সুব্রত বিশ্বাস: গত সপ্তাহে অমিত শাহর (Amit Shah) রাজ্য সফরের মাঝেই সক্রিয় হয়ে আসানসোল শিল্পাঞ্চলের বেশ কয়েকজন কয়লা ব্যবসায়ীর বাড়ি ও অফিসের হানা দিয়েছিলেন আয়কর দপ্তরের আধিকারিক। অন্যদিকে, সিবিআই (CBI) তল্লাশি চালিয়ে গরুপাচারকাণ্ডে অভিযুক্ত অন্যতম মূল পাণ্ডা মুর্শিদাবাদের ব্য়বসায়ী এনামুল হককে গ্রেপ্তার করে। এই গোটা চক্রে যোগসাজশের তথ্য় পেয়ে এবার আসানসোলের ৬ কয়লা ব্যবসায়ীকে নোটিস পাঠানো হল। ব্যবসা সংক্রান্ত বিস্তারিত নথিপত্র নিয়ে তাঁদের সিবিআই দপ্তরে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। আরও খবর, কুখ্যাত কয়লা ব্যবসায়ী অনুপ মাজি তথা লালার সঙ্গে এদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে।
বিরোধী রাজ্যগুলিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি অতি মাত্রায় সক্রিয়, এমন অভিযোগে বারবার সরব হয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্ষেত্রে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ তুলেছেন তিনি। এসবের মধ্যেই গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর দু’দিনের রাজ্য সফর চলাকালীন আসানসোল শিল্পাঞ্চলের বেশ কয়েকজন কয়লা ব্যবসায়ীর বাড়ি এবং কার্যালয় অভিযান চালায় আয়কর দপ্তর। কলকাতায় চলে সিবিআই তল্লাশি। এসব নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কিঞ্চিৎ ক্ষুণ্ণ হয়েছিলেন। ওইদিন নবান্নের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে প্রশ্ন তুলেছিলেন, রাজ্য পুলিশকে অন্ধকারে রেখে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় সংস্থা, এটা কেন? এরপর অমিত শাহও সাংবাদিক সম্মেলনে পালটা মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলেন, ”ওনার সঙ্গে লালার কী সম্পর্ক? কেন উনি বাঁচাতে চাইছেন, তা স্পষ্ট করে বলুন।” তারপরই এই ‘লালা’ ওরফে অনুপ মাজিকে নিয়ে আলোচনা শুরু হয় বিভিন্ন মহলে।
[আরও পড়ুন: জঙ্গিযোগে ধৃত বাংলার ছাত্রীকে জেরায় মিলল সূত্র, কর্ণাটক থেকে NIA’র জালে যুবক]
সম্প্রতি গরুপাচার কাণ্ডের অন্যতম মূলচক্রী মুর্শিদাবাদের ব্যবসায়ী এনামুল সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর তার সঙ্গে কয়লা ব্যবসায়ী লালার যোগসাজশের প্রমাণ পান তদন্তকারীরা। আসানসোলের কয়লা ব্যবসায়ীদের অফিসে তল্লাশি চালিয়ে যেসব নথি উদ্ধার করেন আয়কর দপ্তরের আধিকারিকরা, তাতেই লালা-এনামুল যোগ স্পষ্ট হয় বলে সূত্রের খবর। তাতেই জানা গিয়েছে, লালা উত্তরবঙ্গে কয়লা পাচারের জন্য এনামুলের গাড়ি ব্যবহার করত, প্রচুর টাকার লেনদেন ছিল উভয়ের মধ্যে। আর লালার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল আরও ৬ ব্যবসায়ীর। এবার সিবিআইয়ের স্ক্যানারে তারাই। ব্যবসার নথিপত্র-সহ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের নোটিস পাঠানো হল।