shono
Advertisement
Bangladesh

ওপার বাংলার অশান্তিতে বাড়বে অনুপ্রবেশ! সীমান্তের বেড়াবিহীন এলাকা নিয়ে উদ্বেগে কেন্দ্র

ফেন্সিংহীন এলাকায় দ্রুত কাঁটাতারের বেড়ার কাজ শেষ করতে নির্দেশ দিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
Published By: Tiyasha SarkarPosted: 02:38 PM Dec 03, 2024Updated: 02:38 PM Dec 03, 2024

স্টাফ রিপোর্টার, শিলিগুড়ি: অশান্ত বাংলাদেশের সংখ‌্যালঘুদের একটা অংশ শান্তির খোঁজে ভারতে প্রবেশ করতে মরিয়া। প্রতিদিনই সীমান্তে জমায়েত হচ্ছেন তাঁরা। পরিস্থিতি এতটাই উদ্বেগজনক যে, ফেন্সিংহীন এলাকায় দ্রুত কাঁটাতারের বেড়ার কাজ শেষ করতে নির্দেশ দিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। সেই নির্দেশ মেনেই তৎপর বিএসএফ। যে সব এলাকায় ফেন্সিং নেই সেখানে কাঁটাতার বসানোর কাজ শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

উত্তরবঙ্গ বিএসএফের আইজি সূর্যকান্ত শর্মা বলেন, “দ্রুত কাঁটাতার লাগানো হবে। পাশাপাশি যেখানে ফেন্সিং নেই সেখানে অতিরিক্ত জওয়ান মোতায়েন করা হয়েছে। সীমান্তে নজরদারি বাড়াতে সমস্ত ব‌্যবস্থা করা হয়েছে।” দক্ষিণবঙ্গ বিএসএফ সূত্রে খবর, এখানকার উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ সীমান্তেও চাপ বাড়ছে। সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত জওয়ান। যে সব এলাকায় কাঁটাতারের সমস‌্যা রয়েছে সেগুলি ঠিক করার জন‌্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইছামতী নদীর জল সীমান্তে বাড়তি নাইট ভিশন লাইট ব‌্যবহার করা হচ্ছে। ড্রোন উড়ছে। বাড়ানো হয়েছে টহলদারি। জিরো পয়েন্ট বরাবর থাকা জমিতে চাষের কাজে যাওয়া কৃষকদের নিরাপত্তা এখন বাড়তি মাথাব‌্যথা। সেদিকেও নজর রাখা হচ্ছে। কারণ নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জে দিনতিনেক আগে চার বাংলাদেশিকে ধরা হয়েছে।

উত্তরবঙ্গে আট জেলার অধীনে থাকা প্রায় ৯৩৬ কিলোমিটার ইন্দো-বাংলাদেশ সীমান্তের মধ্যে ১০ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ১০০ কিলোমিটার সীমান্তে কাঁটাতার নেই। তাই ওই এলাকাগুলোতে বাড়তি নজর দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কিছু সীমান্তে অস্থিরতা রয়েছে সেদিকেও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, ফুলবাড়ির পঞ্চগড়, কৃষাণগঞ্জের ঠাকুরগাঁও-সহ দক্ষিণ দিনাজপুর সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কারণ এই সীমান্তগুলো দিয়েই বেশি অনুপ্রবেশ হতে পারে বলে আশঙ্কা বিএসএফের। তাই অতিরিক্ত জওয়ান মোতায়েনের পাশাপাশি থার্মাল ক্যামেরা, নাইট ভিশন ক্যামেরা, সিসি ক্যামেরা ও ড্রোনে নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। সীমান্তে পারাপারে বসানো হয়েছে বায়োমেট্রিক মেশিন।

এদিন বিএসএফের আইজি সূর্যকান্ত শর্মা বলেন, “সীমান্তে টানা ও নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা রাখা হয়েছে। তবে আগস্ট মাসের পরে ওপার থেকে সংখ্যালঘুদের এপারে আসার একটা চাপ ও প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে৷ বিজিবির সঙ্গে আলোচনা করে খুব দক্ষতার সঙ্গে সেইসব সমস্যা মেটানো হচ্ছে। পাশাপাশি ফেন্সিংয়ের জন্য জমি অধিগ্রহণে রাজ্য সরকারের ভালো সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে। ফ্রন্টিয়ারের অধীনে থাকা মোট সীমান্তের ১০ শতাংশ মাত্র ফেন্সিং নেই। খুব তাড়াতাড়ি সেই জায়গাতেও ফেন্সিং লাগানো হবে।”

বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২৩ সালে বিএসএফের নর্থ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ার ইন্দো-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশকারী ১২৭ জন বাংলাদেশি ও ১৭৩ জন ভারতীয়কে গ্রেপ্তার করে৷ কিন্তু চলতি বছরে সেই সংখ্যা বেড়ে ১৯৪ জন বাংলাদেশি, ১৯৭ জন ভারতীয়, তিন জন রোহিঙ্গা ও তিন জন অন্য অনুপ্রবেশকারী মিলিয়ে মোট ৩৯৭ জন অনুপ্রবেশকারীকে পাকড়াও করা হয়। সব থেকে আশ্চর্যের বিষয় হল, চলতি বছরের আগস্ট মাস থেকে নভেম্বর পর্যন্ত গত চার মাসেই ১৪৯ জন অনুপ্রবেশকারীকে গ্রেপ্তার করেছে বিএসএফ। যার মধ্যে ৩৫ জন ভারতীয় ও ১১৪ জন বাংলাদেশি রয়েছে। অর্থাৎ বাংলাদেশে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অস্থিরতার জেরে ইন্দো-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে অনুপ্রবেশ গতিবিধি। গত চারমাসে শুধু মাত্র উত্তরবঙ্গে মোতায়েন থাকা বিএসএফের শিলিগুড়ি ফ্রন্টিয়ারের অধীনে অনুপ্রবেশের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে অনুপ্রবেশকারীদের কড়া হাতে প্রতিরোধ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিলিগুড়ি ফ্রন্টিয়ারের বিএসএফ আধিকারিকরা। এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএসএফের ডিআইজি (জেনারেল) কুলদীপ সিং, ডিআইজি (অপারেশন) সঞ্জয় শর্মা, ডিআইজি (পিএসও) সঞ্জয় পন্থ-সহ অন্যান্যরা। তাঁরা জানিয়েছেন, উত্তরের সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • অশান্ত বাংলাদেশের সংখ‌্যালঘুদের একটা অংশ শান্তির খোঁজে ভারতে প্রবেশ করতে মরিয়া।
  • প্রতিদিনই সীমান্তে জমায়েত হচ্ছেন তাঁরা। পরিস্থিতি এতটাই উদ্বেগজনক যে, ফেন্সিংহীন এলাকায় দ্রুত কাঁটাতারের বেড়ার কাজ শেষ করতে নির্দেশ দিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
  • সেই নির্দেশ মেনেই তৎপর বিএসএফ। যে সব এলাকায় ফেন্সিং নেই সেখানে কাঁটাতার বসানোর কাজ শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
Advertisement