রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: এক মাসের জন্যে কাঁথির কাজু শিল্পে ধর্মঘটের ডাক দিল ব্যবসায়ীরা। অ্যাসোসিয়েশনের তরফ থেকে রীতিমতো নির্দেশিকা দিয়ে জানানো হয়েছে, এক মাস ধরে বন্ধ থাকবে কাজু প্রসেসিংর কাজ। হঠাৎ করে বাজারমূল্য কমে যাওয়ার ফলে ক্ষতির মুখে পড়ছেন কাজু ব্যবসায়ীরা। তাই আগামী ২৮ আগস্ট পর্যন্ত কাজু বয়েল, রোস্টিং, কাটিং সমস্ত কাজ বন্ধ থাকার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে বেঙ্গল কাজু অ্যাসোসিয়েশন। কর্মবিরতির ফলে কয়েক লক্ষ শ্রমিক ইতিমধ্যেই সংকটে পড়েছেন। কাঁথি কাজু শিল্প আবার কবে সচল হবে, তার অপেক্ষায় দিন গুনছে গোটা রাজ্যবাসী।
রাজ্যে কাজু চাষ ও প্রস্তুতির জন্য বিখ্যাত কাঁথি, মাজনা ও রামনগর। কিন্তু আচমকা কাজু শিল্প গভীর সংকটে পড়েছে। রীতিমতো মাথায় হাত পড়েছে এই সমস্ত এলাকার কাজু প্রসেসিং ইউনিটগুলির। নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদে ইতিমধ্যে বৈঠকেও বসেছে কন্টাই কাজু ট্রেডার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন এবং বেঙ্গল কাজু অ্যাসোসিয়েশন। বেঙ্গল কাজু অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনোয়ারউদ্দিন বলেন, "অতিদ্রুত আমরা এর সমাধানের চেষ্টা করছি।"
[আরও পড়ুন: বৃহস্পতিতে লক্ষ্মীর কৃপা শেয়ার বাজারে, ২৫ হাজারে উঠে ইতিহাস নিফটির]
অন্ধ্রপ্রদেশ, কেরল, অসম ও ত্রিপুরা থেকে কাঁচা কাজু আসে এ রাজ্যে। সাধারণভাবে যে কাজু বাজারে বিক্রি হওয়ার আগে লম্বা পদ্ধতি রয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি, মাজনা, তাজপুর, রামনগর, দেপাল এলাকায় প্রায় ১ হাজারের বেশি কাজু প্রসেসিং ইউনিট রয়েছে। কাঁচা কাজু আনার পর তার উপরের মোটা খোলা ছাড়ানো হয়। অর্থাৎ কাজু ভাঙা হয়। এর পর কাঁচা কাজুর উপর থেকে পাতলা খোসা ছাড়ানো হয় মেশিনের সাহায্যে। প্রসেসিং হওয়ার পর তা বাজারে বিক্রির জন্য প্যাকেট বন্দি করা হয়। কাঁথি, মাজনা ও তাজপুরের কাজু ইউনিটগুলির দাবি বাজারে কাজুর দাম কম হওয়ায় তাঁদের ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।
দেশের মধ্যে মহারাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি কাজু উৎপাদন হয়। এ রাজ্যেই তার প্রসেসিং হয়। বিদেশ থেকেও সবচেয়ে বেশি কাঁচা কাজু আসে কাঁথির কাজু শিল্পে। থাইল্যান্ড, আফ্রিকার কয়েকটি দেশ, চিন, সিঙ্গাপুর থেকে কোটি-কোটি টাকার কাঁচা কাজু আমদানি হয়। কন্টাই কাজু অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মির্জা খলিল বেগ বলেন, "বাজার ঠিক হলেই আমরা আবার কাজ শুরু করব।" কাজু ব্যবসায়ী আশরাফুল আলম বলেন, "বাজার এখন মন্দা। কয়েকদিন পর আবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে আশা করা যায়।"