নন্দন দ্ত্ত, রামপুরহাট: ‘সিবিআই পরিকল্পিতভাবে লালনকে খুন করেছে।’ সিআইডির কাছে গোপন জবানবন্দিতে এমনটাই অভিযোগ করলেন বগটুই কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত লালন শেখের স্ত্রী রেশমা বিবি বলে সূত্রের খবর।
শুক্রবার সকালে বগটুই গ্রামে সিআইডির তিন সদস্যের দল লালনের স্ত্রী রেশমা বিবিকে তার বাড়িতে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদের গোটো প্রক্রিয়ার ভিডিওগ্রাফি করা হয়। পরে সেই দলটি রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে গিয়ে লালনের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট খতিয়ে দেখে।
[আরও পড়ুন: দুর্ভোগ প্রায় শেষের পথে, বড়দিনের আগেই খুলবে সাঁতরাগাছি ব্রিজ]
সূত্রের খবর, স্বামীকে নিজের হেফাজতে নিয়ে খুন করেছে সিবিআই। রেশমা বিবি সিআইডিকে এমনই তথ্য দিয়েছেন। কারণ হিসাবে তিনি জানান, গত ১০ ডিসেম্বর আদালতে নিয়ে যাওয়ার আগে পুলিশ লকআপে রামপুরহাটে লালনের সঙ্গে তিনি দেখা করেন। সেখানেই নাকি লালন তাঁকে দেখে কাঁদছিল। বলছিল তাঁকে মেরে ফেলা হবে। কারণ, হিসাবে লালন তাঁকে জানায়, সিবি আইয়ের উচচ পদস্থ কর্তারা স্থানীয় সিবিআই অফিসারদের উপর অত্যাচারের নির্দেশ দিয়েছেন। তাদের একটাই উদ্দেশ্যে ছিল লালন যেন উচ্চপদস্থ কোনও নেতার নাম করে।
জানা গিয়েছে, স্বামীর কাছে নাম শুনেই রেশমা সবিস্তার এফআইআরে এই সমস্ত কথা উল্লেখ করেছিলেন। সিআইডির তিন সদস্যের দল প্রায় তিনঘন্টা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। ততক্ষণ বাড়ির ভিতরে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এমনকি সিআইডি ফিরে যাওয়ার পরে লালনের ঘরের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। সিআইডি দল বগটুই থেকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে গিয়ে ময়নাতদন্তের রিপোর্টটি খতিয়ে দেখে। কারণ, ইতিমধ্যে ওই রিপোর্ট নিয়ে আদালতে বেশ কিছু প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি।
[আরও পড়ুন: বরের বাড়ি ঘেরাও, বিয়ে রুখে নাবালিকাকে স্কুলে ফেরাল কন্যাশ্রী ক্লাবের সদস্যরা]
উল্লেখ্য, বগটুই কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত লালন শেখের মৃত্যুতে সিবিআইয়ের (CBI) উপর ক্ষোভপ্রকাশ করেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি। তিনি স্পষ্ট বলেন, “আপনাদের হেফাজতে যদি কারও মৃত্যু হয়ে থাকে, তাহলে সেই দায় আবেদনকারীর উপর বর্তায় না। সেটার দায় কি সিবিআই এড়িয়ে যেতে পারে?” শুক্রবার হাই কোর্টে অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) জামিনের শুনানি ছিল। তাতেই লালন শেখের মৃত্যু মামলার কথা উল্লেখ করা হলে বিচারপতির ভর্ৎসনার মুখে পড়েন সিবিআই তদন্তকারীরা।