রাহুল রায়: পুরুলিয়ায় সূচ দিয়ে শিশুকন্যাকে হত্যামামলায় ফাঁসির সাজা রদ করে দিল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta HC)। দোষী দু’জনকে মৃত্যুদণ্ডের বদলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। কবে থেকে তা কার্যকর হবে, তা এখনও জানা যায়নি। এই ঘটনায় ২০২১ সালে দোষীদের মৃত্যুদণ্ডের সাজা শুনিয়েছিল পুরুলিয়ার (Purulia) আদালত। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয় সাজাপ্রাপ্ত মঙ্গলা গোস্বামী ও তার প্রেমিক সনাতন। তার ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার হাই কোর্ট ওই মৃত্যুদণ্ডের সাজা রদ করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের কথা জানায়।
প্রসঙ্গত এই মামলা দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছরের। ২০১৭ সালের জুলাই মাসের এই ঘটনায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছিল গোটা দেশে। সাড়ে তিন বছরের শিশুকন্যার শরীরে সূচ ফুটিয়ে খুন করার অভিযোগ ওঠে।মঙ্গলা গোস্বামী ও তার প্রেমিকের বিরুদ্ধে। প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়ায় সনাতনকে বিয়ে করেছিল মঙ্গলা। কিন্তু সংসারে ‘পথের কাঁটা’ হয়ে দাঁড়ায় ওই সাড়ে তিন বছরের শিশুকন্যা। তাই ষড়যন্ত্র করে ওই শিশু কন্যাকে ঠান্ডা মাথায় খুন (Chilad Murder)করতে শরীরে সাত-সাতটি সূচ ঢুকিয়ে দিয়েছিল তারা। পায়ুদ্বারে একটি ও পেটের দু’পাশে ছ’টি সূচ ঢুকিয়ে তারা ওই শিশুকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়।
[আরও পড়ুন: সৎ মায়ের বঞ্চনায় ঠাঁই হয়েছিল আস্তাকুঁড়ে, নতুন ঠিকানা দিয়ে মানবিক বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়]
১১ জুলাই পুরুলিয়ার দেবেন মাহাতো সদর হাসপাতালে ভরতি করা হয় জখম শিশুকে। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ওই শিশু কন্যার শরীর থেকে সাতটি সূচ বের করা হয়। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। ২২ জুলাই রাতে এসএসকেএমে তার মৃত্যু হয়। শিশুর মা মঙ্গলা গোস্বামী, প্রেমিক সনাতনের সঙ্গে ছক করে সন্তানকে খুন করার অভিযোগ ওঠে। গ্রেপ্তার করা হয় তাদের। পুরুলিয়া আদালতে মামলা শুরু হলে দু’জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে তাদের মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়।
[আরও পড়ুন: পার্সেলের ভিতর থেকে বিপ বিপ শব্দ, জিপিওতে টাইম বোমা আতঙ্ক]
পুরুলিয়া আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে দু’জন উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়। এদিন সেই মামলায় মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশকে রদ করে বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ মঙ্গলা গোস্বামী ও সনাতনকে যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা শোনায়।