি জয়ের ঠিক পরের ম্যাচে ফোকাস ধরে রাখা।
কলকাতায় দীর্ঘদিন কাটানোর ফলে ময়দানের এই প্রাচীন প্রবাদ অজানা নয় ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) রিজার্ভ দলের কোচ বিনো জর্জের। গত শনিবার বিকালে কলকাতা লিগে তাঁর ছাত্ররা বেশ অনায়াসেই হারিয়েছে মোহনবাগানকে। লিগ (Calcutta Football League) ডার্বির শতবর্ষের সূচনায় বড় ম্যাচের রং হয়েছে লাল-হলুদ। কিন্তু মঙ্গলবার নৈহাটি স্টেডিয়ামে কাস্টমসের বিরুদ্ধে সেই পারফরম্যান্স ধরে রাখাটাই যথেষ্ট হবে না বলেও মনে করছেন বিনো। “ডার্বি অতীত। কাস্টমসের বিরুদ্ধে আমাদের আরও ভালো খেলতে হবে। আমি মোহনবাগানকে অসম্মান করতে চাই না। ওরা বেশ ভালো দল। এখনও দলটা জমাট বাঁধেনি বলে সেভাবে পারফর্ম করতে পারছে না। তবে কাস্টমসের বিরুদ্ধে একই পারফরম্যান্স ধরে রাখলে চলবে না,” অনুশীলন শেষে মাঠ ছাড়ার আগে বলছিলেন বিনো।
[আরও পড়ুন: ‘ক্ষমতা এবং খ্যাতি ওকে বদলে দিয়েছে’, কোহলিকে নিয়ে বিরাট বিস্ফোরণ প্রাক্তন সতীর্থের]
কেন এমন ভাবনা? কেন ডার্বির থেকেও লেসলি ক্লডিয়াস সরণীর পড়শি ক্লাবকে এতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন বিনো? লাল-হলুদ কোচের জবাব, “কলকাতা লিগের অধিকাংশ দলই মুখিয়ে থাকে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ভালো খেলার জন্য। কারণ সবাই জানে, এই ক্লাবগুলির উপর সবার নজর থাকে। এদের বিরুদ্ধে ভালো খেলে প্রচারের আলোয় আসতে চায় অন্যরা। তাই সবাই বাড়তি উদ্যমী হয়ে ঝাঁপায়। আমাদের সেটা বুঝেই পদক্ষেপ করতে হবে।” অবশ্য শুধু মুখে বলাই নয়, কাস্টমসের বাধা টপকাতে ছাত্রদের পুরোপুরি তৈরি রাখছেন তিনি। তাই এদিন অনুশীলনে একটু বেশি সময়ই সিচ্যুয়েশন প্র্যাকটিসের জন্য বরাদ্দ করেছিলেন বিনো। এরপর সেট-পিস অনুশীলনে বৈচিত্র আনার উপর বিশেষ নজর ছিল তাঁর।
লিগে প্রতি ম্যাচে প্রথম একাদশে বদল করেও জয়ের হ্যাটট্রিক করেছে ইস্টবেঙ্গল। কাস্টমসের বিরুদ্ধেও পরিবর্তন ছাড়া উপায় নেই। সিনিয়র দল থেকে আসা দেবজিৎ মজুমদার ও সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় ফিরে গিয়েছেন। লাল কার্ড দেখে জোসেফ জাস্টিন ও চোটের জন্য মহম্মদ রোশাল নেই। এই অবস্থায় গোলে ফিরছেন আদিত্য পাত্র। রাইটব্যাক সঞ্জীব ঘোষ। আমন সিকে রাইট উইংয়ে ফিরছেন। তাঁর ছেড়ে আসা বাঁ-দিকে খেলবেন বিজয় মুর্মু। একমাত্র ফরোয়ার্ড জেসিন টিকে। বাকি দল অপরিবর্তিত। শনিবাসরীয় ডার্বিতে সেরা হওয়া পিভি বিষ্ণু এদিন অবশ্য অনুশীলন করলেন পুরোদমে।
[আরও পড়ুন: প্যারিস অলিম্পিকসে সোনার স্বপ্ন, অ্যাথলিটদের জন্য বিশেষ বার্তা বিরাটের]
অন্যদিকে এবারের লিগে যথেষ্ট ধারাবাহিকতা দেখাচ্ছে ভবানীপুর ক্লাব (Bhawanipore Club)। মঙ্গলবার তাদের সামনে রেনবো এফসি। চার ম্যাচ খেলে তিনটে জয় ও মোহনবাগানের সঙ্গে ড্র করে গ্রুপ শীর্ষে রয়েছে ভবানীপুর। রেনবোর বিরুদ্ধেও সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে মরিয়া সৈয়দ রমনের ছেলেরা।
রেনবো এই মুহূর্তে লিগ তালিকায় সপ্তম স্থানে রয়েছে। চারটে ম্যাচে একটা জয় ডুটো ড্র ও একটা হারের সৌজন্যে তাদের সংগ্রহ পাঁচ পয়েন্ট। ভবানীপুরের মতো তারাও ড্র করেছে মোহনবাগানের সঙ্গে। মঙ্গলবার ভবানীপুরের বিরুদ্ধে ভালো ফল করে লিগ টেবিলের উপরে উঠে আসা লক্ষ্য রেনবোর। দলে কিংশুক দেবনাথ, শিল্টন পাল, সাবিথের মতো বড় দল খেলা ফুটবলার রয়েছে রেনবোর। অন্যদিকে ভবানীপুরও দুরন্ত ছন্দে রয়েছে। বিশেষ করে তাদের অধিনায়ক জিতেন মুর্মু। ইতিমধ্যেই এই মরশুমে চারটে গোল করে ফেলেছেন ভবানীপুর অধিনায়ক। গোল রয়েছে মোহনবাগানের মতো বড় দলের বিরুদ্ধেও। দলের কোচ সৈয়দ রমন বলছেন, আগের ম্যাচের ফল গুরুত্ব না দিয়ে আগামী ম্যাচগুলোতে যতটা সম্ভব বেশি পয়েন্ট সংগ্রহ করে পরবর্তী পর্যায়ে যেতে চান। দলে আপাতত চোট আঘাতের খবর নেই। তবে দু একটা পরিবর্তন হতে পারে।