সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্বঘোষিত ধর্মগুরু কালীচরণ মহারাজের (Godman Kalicharan Maharaj) বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল মহাত্মা গান্ধীকে (Mahatma Gandhi) অপমান তথা অবমাননার। ছত্তিশগড়ের রায়পুরে ‘ধর্ম সংসদ’-এ গান্ধীর হত্যাকারী নাথুরাম গডসের (Nathuram Godse) প্রশংসা করেছিলেন তিনি। অবশেষে ওই ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হল। সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি ভঙ্গের অভিযোগে মামলা করা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এদিকে আজই হরিদ্বারের একটি ধর্মসভায় প্রকাশ্যে সংখ্যালঘুদের গণহত্যার বার্তা দেওয়া নিয়ে প্রধান বিচারপতি এনভি রামানাকে চিঠি লিখলেন দেশের ৭৬ জন আইনজীবী৷
গতকাল অভিযুক্ত ধর্মগুরুর বক্তব্যের জেরে ধর্ম সংসদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক মহান্ত রামসুন্দর দাসকে অনুষ্ঠান মঞ্চ ছেড়ে চলে যেতে দেখা যায়। ওই কালীচরণ মহারাজের বিরুদ্ধে এবার সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি ভঙ্গের অভিযোগ মামলা করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন রায়পুরের প্রাক্তন মেয়র প্রমোদ দুবে। এছাড়াও ওই ধর্মীয় গুরুর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের অভিযোগ আনার আবেদন জানিয়েছেন ছত্তিশগড়ের কংগ্রেস নেতা মোহন মারকাম।
[আরও পড়ুন: হরিদ্বারের ধর্মসভায় সংখ্যালঘুদের খুনের হুমকি! বক্তাদের শাস্তির দাবিতে কমিশনকে চিঠি তৃণমূলের]
রবিবার রায়পুরের রাবণভাটা মাঠে একটি ধর্ম সংসদ ছিল। সেখানেই গডম্যান বলেন, “মহাত্মা গান্ধীকে খুন করার জন্য আমি নাথুরাম গডসেকে কুর্ণিশ জানাই।” এই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। দু’দিন আগে খবরের শিরোনামে আসে হরিদ্বারের আরও একটি হিন্দুসভাও। যেখানে সংখ্যালঘু নিধনের বার্তা দেওয়া হয়েছিল। গোটা বিষয়ে উদ্বিগ্ন অনেকেই। এই অবস্থায় দেশের ৭৬ জন আইনজীবী প্রধান বিচারপতি এনভি রামানাকে চিঠি লিখলেন৷ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে শীর্ষ আদালতে স্বতঃপ্রণোদিত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা৷
প্রসঙ্গত, হরিদ্বারের বিতর্কিত ধর্মসভা নিয়ে আগেই সরব হয়েছে তৃণমূল (TMC)। এরাজ্যের শাসকদলের দাবি, ওই ধর্মসভা থেকে সংখ্যালঘুদের খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছে। বক্তাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। তৃণমূলের দাবি, এই ধর্মসভা থেকে উসকানিমূলক ভাষণ দেওয়াটা উত্তরাখণ্ডের নির্বাচনের আগে ধর্মীয় বিভাজন তৈরির চেষ্টা। এই মর্মে নির্বাচন কমিশনকেও চিঠি দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় মুখপাত্র সাকেত গোখলে (Saket Gokhle)।
[আরও পড়ুন: অস্তিত্বরক্ষায় হাতে অস্ত্র তুলে নিক হিন্দুরা, হরিদ্বারে ‘ধর্ম সংসদে’ গণহত্যার উসকানি!]
নির্বাচন কমিশনকে লেখা চিঠিতে সাকেতের বক্তব্য, “উত্তরাখণ্ডে সামনেই নির্বাচন। তার আগে বিজেপির সহায়তায় এই ধর্মীয় উসকানিমূলক সভার আয়োজন হয়েছে।” সাকেতের সাফ কথা, ”যদি ওই ঘৃণ্য ধর্মসভার আয়োজকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে হরিদ্বারের গাড়োয়াল রেঞ্জের আইজি থেকে শুরু করে ওসি সবাইকে ট্রান্সফার করে দেওয়া উচিত কমিশনের।” ওই ধর্মসভার আয়োজকরা যাতে আর উত্তরাখণ্ডে ঢুকতে না পারেন, সেটাও নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন তৃণমূল নেতা।