গোবিন্দ রায় এবং নন্দন দত্ত: উপপ্রধান খুন এবং একের পর এক বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডে প্রাণহানির ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণ কলকাতা হাই কোর্টের। প্রধান বিচারপতি এই ঘটনাকে ‘জঘন্য অপরাধ’ বলে ব্যাখ্যা করেন। বুধবার দুপুর দু’টোয় মামলার শুনানি। এদিকে, এদিন ওই গ্রামে যান সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, বিমান বসু ও রামচন্দ্র ডোম। নমুনা সংগ্রহ করেন ফরেনসিক আধিকারিকরাও।
বুধবার হাই কোর্টে কাজ শুরুর পরই রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় এবং সরকারি কৌঁসুলিকে এজলাসে ডাকেন প্রধান বিচারপতি। রামপুরহাট কাণ্ডে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণের কথা জানিয়ে দেন তিনি। বুধবার দুপুর ২টোয় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে মামলার শুনানি। প্রধান বিচারপতি বলেন, “এই ধরনের ঘটনা জঘন্য অপরাধ। অবিলম্বে তদন্ত করা উচিত। ১০টি বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হল। ঘরবন্দি করে মানুষকে পুড়িয়ে মারা হল। এই ধরনের ঘটনার পিছনে যারা আছে তাদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া দরকার।”
[আরও পড়ুন: ‘নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি, ভয়ে ভয়ে থাকতে চাই না’, গ্রাম ছাড়ল ভাদু শেখের পরিবার]
এদিকে, এই ঘটনার জেরে এখনও থমথমে গোটা বগটুই গ্রাম। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন প্রায় সকলেই। আতঙ্কে এলাকা ছাড়ছেন গ্রামবাসীরা। তাই প্রায় প্রত্যেকটি বাড়িই তালাবন্ধ। এদিন সকালে গ্রামে যান সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তাঁর দাবি, অগ্নিকাণ্ডে সদ্য বিবাহিত এক যুবক কোথায় মারা গিয়েছেন, তা দেখতে এসেছেন। যদিও তাঁকে গ্রামে ঢুকতে বাধা দেয় পুলিশ। তার ফলে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। এরপরই ঊর্দিধারীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। ‘অপদার্থ’ বলেও কটাক্ষ করেন। প্রমাণ লোপাটের আশঙ্কায় সিপিএম নেতা।
এরপর বিমান বসু এবং রামচন্দ্র ডোমও ঘটনাস্থলে যান। পুলিশ গ্রামে ঢুকতে বাধা দেয় তাঁদেরও। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন বিমান বসু। অগ্নিকাণ্ডের নেপথ্যে অনুব্রত মণ্ডলের শর্ট সার্কিটের তত্ত্বকে কার্যত খারিজ করে দেন বাম নেতা। বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের মস্তিষ্কে অক্সিজেন পৌঁছয় না বলে এই তত্ত্ব খাড়া করেছেন বলেই দাবি বিমান বসুর।
ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন ফরেনসিক আধিকারিকরা। ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন তাঁরা। কীভাবে অগ্নিকাণ্ড ঘটল, সে তথ্য খতিয়ে দেখার কথা আধিকারিকদের। ফরেনসিক আধিকারিকদের সঙ্গে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গঠিত সিটও। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত গ্রেপ্তার ২২ জন। ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৭, ১৪৮, ১৪৯, ৩০২, ৩০৭, ৩২৫, ৩২৬, ৪২৭, ৪৩৫ এবং ৪৩৬ ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।