সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা পরিস্থিতিতে CBSE বোর্ড-সহ রাজ্য বোর্ডগুলির দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা কী হবে? বিভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষাগুলির ভবিষ্যতই বা কী? জানতে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকেও মিলল না চূড়ান্ত রফাসূত্র। রবিবার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের নেতৃত্বে রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্ক দেশের সমস্ত রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী এবং শিক্ষাসচিবদের সঙ্গে ভারচুয়াল বৈঠক করলেন। সেখানেই আলোচনার পর ঠিক হয়েছে, এই বিষয়ে রাজ্যগুলিকে তাঁদের মতামত লিখিত আকারে জমা দিতে বলা হয়েছে। তারপরই ১ জুন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্র। তারপরই তা জানিয়ে দেওয়া হবে। তবে অন্তত ১৫ দিন সময় পাবেন পড়ুয়ারা। জানিয়েছেন খোদ শিক্ষামন্ত্রী।
জানা গিয়েছে, এদিনের বৈঠকে কোনও কোনও রাজ্য আপাতত পরীক্ষা স্থগিত রেখে পরবর্তী সময়ে তা নেওয়ার পক্ষেই মত দিয়েছে। আবার দিল্লি, মহারাষ্ট্র সরকারের দাবি, অন্তবর্তী মূল্যায়নের মাধ্যমেই এবারের পরীক্ষার ফলপ্রকাশ হোক। বরং ১৭-১৮ বছর বয়সি পড়ুয়াদের আগে টিকাকরণের ব্যবস্থা করা হোক। এদিকে, কেন্দ্রের তরফ থেকেও রাজ্যগুলিকে দুটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রথমত, পড়ুয়ারা নির্দিষ্ট কয়েকটি বিষয়ের মধ্যেই পরীক্ষা দিক। যা কিনা নেওয়া হবে পুরনো পরীক্ষার নিয়ম মেনেই।
আর দ্বিতীয়ত, ছাত্র-ছাত্রীরা প্রধান বিষয়গুলির পরীক্ষা নিজের স্কুলে তিন ঘণ্টার পরিবর্তে দেড় ঘণ্টায় পরীক্ষা দেবেন। সেক্ষেত্রে প্রশ্নপত্র হবে শুধুমাত্র ‘অবজেকটিভ’ বা MCQ অর্থাৎ ছোট প্রশ্নের উপরই। বেশ কয়েকটি রাজ্য আবার মৌখিকভাবে এই দুটির মধ্যে একটিকে বেছে নেওয়ার পক্ষেই মত দিয়েছে। অনেকেই বিষয় কমিয়ে পরবর্তী সময়ে পরীক্ষা নেওয়ার কথা বলেছে। সবমিলিয়ে আগামী দুদিনের মধ্যেই কেন্দ্রকে লিখিত আকারে এই সিদ্ধান্ত জানাতে হবে। তবে সূত্রের খবর, পরীক্ষা আগামী জুলাই মাসেও হতে পারে। কিংবা আরও পিছিয়ে যেতে পারে। আবার অপর সূত্রের দাবি, এই বৈঠকের যে যে আলোচনা হয়েছে, তা প্রধানমন্ত্রীর অফিসে জানানো হতে পারে। সেখান থেকেই পরবর্তী সময়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এদিকে, এদিন পশ্চিমবঙ্গের পক্ষ থেকে শিক্ষামন্ত্রী বাত্য বসু বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না। তবে ছিলেন শিক্ষাসচিব মনীশ জৈন। রাজ্যও জানিয়েছে, তাঁরাও দ্বাদশের পরীক্ষা নেওয়ারই পক্ষে।
[আরও পড়ুন: ‘যশ’ মোকাবিলায় রিভিউ মিটিং প্রধানমন্ত্রীর, NDRF ও নৌসেনাকে বিশেষ নির্দেশ মোদির]
প্রসঙ্গত, করোনা আবহে মূল চিন্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশজুড়ে বিভিন্ন শিক্ষাবোর্ড এবং রাজ্য বোর্ডের দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা সংগঠিত করার বিষয়টি। এর মধ্যেই সিবিএসই বোর্ডের পক্ষ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা যাতে বাতিল না করে পরে নেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, সেই আরজি জানিয়ে চিঠি দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী নিশঙ্ককে অনুরোধ করা হয়েছে। তারপরেই এ বিষয়ে তৎপর হয়ে এদিনের বৈঠকটি ডাকে কেন্দ্র। দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার ফলের উপরেই যে ডাক্তারি ও ইঞ্জিনিয়ারিং-সহ পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন কোর্সে ভরতি হওয়া নির্ভর করে এবং ভবিষ্যতে এ নিয়ে তাদের সমস্যা হতে পারে, চিঠিতে এই যুক্তি দিয়েছে বোর্ড। পরীক্ষা বাতিল না করার অনুরোধের পাশাপাশি বোর্ডের পক্ষ থেকে কীভাবে পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে সে বিষয়ে একগুচ্ছ প্রস্তাবও দেওয়া হয়। বলতে গেলে সিবিএসই বোর্ডের সেই প্রস্তাবেই কার্যত মেনে নিয়ে রাজ্যগুলির কাছে মতামত জানতে চাইল কেন্দ্র।