সুমন করাতি, হুগলি: আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে দুর্গাপুজোর অনুদান না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কয়েকটি পুজো কমিটি। ইতিমধ্যে হুগলি জেলার উত্তরপাড়ার তিনটি পুজো কমিটি সরকারি অনুদান প্রত্যাখ্যান করার কথা ঘোষণা করেছে। রবিবার তার দেখাদেখি কোন্নগরের একটি পুজো কমিটিও অনুদান নেবে না বলে জানিয়েছে। এই আবহে এবার যে যে পুজোকমিটি অনুদান নিতে ইচ্ছুক, তাদের এক প্রকাশ্য জমায়েতের আহ্বান জানিয়েছেন কোন্নগর পুরসভার পুরপ্রধান স্বপন দাস।
রবিবার ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপে পোস্ট করে পুরপ্রধান পুজোর সরকারি অনুদান নিতে ইচ্ছুক পুজোকমিটিগুলিকে পালটা পোস্টার, ব্যানার নিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ছটায় কোন্নগরের চলচ্চিত্রম মোড়ে জমায়েতের বার্তা দিয়েছেন। তাঁর এই পোস্ট সামনে আসতেই তুমুল জল্পনা শুরু হয়েছে। কোনও কোনও পুজোকমিটি প্রশ্ন তুলেছে, এই বিভাজনের মাধ্যমে আসলে পুরপ্রধান সরকারি অনুদানে রাজনীতির রং চড়াচ্ছেন। বিজেপির দাবি, আর জি কর কাণ্ডে নাগরিকদের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদকে দমিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে পালটা ওই জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছে।
তারই পালটা হিসাবে অনুদান নিতে ‘ইচ্ছুকদের’জমায়েতে অংশ নেওয়ার ডাক দিয়েছেন কোন্নগরের পুরপ্রধান। তিনি জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিজেদের ব্যানার, পোস্টার নিয়ে জড়ো হতে হবে ওই পুজো কমিটির সদস্যদের। যে প্রসঙ্গে বিজেপির অভিযোগ, পুরপ্রধানের আহ্বানেই স্পষ্ট যে, অনুদান নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে বিজেপির উত্তরপাড়ার মণ্ডল সভাপতি রাজেশ রজক বলেন, ‘‘আগে অনুদান ছাড়াই পুজো হত। আগামিদিনেও হবে।’’পুরপ্রধানের বার্তা পাওয়ার পর পুজো কমিটিগুলির মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। কোন্নগর মাস্টারপাড়া পুজো কমিটির হিসাবরক্ষক স্বপন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘চেয়ারম্যান হোয়াটসঅ্যাপে যে মেসেজ করেছেন, সেটা আমাদের কাছেও এসেছে। এর অর্থ হল, যাঁরা অনুদান বয়কট করছেন, তাঁদের চাপে রাখা।’’
[আরও পড়ুন: ‘রাত দখলে’র পর ‘অধিকার দখল’, নবান্ন অভিযান প্রত্যাখ্যানের আহ্বান মহিলা বাহিনীর]
কোন্নগর দেবপাড়া সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির সম্পাদক সায়ন্তন মিত্র বলেন, ‘‘পুরসভার চেয়ারম্যানের বার্তা আমরাও পেয়েছি। আমাদের পুজোর আয়োজন খুবই ছোট। সরকারি অনুদান তাই আমাদের কাছে জরুরি। কিন্তু কী কারণে জমায়েত বা কেন যেতে হবে, সেই বিষয়টা পরিষ্কার নয়। ওই মিছিল বা জমায়েত থেকে কি আর জি করের ঘটনার বিচারের দাবি উঠবে? সেটাও জানি না।’’কোন্নগরের পুরপ্রধানের দাবি, গুজব রুখতেই তাঁর এই পদক্ষেপ।
তাঁর কথায়, ‘‘মিথ্যা প্রচার চলছে যে, কোন্নগরের সমস্ত পুজো কমিটিই নাকি অনুদান প্রত্যাখ্যান করছে। তার বিরুদ্ধে আমাদের জমায়েত। যাঁরা আসবেন, তাঁরা অনুদান পাবেন। যাঁরা আসবেন না, তাঁরাও পাবেন। কিন্তু কারা সরকারি অনুদান বয়কট করছেন না, সেটাই আমরা দেখে নিতে চাইছি।’’ বিজেপির অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্বপনের ব্যাখ্যা, ‘‘আমি চেয়ারম্যান বা দলের লোক হিসাবে জমায়েতের আহ্বান করিনি। দুর্গোৎসব বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব। তা নিয়ে সমস্ত মিথ্যা প্রচার ঠেকাতেই উদ্যোগ নিয়েছি।’’