সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইউক্রেনের সঙ্গে তুমুল যুদ্ধ চলছে রাশিয়ার। বিশ্বজুড়ে সংবাদমাধ্যমগুলির নজর রয়েছে ঘটনবলির উপর। এহেন পরিস্থিতিতে এবার রাশিয়ার সংবাদমাধ্যমের উপর রাশ টানলেন সেদেশের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
জানা গিয়েছে, সম্প্রতি রুশ সরকারি সংস্থা ‘রোসকোমনাজর’ একটি নয়া নির্দেশিকা জারি করেছে। সেই নির্দেশিকায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার সেনা অভিযানকে ‘আগ্রাসন, হামলা বা যুদ্ধঘোষণা’ বলে অভিহিত করা যাবে না।’ অর্থাৎ, যুদ্ধের খবর পরিবেশন করলেও প্রতিবেদনে যেন কোনওভাবেই রাশিয়াকে হানাদার বলে প্রতিপন্ন করা না হয়।শনিবার ‘রোসকোমনাজর’ তরফে টুইট করে জানানো হয়,’সংবাদমাধ্যম মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করছে।’
[আরও পড়ুন: শেয়ার আনার আগে চমক! LIC-তে ২০ শতাংশ প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগে ছাড়পত্র মন্ত্রিসভার ]
বলে রাখা ভাল, রোসকোমনাজর রাশিয়ার জাতীয় সংস্থা। এই সংস্থার কাজ দেশের সংবাদমাধ্যম, তথ্যপ্রযুক্তির উপর নজর রাখা। বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে তারা। এই জাতীয় সংস্থার বক্তব্য, ‘বেশ কয়েকটি স্বাধীন সংবাদমাধ্যম এমন তথ্য প্রচার করছে যা সমাজে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। সেই সঙ্গে তথ্যগুলি অসত্যও বটে।’ অভিযোগের তির ‘ডোজধ’ এবং ‘ইকো অফ মস্কো’ নামক দু’টি বেসরকারি সংবাদমাধ্যমের দিকে। আরও বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমও রাশিয়ার রোষের মুখে পড়েছে। ডোজধ রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণমুক্ত টেলিভিশন চ্যানেল। নিরপেক্ষ সংবাদমাধ্যম হিসাবে রাশিয়ায় যথেষ্ট জনপ্রিয় এই টিভি চ্যানেল। ইকো অফ মস্কো চ্যানেলটিও নিরপেক্ষতার নিদর্শন রেখেছে। এদিনই ইকো অফ মস্কোর তরফে টুইট করে জানান হয় ‘যুদ্ধরত দেশগুলি যা তথ্য দিচ্ছে তা সংশয়ের উর্দ্ধে নয়।’
উল্লেখ্য, শুক্রবার রাষ্ট্রসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব পেশ করে আমেরিকা। যদিও রাশিয়া ভেটো দেওয়ার ফলে সেই প্রস্তাব পাশ হয়নি। ভোটপর্ব মিটে যাওয়ার পর রাষ্ট্রসংঘে বিতর্কসভা বসে। সেখানে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের ইউক্রেন আগ্রাসন নীতির তীব্র বিরোধিতা করা হয়। রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ না হলেও নিরাপত্তা পরিষদের ১১টি দেশ রাশিয়ার বিপক্ষে ভোট দেয়। ভোটদান থেকে বিরত থাকে ভারত, চিন ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহী। এদিকে, সরাসরি ইউক্রেনের মদতে সেনা না পাঠালেও কিয়েভের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছে আমেরিকা, ব্রিটেন, জার্মানি সহ ২৮টি দেশ।
এদিকে, রাশিয়ার হামলার মুখে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার মার্কিন প্রস্তাব খারিজ করেছেন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি। তাঁর এই সাহসিক পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক মহলে প্রশংসা কুড়িয়েছে। এখনও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ চলছে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে। রুশ সেনাবাহিনী এখনও রাজধানী কিয়েভ দখল করতে ব্যর্থ।