গোবিন্দ রায়: কলকাতা হাই কোর্টে নজিরবিহীন সংঘাত। বিচারপতি বনাম বিচারপতি। মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি মামলায় ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশকে অবৈধ বলে দেগে দিল সিঙ্গল বেঞ্চ। এমনকী এজলাসে বসে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের অভিযোগ, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে চালিত হয়ে নির্দেশ দিচ্ছেন ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি সৌমেন সেন। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপও চাইলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সবমিলিয়ে বেনজির এক অধ্যায় তৈরি হয়েছে কলকাতা হাই কোর্টে।
মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি মামলায় সিবিআইয়ের এফআইআর খারিজের নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি সৌমেন রায়ের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ। এ প্রসঙ্গে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, “FIR খারিজের যে নির্দেশ বিচারপতি সেন দিয়েছেন সেটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে দিয়েছেন, ফলে সেটা বৈধ নয়। CBI এর উচিত তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।” এই নির্দেশের কপি অবিলম্বে কলকাতা হাই কোর্ট এবং দেশের প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানো হবে, নির্দেশনামায় জানিয়েছেন বিচারপতি।
[আরও পড়ুন: দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন শ্রীলঙ্কার জলসম্পদ মন্ত্রী]
ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি সৌমেন সেনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, “বিচারপতির সৌমেন সেন স্পষ্টতই একটি রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করছেন। মামলায় রাজনৈতিক স্বার্থ জড়িত থাকা ব্যক্তির মত আচরণ করছেন। তাই সুপ্রিম কোর্টের উচিত তাঁর সমস্ত নির্দেশ খারিজ করা। ” নির্দেশনামায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছেন, “নির্দেশনামা এবং আবেদনপত্রের কপি ছাড়াই সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ দিচ্ছেন বিচারপতি সেন। ভুল বার্তা পাঠাচ্ছেন।” একইসঙ্গে প্রশ্ন, “অন্য কেউ গেলে এটা করবেন তো?”
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের অভিযোগ,”কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন বিচারপতি সেন। কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন বিচারপতি সেন। – নির্দেশনামায় উল্লেখ বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলির। কেন তাঁর বিরুদ্ধে ইম্পিচমেন্ট -এর প্রক্রিয়া শুরু হবে না?” বিচারপতি সেনের বদলি নিয়েও তোপ দেগেছে সিঙ্গল বেঞ্চ। বিচারপতির কথায়, “কেন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও দুবছর ধরে তাঁর (সৌমেন সেন) বদলি হচ্ছে না? অন্য বিচারপতিদের তো হয়ে গিয়েছে। কে তাঁকে বাঁচাচ্ছে? আমি দেশের প্রধান বিচারপতিকে এটা দেখার জন্য অনুরোধ করব।”
বিচারপতির দাবি, “প্রথমে বিচারপতি সৌমেন বলেছিলেন, অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের একটা রাজনৈতিক ভবিষ্যত আছে, তাঁকে বিরক্ত করা যাবে না। দ্বিতীয়ত, বিচারপতির অমৃতা সিনহার এজলাসে শুনানির লাইভ স্ট্রিমিং বন্ধ করতে হবে। তৃতীয়ত, প্রাথমিকের দুটি মামলা খারিজ করতে হবে বিচারপতি সিনহাকে।” তিনি আরও দাবি করেছেন, “বিচারপতির অমৃতা সিনহা এটা নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে জানিয়েছেন। প্রধান বিচারপতি এটা সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে জানিয়েছে। আমি বিচারপতি সিনহার কাছ থেকে এটা জানতে পেরেছি।”