নন্দন দত্ত, সিউড়ি: বগটুই অগ্নিকাণ্ডে তিনজনের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করল সিবিআই। শনিবার সন্ধ্যায় বগটুই গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় ছাপানো পোস্টার দেয় সিবিআই। অভিযুক্তরা রোহন শেখ, মারফত শেখ ও খুশিল শেখ। অভিযুক্ত তিনজনের বিরুদ্ধে ১১টি মামলায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। যার মধ্যে মূলত অগ্নি সংযোগ করে গণহত্যার অভিযোগ দায়ের হয়েছে। শনিবার বিকালে বগটুই স্বজনহারা পরিবারের সদস্য মিহিলাল শেখের বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটিতে আদালতের নোটিস ঝোলানো দেখে অভিযুক্ত তিনজনের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি দাবি করেন তাঁরা।
গত ২০২২ সালের ২১ মার্চ রামপুরহাট শহর লাগোয়া ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে বগটুই মোড়ে বোমা মেরে খুন করা হয় তৃণমূল নেতা তথা বড়শাল পঞ্চায়েতের ভাদু শেখকে। ওই খুনের বদলা নিতে এক শিশু কন্যা-সহ ১০ জনকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ ওঠে ভাদু ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মুল অভিযুক্ত লালন শেখকে ঘটনার ন’মাস পর গ্রেপ্তার করে সিবিআই। ওই বছরের ১২ ডিসেম্বর দুপুরে সিবিআই হেফাজতে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় লালনের। ঘটনার পর ফের উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। রাতারাতি সিবিআই রামপুরহাটের অস্থায়ী অফিস গুটিয়ে চলে যায়। কিন্তু সিবিআই অগ্নিকান্ডের ঘটনা নিয়ে তদন্ত থামায়নি। নিজেদের গতিতে তদন্ত চালাতে শুরু করে।
[আরও পড়ুন: ‘আমার দিদি চলে গেল…’, প্রয়াত শ্রীলার স্মৃতিচারণে কান্নায় গলা বুজে এল ঋতুপর্ণার ]
উল্লেখ্য, নৃশংস সেই গ্ণহত্যার পরে রাজ্য সরকার সিট গঠন করে তদন্ত শুরু করে। পরে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে সিটের কাছ থেকে তদন্তভার হাতে নেয় সিবিআই। সিটের পক্ষ থেকে ৩৩ জনের নামে গণহত্যার অভিযোগ দায়ের হয়েছিল।পরে তিনজনের নাম যুক্ত করা হয় অভিযোগে। কিন্তু তারা অধরা থেকে গিয়েছে। সেই অধরা তিনজন মৃত লালন শেখের ছেলে রোহন শেখ। এছাড়া মারফৎ শেখ ওরফে মারফৎ হোসেন। তিনি মৃত ভাদু শেখের বাবা। এবং খুসিল শেখ। তাদের নামেই হুলিয়া জারি করা হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় বগটুই গ্রামে গিয়ে নোটিস বিদ্যুতের খুঁটিতে ঝুলিয়ে দিয়ে আসেন সিবিআই আধিকারিকরা। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে খুন এবং অগ্নিসংযোগের অভিযোগ রয়েছে। প্রত্যেককে ৩০ জানুয়ারির মধ্যে রামপুরহাট মহকুমা অতিরিক্ত মুখ্য দায়রা বিচারকের আদালতে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্বজনহারা পরিবারের সদস্য মিহিলাল শেখ বলেন, “সিবিআই নোটিস ঝুলিয়ে দিয়ে গিয়েছে। আমি চাই যারা দোষী তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। ঘটনার পর থেকে খুশিল এলাকা ছাড়া। বাকিরা এলাকায় ছিল।” তবে এনিয়ে কিছু বলতে চাননি মৃত লালনের স্ত্রী রেশমি বিবি।