shono
Advertisement

উচ্চ প্রাথমিকে ১৩ হাজার শূন্যপদে কাটছে নিয়োগ জট? বড়সড় ইঙ্গিত হাই কোর্টের

'কিছু সংখ্যক মামলাকারীর জন্য প্রায় ১৩ হাজার শূন্যপদে নিয়োগ আটকে রাখা সম্ভব?', বিস্মিত হাই কোর্ট।
Posted: 10:32 AM Feb 17, 2024Updated: 02:06 PM Feb 17, 2024

গোবিন্দ রায়: হাই কোর্টের জারি করা স্থগিতাদেশে উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া থমকে রয়েছে দীর্ঘদিন। এবার আইনি জট কাটিয়ে সেই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে। শুক্রবার উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় তেমনই ইঙ্গিত দিল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘‘মামলাকারীদের জন্য সমসংখ্যক আসন ফাঁকা রেখে বাকি শূন্যপদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা যেতে পারে।’’ প্রয়োজনে সুপারিশপত্র দেওয়ার কাজও শুরু করা যেতে পারে বলে এদিন জানিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ।

Advertisement

মামলার শুনানি চলাকালীন এত বছর ধরে ওই নিয়োগ আটকে থাকা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কিছু সংখ্যক মামলাকারীর জন্য প্রায় ১৩ হাজার শূন্যপদে নিয়োগ আটকে রাখা সম্ভব?’’ আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে আদালত। আদালতের নির্দেশ, সেদিন এসএসসিকে এই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য দিতে হবে। শূন্যপদ থেকে শুরু করে সংরক্ষিত আসনের সংখ্যা এবং প্যানেলে থাকা প্রার্থীর সংখ্যাও স্পষ্ট করে জানাতে হবে আদালতে। নিয়োগ প্রক্রিয়া ঠিক কোথায় আটকে রয়েছে তাও জানাতে হবে আদালতে।

আদালতের ইঙ্গিতপূর্ণ এই মনোভাবে উচ্চ প্রাথমিকের জট খুলবে বলে আশাবাদী স্কুল সার্ভিস কমিশন। এসএসসির চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার জানান, ‘‘এবার ইতিবাচক কিছু হবে বলে আমরা আশাবাদী। আমরা আশাবাদী, পরবর্তী ধাপে এই মামলায় ইতিবাচক রায় পাব। মহামান্য আদালতের যে নির্দেশ আইনজীবীর মাধ্যমে শুনেছি, কত মামলা আছে এবং কতজন মামলাকারী আছেন, সেই তথ্য দিতে হবে। আমরা কাজ শুরু করেছি। আগামী সপ্তাহেই আমাদের আইনজীবীকে জানিয়ে দেব। যাতে তাঁরা তা হলফনামা আকারে মহামান্য আদালতের কাছে পেশ করতে পারেন।” একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা নিয়েও আদালতের ইতিবাচক পর্যবেক্ষণ রয়েছে। আদালত নির্দেশ দিলে এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার কাজ শুরু করতে আমরা প্রস্তুত।’’

[আরও পড়ুন: বাড়িতে ঢুকে চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়াকে কুপিয়ে খুন? হুগলিতে ব্যাপক চাঞ্চল্য]

প্রসঙ্গত, উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগের জন্য ২০১৪ সালে পরীক্ষা হয়। তার ভিত্তিতে ২০১৬ সালে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়। স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রকাশিত চূড়ান্ত মেধাতালিকায় ১৪ হাজার ৩৩৯ শূন্যপদের জন্য ১৩ হাজার ৩৩৮ জনের নাম প্রকাশ করা হয়। ১১টির বেশি বিষয়ের জন্য আলাদা আলাদা মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়। এর পরই এই নিয়োগ প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা দায়ের হয় হাই কোর্টে। ২০১৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৯ বছর বন্ধ রয়েছে উচ্চ-প্রাথমিকের এই নিয়োগ প্রক্রিয়া। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে কাউন্সেলিং সম্পন্ন হলেও সুপারিশপত্র দেওয়ার উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ বহাল রয়েছে। আদালত নির্দেশ দিলে কমিশন এবার শর্তসাপেক্ষে নিয়োগ করতে চায়। এদিনের শুনানিতে বিচারপতি জানতে চান, “এই মামলায় মামলাকারীর সংখ্যা কত?” কিন্তু এসএসসির আইনজীবী সুতনু পাত্র সুস্পষ্টভাবে আদালতকে সংখ্যা জানতে পারেননি। তার প্রেক্ষিতেই তথ্য দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

এদিন মামলার শুনানিতে এই মামলার মূল মামলাকারীদের তরফে আইনজীবী সুবীর স্যান্যাল বলেন, “অসাংবিধানিকভাবে কেউ চাকরি পেতে পারে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাই হয়েছে।’’ একই সঙ্গে, চূড়ান্ত মেধাতালিকার ভিত্তিতে সংরক্ষিত আসনে নিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন আইনজীবী। তখন বিচারপতি বলেন, “আপনার মূল লক্ষ্য চাকরি পাওয়া। আমরা এখনই কিছু সিদ্ধান্ত নিচ্ছি না। প্রয়োজনে তাদের বিষয়টি আলাদা করে শোনা হবে।” এদিকে, মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আইনি জটে চাকরি আটকে থাকা প্রার্থীদের তরফে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এটা কি জনস্বার্থ মামলা না ব্যক্তিগত? কারণ, অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে ৯৯ শতাংশ প্রার্থী পাস করেননি, তাও মামলা করেছেন।”

তার প্রেক্ষিতে কতজন মামলাকারী রয়েছেন, তা জানতে চেয়েছে আদালত। সম্প্রতি শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলাগুলির শুনানির বিচার্য বিষয় বদল হয়েছে। এতদিন এই মামলাগুলি শুনছিল বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ। বেঞ্চ বদল হওয়ায় বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ডিভিশন বেঞ্চে এখন এই মামলাগুলি চলছে। তাই এবার থেকে রোজ শুনানি করে এই মামলার নিষ্পত্তি করা হবে বলে জানিয়েছে আদালত।

[আরও পড়ুন: ফের রাজ্যে ফিরল শীত, আগামী ২ দিন কেমন থাকবে তাপমাত্রা?]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement