গোবিন্দ রায়: রাজ্যের সাম্প্রতিক হিংসায় কড়া কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)। হনুমান জয়ন্তীর শোভাযাত্রা সামলাতে কেন্দ্রে কাছে আধা সামরিক বাহিনীর সাহায্য চাইবে রাজ্য। কেন্দ্রকেও অবিলম্বে সাহায্য় করতে হবে। নির্দেশ কলকাতা হাই কোর্টের। আদালতের পর্যবেক্ষণ, “যে ধরনের সমস্যার কথা বলা হচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে যে রাজ্য পুলিশ একহাতে এই সমস্যার সমাধান করতে পারবে না।” তাই পাশের রাজ্য থেকে আধা সামরিক বাহিনী চাইতে পারে বাংলার প্রশাসন। একইসঙ্গে রাজ্যের গোয়েন্দা বিভাগকে ব্যর্থ বলে ভর্ৎসনা করে আদালত।
বৃহস্পতিবার হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষে রাজ্যজুড়ে মিছিলের ২ হাজার আবেদন জমা পড়েছে নবান্নে। এ প্রসঙ্গে হাই কোর্ট সাফ জানিয়েছে, যে সমস্ত এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে সেখানে হনুমান জয়ন্তী মিছিল করা যাবে না। এই শোভাযাত্রা নিয়ে কোনও রাজনৈতিক নেতা কোথাও কোনও বক্তব্য পেশ করবেন না। এই নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: নগ্ন ছবি পর্নসাইটে ছড়ানোর হুমকি! ‘শিবপুর’ সিনেমার প্রযোজকের মেল প্রকাশ করলেন স্বস্তিকা]
এদিন আদালতে রাজ্যের তরফে জানানো হয়, রামনবমী এবং হনুমান জয়ন্তী রাজ্যে পালিত হওয়া সাধারণ উৎসবের মধ্যে পরে না। শেষ ৫ বছর ধরে এটা শুরু হয়েছে। একাধিক অপরিচিত সংগঠন অনুমতি চাইছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাজ্য আদালতে একাধিক প্রস্তাব দেয়। জানানো হয়, মিছিল বা শোভাযাত্রা যদি প্রশাসনের কোন শর্ত উলঙ্ঘন করে তাহলে তার দায় সেই প্রতিষ্ঠান এবং তার আধিকারিকদের উপর বর্তাবে। কতজন শোভাযাত্রায় থাকবেন তা আগে থেকে পুলিশকে জানাতে হবে। শোভাযাত্রা শুরু এবং শেষ নির্দিষ্ট সময়ে করতে হবে। শোভাযাত্রার রুট ব্যারিকেড করার পরামর্শ দিয়েছিল ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। সেই পরামর্শ মানা সম্ভব নয় বলে আদালতে জানিয়েছে রাজ্য। তবে স্পর্শকাতর এলাকায় ব্যারিকেড করা হবে বলে জানিয়েছিল রাজ্য। স্পর্শকাতর এলাকায় সিসিটিভি বসানো হবে। মিছিলের শুরু এবং শেষপ্রান্তে পুলিশ থাকবে। তারা আরও জানায়, হনুমান জয়ন্তী করার হলে পরের বছর থেকে ১৫ দিন আগে অনুমতি চাইতে হবে। শেষ ৫ বছর ধরে যারা এই শোভাযাত্রা করছেন শুরু তাঁরাই অনুমতি পাবেন।
রাজ্যের বক্তব্য শোনার পর আদালত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের পরামর্শ দেয়। একইসঙ্গে বিচারপতির প্রশ্ন, “ছাদ থেকে পাথর ছোড়ার অভিযোগ উঠছে। রাজ্যের গোয়েন্দা বিভাগ কি করছিল? এটা তাদের ব্যর্থতা।”
বাঁশদ্রোণীতে হনুমান পুজো করতে চেয়ে অনুমতি চেয়ে বিচারপতি রাজশেখর মান্থার এজলাসে আবেদন করা হয়েছিল। সেই অনুমতি মিলেছে। তবে বিচারপতির মন্তব্য়, “রাস্তা বন্ধ করে পুজো আমি ব্যক্তিগত ভাবে সমর্থন করি না। তবে এখানে এই সংস্কৃতি বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে। পুজো, মেলা এবং উৎসবের জন্য রাজ্য কোন গাইডলাইন তৈরি করে শক্ত হাতে সেটা লাগু না করলে পুরনো ব্যবস্থাই চলবে।”