শুভঙ্কর বসু: রাজ্য-রাজ্যপালের সংঘাতের আবহে আইনি ধাক্কা। বাংলার রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে (Jagdeep Dhankhar) অপসারণের দাবিতে আইনজীবীর দায়ের করা মামলা খারিজ করে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। শুক্রবার এই মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ সাফ জানিয়ে দেয়, মামলাটি ভিত্তিহীন। তাই তা খারিজ করা হল। পাশাপাশি, রাজ্যপালের তরফে সওয়াল করতে গিয়ে সলিসিটর জেনারেল যে দাবি তুলেছিলেন, তাও একইসঙ্গে খারিজ হয়ে গিয়েছে। প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহেই কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta HC) রাজ্যপালকে অপসারণের দাবিতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকার। তার পরিপ্রেক্ষিতে এই নির্দেশ দিল হাই কোর্ট।
সাম্প্রতিক অতীতে একাধিক ইস্যুতে নবান্নের সঙ্গে রাজভবনের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। রাজ্যেকে ক্রমাগত আক্রমণ শানিয়েছেন রাজ্যপাল। বিভিন্ন ইস্যুতে রাজ্য সরকারের কাছে জবাব তলব করেছেন তিনি। অভিযোগ, রাজ্য সরকারের কাজে দখলদারি করেছে রাজ্যপাল। দ্বন্দ্বের জল এতটাই গড়িয়েছে যে রাজ্যপালকে সরানোর দাবিতে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে চিঠি দিয়েছে রাজ্য সরকার। সংসদের বাজেট অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর কাছে সরাসরি অভিযোগ জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদরা। রাজ্যসভায় প্রস্তাবও পেশ হয়েছে। আর তারপর উচ্চ আদালতে গড়াল বিষয়টি।
[আরও পডুন: দেশের কোভিড গ্রাফে ফের উন্নতি, অনেকটা কমল সংক্রমণ, মৃত পাঁচশোরও কম]
জনস্বার্থ মামলাকারী (PIL)আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকারের দাবি, সংবিধান বহির্ভূত, সংবিধান বিরোধী কাজ করছেন রাজ্যপাল। রাজনৈতিক দলের মুখপাত্রের মতো আচরণ করছেন তিনি। এমনকী, একের পর অসাংবিধানিক মন্তব্য করছেন রাজ্যপাল, দাবি মামলাকারী। তাঁর কথায়, রাজ্যপাল নিরপেক্ষ পদ হয়েও এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে রাজ্যের কাজে বাধা দিচ্ছেন। তাই ধনকড়কে অবিলম্বে সরানোর দাবি জানিয়েছেন আইনজীবী। তবে রাজ্যপালকে সরাসরি কোনও মামলার পক্ষ করা যায় না। তাই পরোক্ষভাবে তাঁকে মামলার পক্ষ করা হয়েছিল।
[আরও পডুন: করোনা আবহে ফের দর্শনার্থীদের জন্য খুলছে বেলুড় মঠ, জেনে নিন দিনক্ষণ]
এর আগে শুনানিতে রাজ্যপালের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন সলিসিটির জেনারেল (SG) তুষার মেহতা। তাঁর মত ছিল, এভাবে একজন সাংবিধানিক প্রধানের বিরুদ্ধে মামলা করা যায় না। যে বা যাঁরা মামলা করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আদালতের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শুনেই প্রধান বিচারপতি মামলাটির ভিত্তি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন। আর শুক্রবার প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব মামলাটি ভিত্তিহীন বলে খারিজ করে দেন।