সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ফের পুরুলিয়া-বাঁকুড়া সীমানায় পাচারের সময় আটক শতাধিক গরু ও মহিষ (Cattle)। রবিবার রাতের অন্ধকারে ৬০ নং জাতীয় সড়কে পুরুলিয়ার (Purulia) হুড়ার কাছে ২৭টি গাড়িতে করে পশুগুলিকে পাচার করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। হুড়ায় যুব তৃণমূলের (TMC) একটি দল পাচারকারীদের হাতেনাতে ধরে ফেলে। তারপর তাদের তুলে দেওয়া হয় পুলিশের হাতে। গাড়িগুলির চালক ও খালাসি-সহ ৫০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গবাদি পশুগুলিকে উদ্ধারের পর জানা গিয়েছে, ৮ টি বাছুরের মৃত্যু হয়েছে ইতিমধ্যেই।
রবিবার দুপুরেই আসানসোলের মাইথন থানার পুলিশ পাঁচটি গরু-সহ গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়। গরুগুলিকে ঝাড়খণ্ড থেকে এনে বাংলায় পাচার করার ছক ছিল বলে অনুমান পুলিশের। তার কয়েকঘণ্টা পরই পুরুলিয়ায় ফের উদ্ধার গরু-মহিষ।
গত ২৩ আগস্ট রাতে এই জাতীয় সড়ক দিয়েই একটি নামী দুধের কোম্পানির কন্টেনারে করে গরু পাচার হচ্ছিল। গাড়িটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ায় গোটা বিষয়টি ধরা পড়ে। সেই সময় তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছিল। তখনই প্রথম জানা যায়, এই রাস্তা গরু পাচারের অন্যতম করিডর (Corridor)। পুলিশ প্রশাসন সতর্কতার সঙ্গে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়। কিন্তু তারপরও এখান দিয়ে গরু পাচার বন্ধ হয়নি বলে অভিযোগ।
মাঝরাতে হুড়ার হাটবাজার থেকে এতগুলি গরু-মহিষ উদ্ধারের ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ”জেলায় কিছু কিছু বেআইনি কাজকর্ম চলছে। আমাদের কাছে খবর আছে, পুলিশ আর বিজেপির যোগসাজশে এসব চলছে। যুব তৃণমূলের ছেলেরা তৎপরতার সঙ্গে ২৭টি গাড়িভরতি গরু ধরেছে। এটা তৃণমূলের ছেলেদের করতে হল, তা দুঃখের। সত্য়ি কথা বলতে কী, এসব কাজে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। তাই আমরা নিজেরাই তা ধরতে নেমেছি।”
[আরও পড়ুন: কে মনোজ সানা? গরু পাচার মামলায় হাওয়ালা যোগ পেল সিবিআই]
পাচারের আগে শতাধিক গরু উদ্ধারের ঘটনায় ‘প্রিভেনশন অফ ক্রুয়েলটি টু অ্যানিম্যাল অ্যাক্ট ১৯৬০’ ছাড়াও চুরির অভিযোগ করা হয়েছে থানায়। এনিয়ে পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার এস. সেলভামুরুগন জানান, সুনির্দিষ্ট মামলা রুজু করা হয়েছে। গরুগুলি বিহার ও উত্তরপ্রদেশ থেকে আনা হয়েছিল, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে দেওয়া ছিল উদ্দেশ্য। গরু পাচার মামলার কিনারা করতে অতি তৎপর ইডি, সিবিআই। কিন্তু তারই মধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে পাচারের আগে গরু উদ্ধারের ঘটনা ঘটে চলেছে। অর্থাৎ পাচারচক্র যে সক্রিয়তার সঙ্গেই চলছে, তা অনেকটা স্পষ্ট।