সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নিজের সন্তানকে খুনে অভিযুক্ত মা! কলকাতার মেয়ে সূচনা শেঠের ঘটনায় চমকে গিয়েছে গোটা দেশ। যদিও সন্তান খুনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি, তদন্তকারীরা অবশ্য ওই দাবি মানতে নারাজ। এই টানাপোড়েনের মধ্যেই জানা গেল, বিচ্ছেদের মামলায় স্বামীর কাছে মাসে আড়াই লক্ষ টাকা খোরপোষ দাবি করেছিলেন সূচনা। যেহেতু স্বামীর মাসিক বেতন ৯ লক্ষ টাকা। যদিও তদন্তকারীরা অবাক হচ্ছেন, নিজে একটি তথ্যপ্রযুক্ত সংস্থা সিইও হওয়ার পরেও, মোটা রোজগার করলেও এমন দাবি দেখে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩৯ বছরের সূচনা স্বামী ভেঙ্কট রামান পিআরের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার মামলা করেছিলেন। স্বামীর বিরুদ্ধে প্রমাণ হিসেবে ওয়াটস্যাপ মেসেজ, ছবি এবং মেডিক্যাল সার্টিফিকেট দাখিল করেছিলেন। ২০২১ সালের মার্চ মাস থেকেই আলাদা থাকেন তিনি। আদালতে বিচ্ছেদ চাওয়ার পাশাপাশি প্রতি মাসে আড়াই লক্ষ টাকা খোরপোষের দাবি করেন সূচনা। তাঁর বক্তব্য ছিল, স্বামী যেহেতু বছরে কোটি টাকার বেশি আয় করেন, ফলে মাসে আড়াই লক্ষ টাকা খোরপোষ প্রাপ্য। ২০১০ সালের ৮ নভেম্বর বিয়ে হয় সূচনা-ভেঙ্কটের। ২০১৯ সালের ১৪ আগস্ট সন্তান হয় তাঁদের। ২০২২-এর আগস্টে স্বামীর বিরুদ্ধে বিচ্ছেদের মামলা করেন বেঙ্গালুরুর একটি এআই ডেভলপার সংস্থার সিইও।
[আরও পড়ুন: রামমন্দির উদ্বোধনে থাকবেন আডবাণী, দায়িত্ব নিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ]
এদিকে ৪ বছরের ছেলেকে খুনের মামলায় জের করা হচ্ছে সূচনার স্বামীকে। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে ভেঙ্কট রামান পিআর জানিয়েছেন, ৭ জানুয়ারি হত্যাকাণ্ডের আগে ভিডিও কলে ছেলের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। অতএব, ছেলে সুস্থ ছিল বলেই মনে করা হচ্ছে। প্রশ্ন হল, তার পরেই কি কাশির সিরাপ খাইয়ে বেহুঁশ করে সন্তানকে হত্যা করেন সূচনা?
সোমবার রাতে কর্নাটকের চিত্রদুর্গ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল অভিযুক্তকে। মঙ্গলবার তাঁকে আবার গোয়া নিয়ে আসা হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন সন্তানের শ্বাসরোধ করতে সম্ভবত বালিশ বা তোয়ালে ব্যবহার করেছিলেন সূচনা। পাশাপাশি পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি বড় ও একটি ছোট কাশির সিরাপের বোতল উদ্ধার করেছে। মনে করা হচ্ছে বিপুল পরিমাণে সিরাপ খাইয়ে ছেলেকে অচেতন করে তার পর তার শ্বাসরোধ করে অভিযুক্ত। সেই কারণেই ময়নাতদন্তের রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, প্রতিরোধের কোনও চেষ্টাই করেনি ছোট্ট শিশুটি। ওই অ্যাপার্টমেন্টের এক কর্মী জানাচ্ছেন, তাঁকে দিয়ে একটি ছোট সিরাপের বোতল আনান সূচনা। বড় বোতলটি তিনি নিজে এনেছিলেন, অনুমান এমনই।