সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের স্বমহিমায় ফিরছে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থা বিএসএনএল (BSNL)। বুধবার টেলিকম মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, বিএসএনএলকে পুনরুজ্জীবিত করতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ১ লক্ষ ৬৪ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ অনুমোদন করেছে! বর্তমানে বাজারে ৩৩ হাজার কোটি টাকার ঋণ রয়েছে বিএসএনএলের। সংস্থার ব্যালেন্স শিটের চাপ কমাতে এই আর্থিক প্যাকেজ ব্যবহার করা হবে।
জানা গিয়েছে, ঋণের খরচ কমাতে বিএসএনএল সভারেন গ্যারান্টি বন্ড প্রকাশ করবে। পাশাপাশি বিএসএনএলের ফাইবার অপটিক্যাল যোগাযোগ পরিষেবার পরিধি বৃদ্ধি করে, সংস্থার পরিষেবার মান উন্নত করা হবে। এর জন্য বিএসএনএলের পরিকাঠামোর উন্নয়ন করা হবে। পাশাপাশি বিএসএনএলের ৪জি এবং ৫জি পরিষেবার জন্য স্পেকট্রামের প্রশাসনিক বরাদ্দের অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। সেই সঙ্গে বিএসএনএল এবং ভারত ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক লিমিটেডের (বিবিএনএল) সংযুক্তির বিষয়েও অনুমোদন পাওয়া গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: দ্রৌপদী মুর্মুকে ‘রাষ্ট্রপত্নী’ বলে কটাক্ষ! বিতর্কে অধীর, তীব্র আক্রমণে বিজেপি]
বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর টেলিকম মন্ত্রী জানিয়েছেন, এই আর্থিক প্যাকেজের তিনটি প্রধান লক্ষ্য হল– বিএসএনএলের পরিষেবার মান উন্নত করা, ব্যালান্স শিটকে চাপমুক্ত করা এবং সংস্থার ফাইবার অপটিক্যাল কেবল নেটওয়ার্কের বিস্তৃতি ঘটানো। প্যাকেজটিতে মোট ৪৩,৯৬৪ কোটি টাকার নগদ সহায়তা এবং ১.২০ লক্ষ কোটি টাকার অন্যান্য সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানান। তিনি আরও জানিয়েছেন, একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ভারতের ২৪,৬৮০টি গ্রামে এখনও কোনও মোবাইল নেটওয়ার্ক সংযোগ নেই। দেশের ২৫,০০০ প্রত্যন্ত গ্রামে মোবাইল নেটওয়ার্ক সংযোগ পৌঁছে দিতে ২৬,৩১৬ কোটি বিনিয়োগে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সূত্রের খবর, বিএসএনএলকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য চার বছর সময় নেওয়া হয়েছে। তবে বেশিরভাগ পদক্ষেপই প্রথম দুই বছরের মধ্যেই বাস্তবায়িত করা হবে। বর্তমানে বিএসএনএল-এর ৬.৮৩ লক্ষ কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ অপটিক্যাল ফাইবার কেবল নেটওয়ার্ক রয়েছে। বিএসএনএল এবং বিবিএনএল-এর সংযুক্তিকরণ হলে এই টেলিকম সংস্থা বাড়তি ৫.৬৭ লক্ষ কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার কেবল নেটওয়ার্কের সুবিধা পাবে। জানা গিয়েছে, বিএসএনএল কেন্দ্রীয় সরকারের একটি কার্যকরী সংস্থা হিসাবে কাজ করবে। সংস্থার যাবতীয় সম্পদের মালিকানা সরকারের কাছেই থাকবে। বিবিএনএল-এর কর্মীসংখ্যা এখন ২০০ জনেরও কম। তাদের বিএসএনএলের আওতায় আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। দুই সংস্থাই রাজস্ব ভাগের চুক্তিকে সম্মান করবে।
[আরও পড়ুন: নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগেও দুর্নীতি, মেধাতালিকা প্রকাশ্যে আসতেই ফের মামলা]
আরেক রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থা এমটিএনএল-এর বেসরকারীকরণে কোনও পরিকল্পনা নেই বলে জানান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবুসিংহ চৌহান। ২০১৯ সালের অক্টোবরে বিএসএনএল এবং এমটিএনএল – দুই সংস্থারই পুনরুজ্জীবনের পরিকল্পনা অনুমোদন করেছিল মোদি সরকার। সেই পরিকল্পনায় দুই রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন টেলিকম কর্পোরেশনকে সংযুক্তির বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে, এমটিএনএলের ঋণের বোঝা এবং বিএসএনএলের দুর্বল আর্থিক অবস্থার কারণে, এই পরিকল্পনা পিছিয়ে দিয়েছিল সরকার।