স্টাফ রিপোর্টার: একশো দিনের কাজ, আবাস যোজনার (Awas Yojona) পর এবার জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ বন্ধ করার পথে হাঁটছে মোদি সরকার। যা নিয়ে বুধবার নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই টাকা বন্ধ হলে রাজ্যের প্রায় ৬০ হাজার আশাকর্মীর বেতন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।
সম্প্রতি কেন্দ্রের তরফে রাজ্যকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, কালার ব্র্যান্ডিং না মানলে ন্যাশানাল হেলথ মিশনের টাকা বন্ধ করে দেওয়া হবে। সেই ঘটনার প্রসঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী এদিন ক্ষোভ প্রকাশ করেন। নবান্ন সূত্রে খবর, মন্ত্রিসভার বৈঠকে কেন্দ্রকে বিঁধে তিনি বলেন, সবকিছু গেরুয়া রং করে দিচ্ছে। হাসপাতাল, মাঠ, অফিস কোনওকিছুই বাদ দিচ্ছে না।
[আরও পড়ুন: ‘কাজ করছে না কামারহাটি পুরসভা’, ইডি স্ক্যানারে থাকা পুরপ্রধানকে ‘ধমক’ সৌগতর]
উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়ে দিয়েছে, কেন্দ্রের নির্দেশিকা মেনে প্রকল্পের ‘ব্র্যান্ডিং’ ঠিক মতো হলে এবং বিধিবদ্ধ নিয়ম মানা হলে পরবর্তী কিস্তির টাকা পাবে রাজ্য। নবান্নের আধিকারিকদের একটা বড় অংশ মনে করছে, ওই বক্তব্যের মোদ্দা কথা হল, স্বাস্থ্য মিশনের ‘ব্র্যান্ডিং’ এবং বিধিবদ্ধ নিয়ম না মানলে টাকা বন্ধ করে দেওয়া হবে। যা প্রকারান্তরে হুঁশিয়ারিই।
প্রশাসনিক কর্তারা মনে করছেন, সমস্যাটা চলছে বেশ কয়েকমাস ধরে। কেন্দ্রীয় অনুদানের উপর ভিত্তি করে দেশে ‘আয়ুষ্মান ভারত-হেলথ অ্যান্ড ওয়েলনেস সেন্টার’ চালু হয়েছে, যেখানে প্রাথমিক, ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির পরিকাঠামো মজবুত করা হচ্ছে। রাজ্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা কোনও কোনও ক্ষেত্রে ‘আয়ুষ্মান ভারত-হেলথ অ্যান্ড ওয়েলনেস সেন্টার’ নামটি এড়িয়ে যাচ্ছে। আবার রাজ্যের পরিকাঠামোগুলির রং নীল-সাদা। যদিও কেন্দ্রীয় বিধিতে সেই রং গেরুয়া করতে বলেছিল। লোগো নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহল মনে করিয়ে দিচ্ছে, অর্থমন্ত্রকের (Ministry of Finance) বিধি অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় অনুদানভুক্ত প্রকল্পগুলির ‘ব্র্যান্ডিং’ই মেনে চলতে হবে। গত ৩ নভেম্বর স্বাস্থ্য মিশনের অধিকর্তা নেহা গর্গ রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকে লিখিতভাবে এমনটাই জানিয়েছেন।
[আরও পড়ুন: ‘নিজের লড়াই নিজেকেই লড়তে হবে’, মহুয়াকে বার্তা অভিষেকের]
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের (Health Ministry) প্রতিনিধিরা রাজ্যে পরিকাঠামোগুলি ঘুরেও দেখেছেন। এক অধিকর্তা জানিয়েছেন, রাজ্যে ১০ হাজার ৬৩২টি পরিকাঠামোর মধ্যে গত ১২ সেপ্টেম্বর ৯২৯২টির ছবি পোর্টালে আপলোড করা হয়েছিল। দেখা গিয়েছে, প্রকল্পের কেন্দ্রীয় বিধি অনুযায়ী আংশিক ‘ব্র্যান্ডিং’ মান্যতা পেয়েছে। আর তা ঘিরেই তৈরি হয়েছে জটিলতা। যাতে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ।