শুভঙ্কর বসু: রাজ্যে ক্রমশ বাড়ছে করোনা (Coronavirus) সংক্রমণ। এই পরিস্থিতিতে পুরভোট পিছনোর দাবিতে সরব সকলে। ইতিমধ্যে কলকাতা হাই কোর্টে মামলাও দায়ের হয়েছে। পুরভোট মামলার শুনানিতে বৃহস্পতিবার হাই কোর্টে রাজ্য এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনের মধ্যে চলল টানাপোড়েন। রাজ্য সরকার নাকি রাজ্য নির্বাচন কমিশন, কার সিদ্ধান্তে বিজ্ঞপ্তি জারির পরে ভোট পিছনো সম্ভব, হাই কোর্টের তরফে দু’পক্ষকে সেই প্রশ্ন করা হয়। জবাবে রাজ্য এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশন একে অপরের কোর্টে বল ঠেলাঠেলিতে ব্যস্ত। তাই এখনও ঝুলেই রইল আগামী ২২ জানুয়ারির চার পুরনিগমের ভোটের ভাগ্য। মামলার শুনানি আপাতত শেষ। রায়দান স্থগিত রেখেছেন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব।
এদিন মামলাকারীর আইনজীবীর তরফে দাবি করা হয়, রাজ্য নির্বাচন কমিশন (West Bengal State Election Commission) নানা বিধিনিষেধ আরোপ করলেও প্রচারের ক্ষেত্রে তা মানা হচ্ছে না। একসঙ্গে অনেক লোকই জড়ো হচ্ছে। তার ফলে সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে। তাই বর্তমান কোভিড গ্রাফের কথা মাথায় রেখে ভোট পিছিয়ে দেওয়া প্রয়োজন। এরপর কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি রাজ্য এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন। তিনি জিজ্ঞাসা করেন, এই মর্মে কী ভাবনা দু’পক্ষের?
[আরও পড়ুন: WB Civic Polls: কনটেনমেন্ট জোনের ভোটারদের জন্য সময় বেঁধে দিল নির্বাচন কমিশন, কখন দেওয়া যাবে ভোট?]
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়, একবার বিজ্ঞপ্তি জারি হয়ে গেলে আর তা পিছনোর কোনও এক্তিয়ার তাদের নেই। একমাত্র রাজ্য সরকার যদি অতিমারি আইন অনুযায়ী বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানায় এখন ভোট করা সম্ভব নয়, তবে তা পিছনো সম্ভব। তবে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সহমত নয় রাজ্য সরকার। তাদের দাবি, একবার ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়ে গেলে আর রাজ্যের কোনও দায়িত্বই থাকে না। সেক্ষেত্রে সমস্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার শুধুমাত্র রাজ্য নির্বাচন কমিশনেরই রয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাজ্যের তরফে হাই কোর্টে (Calcutta High Court) বিধাননগর, চন্দননগর, আসানসোল ও শিলিগুড়িতে সংক্রমণ এবং ভ্যাকসিনেশনের খতিয়ান হলফনামা আকারে জমা দেওয়া হয়। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে আসানসোলে ১৬.০৪ শতাংশ সংক্রমণ ও ৯৮ শতাংশ টিকাকরণ হয়ে গিয়েছে। বিধাননগরে ১০০ শতাংশ টিকাকরণ সম্পূর্ণ। চন্দননগরে সংক্রমণ ৯ শতাংশ। শিলিগুড়িতে সংক্রমিত ১৯.০৫ শতাংশ। সেখানে টিকার দু’টি ডোজ নিয়েছেন ৯২ শতাংশ মানুষ। দু’পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর আপাতত পুরভোট মামলার রায়দান স্থগিত রেখেছে কলকাতা হাই কোর্ট।