সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: দেশজুড়ে আন্দোলন ও বিরোধীদের চাপের মুখে নিট-ইউজি (NEET-UG) দুর্নীতি কাণ্ডে শনিবার রাতেই সিবিআই (CBI) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্র। রবিবার তদন্তে নেমে একটি মামলা দায়ের করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সূত্রের খবর, নিটের প্রশ্নপত্র ফাঁসকাণ্ডে একাধিক রাজ্যের যাবতীয় এফআইআর, গ্রেপ্তার হওয়া অভিযুক্তদের সিবিআই নিজেদের হেফাজতে নিতে চলেছে। আগেই পুলিশ জিজ্ঞাসাদবাদ করলেও নতুন করে সিবিআই আধিকারিকরা তাদের সঙ্গে কথা বলবে। এদিকে বিহারের পর প্রশ্নপত্র ফাঁসকাণ্ডে মহারাষ্ট্রে থেকে দুই শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ। সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
সিবিআই তদন্তের বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রক। সেখানে বলা হয়েছে, "NEET পরীক্ষায় বেশ কিছু অনিয়ম/প্রতারণা/অপকর্মের অভিযোগ মিলেছে। পরীক্ষা প্রক্রিয়া পরিচালনায় স্বচ্ছতার জন্য শিক্ষা মন্ত্রকের পর্যালোচনার পরে একটি ব্যাপক তদন্তের জন্য সিবিআইকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।" এদিকে পরীক্ষা দুর্নীতি নিয়ে বিরোধীদের চাপের মুখে গতকালই একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রক। ন্যাশনাল টেস্ট এজেন্সির যাবতীয় কার্যক্রম এবং কাজের পদ্ধতি খতিয়ে দেখবে এই কমিটি। নিট, নেট-সহ গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় স্বচ্ছতা আনতে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবেন কমিটির সদস্যরা। দুমাসের মধ্যে মন্ত্রককে রিপোর্ট দেবে তারা।
[আরও পড়ুন: জাল নোটের ছাপাখানা খুলেছে মাওবাদীরা! সুকমায় তল্লাশিতে উদ্ধার বিপুল নকল টাকা]
অন্যদিকে পরীক্ষা শুরুর মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে নিট-পিজি তথা মেডিক্যালে স্নাতকোত্তর স্তরের প্রবেশিকা পরীক্ষা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রবিবারই নিট-পিজি হওয়ার কথা ছিল। অ্যাডমিট কার্ডও পেয়ে গিয়েছেন পরিক্ষার্থীরা। এনটিএর বক্তব্য, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে নিট-পিজি স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। NTA জানিয়েছে, অবিলম্বে পরীক্ষার নতুন দিনক্ষণ জানানো হবে। শনিবার মধ্যরাতেই এ নিয়ে সরব হয়েছেন দেশের বিরোধী দলগুলির নেতারা। শুক্রবার রাতে একইরকমভাবে স্থগিত হয়ে গিয়েছে সিএসআইআর-ইউজিসি-নেট। কেন্দ্রের ধারাবাহিকভাবে প্রবেশিকা পরীক্ষাগুলি বাতিল ও স্থগিত করার সিদ্ধান্ত থেকে স্পষ্ট যে এক বিরাট দুর্নীতির চক্র সমগ্র দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করছে।
[আরও পড়ুন: ইন্দোরে খুন কৈলাস ঘনিষ্ঠ বিজেপি নেতা, ২ আততায়ীর খোঁজে তল্লাশি পুলিশের]
ষড়যন্ত্রের শিকড় যে একাধিক রাজ্যে ছড়িয়ে রবিবার স্পষ্ট হল তাও। বিহারের পর এদিন মহারাষ্ট্র থেকে সঞ্জয় ঠাকুর যাদব এবং জলিল উমরখান পাঠান নামের দুই শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ। অভিযুক্তরা নিটের প্রশ্নপত্র ফাঁসকাণ্ডে জড়িত বলে মনে করা হচ্ছে। দুজনেই জেলা পরিষদ স্কুলের শিক্ষক। পাশাপাশি লাটুরে কোচিং সেন্টার রয়েছে সঞ্জয় এবং জলিলের।