সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নিজ্জর খুন, খলিস্তানিদের তাণ্ডব - এসব নিয়ে গত বছর থেকেই কানাডার সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে যথেষ্ট চাপানউতোর হয়েছে। সেই আবহেই ইটালিতে সদ্যসমাপ্ত G7 সম্মেলনের ফাঁকে একান্তে বৈঠক সারলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। সেই বৈঠক বেশ সদর্থক হয়েছে বলে জানিয়েছেন ট্রুডো নিজেই। শুক্রবার বৈঠক হওয়ার একদিন পর সংবাদমাধ্যমে ট্রুডোর মন্তব্য, ''কিছু গুরুত্বপূর্ণ, সংবেদনশীল বিষয় আছে। তা নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে চাই না। কিন্তু আমরা একে অপরের হাতে হাত রেখে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আগামী দিনেও তা করব। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি নিয়ে একসঙ্গে কাজ করব।'' ওয়াকিবহাল মহলের মত, ট্রুডোর এসব মন্তব্যে স্পষ্ট, নিজ্জর খুনের পর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে যে অবনতি হয়েছিল, তা স্বাভাবিক করতে উদ্যোগী কানাডা।
সমস্যার সূত্রপাত ২০২৩ সালের জুনে। কানাডার (Canada) সারে শহরে গুরুদ্বারের কাছে খুন হয় খলিস্তানপন্থী (Khalistan) সংগঠনের নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর। আচমকা নিজের ‘হোম গ্রাউন্ডে’ নিজ্জর খুনে শোরগোল পড়ে যায়। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো (Justin Trudeau) অভিযোগ করেন, ভারতের অঙ্গুলিহেলনেই কানাডার মাটিতে নিজ্জরকে নিকেশ করা হয়েছে। কানাডার গোয়েন্দা এজেন্সিগুলোর দাবি, এই অপারেশনের নীল নকশা তৈরি হয় ভারতের গুপ্তচর সংস্থা RAW-র সদর দপ্তরে। যদিও এসব অভিযোগের সপক্ষে কোনও প্রমাণ দেখাতে পারেনি কানাডা। তবে ওই ঘটনায় অভিযুক্ত সন্দেহে চার ভারতীয়কে গ্রেপ্তার করে কানাডা পুলিশ।
[আরও পড়ুন: ডিভোর্স দেওয়া স্ত্রীকে হোটেলে ডেকে বিপাকে যুবক, কাটা গেল যৌনাঙ্গ!]
এনিয়ে তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী জয়শংকরের মন্তব্য ছিল, এমন গুরুতর বিষয় নিয়ে কানাডা প্রশাসন নয়াদিল্লিকে (New Delhi) এমন কিছু তথ্য দেয়নি, যার ভিত্তিতে তদন্ত করাতে হবে। উলটোদিকে, কানাডা নিজের মাটিকে খলিস্তানি সন্ত্রাসবাদীদের মুক্ত বিচরণক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করতে দিচ্ছে বলে ভারতও পালটা তোপ দাগে। এমনকী কানাডার ভিসা নীতির সমালোচনা করে নয়াদিল্লি।
[আরও পড়ুন: গার্ডেনরিচ কাণ্ডে ৮৮ দিনের মাথায় চার্জশিট পেশ, অভিযুক্ত প্রোমোটার-সহ ৬ জন]
এমনই আবহে তৃতীয়বার দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েই ইটালিতে জি-৭ সম্মেলনে (G-7) যোগ দিতে গিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। তার ফাঁকেই কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেন। বেশ কিছুক্ষণ উভয়ের মধ্যে কথাবার্তা হয়। সম্ভবত নিজ্জর খুন ইস্যু উঠেছে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে। আর তার পরই দিল্লির সঙ্গে 'গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল' বিষয়ে একযোগে কাজ করার কথা বলেছেন ট্রুডো। ভারত-কানাডার সাম্প্রতিক সম্পর্কের মাঝে তাঁর এই মন্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।