সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের চাকদহ নাট্যজনের নাটক বাতিলের অভিযোগ। নভেম্বরেই শুরুতেই রাজনৈতিক কারণে চাকদহ নাট্যজনের নাট্য উৎসবের বুকিং বাতিল করার অভিযোগ উঠেছিল কল্যাণী পুরসভার বিরুদ্ধে। এবার কাঠগড়ায় নবদ্বীপ পুরসভা। অভিযোগ, উৎপল দত্ত রচিত, দেবেশ চট্টোপাধ্যায় নির্দেশিত এবং চাকদহ নাট্যজন প্রযোজিত ‘ব্যারিকেড’ নাটক বাতিল করা হয়েছে। যার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেবেশ চট্টোপাধ্যায় ও কৌশিক সেন।
সরকারি কর্মচারীদের প্রাপ্য মহার্ঘ ভাতার দাবিতে আন্দোলন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চর। তারই অবস্থান মঞ্চে ‘জগাখিচুড়ি’ নাটকটি পরিবেশন করেছিল চাকদহ নাট্যজন। অভিযোগ, এই নাটক করার অপরাধেই চাকদহ নাট্যজনের নাট্যোৎসবের বুকিং বাতিল করে কল্যাণী পুরসভা। বিষয়টি নিয়ে সেই সময় তীব্র ধিক্কার জানানো হয় সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের পক্ষ থেকে। বিশিষ্টরাও প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছিলেন। যদিও কল্যাণী পুরসভার উপপ্রধান বলরাম মাঝি বক্তব্য ছিল, “নাট্যকর্মীদের জন্যই গড়ে উঠেছে ঋত্বিক সদন। কোনও নাট্যদল বা নাটকের প্রতি বৈরিতা নেই। শুধুমাত্র পুরসভার বিশেষ সরকারি অনুষ্ঠানের জন্যই চাকদহ নাট্যজনপর বুকিং বাতিল করা হয়েছে। এর পিছনে কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই।”
[আরও পড়ুন: ভালোবাসার ভাইফোঁটা, বিশেষভাবে সক্ষম ভাই-দাদাদের ফোঁটা দিলেন কোয়েল]
এবার চাকদহ নাট্যজনের কর্ণধার সুমন পাল ফেসবুকে ‘ব্যারিকেড’ নাটক বাতিলের খবর জানিয়ে লেখেন, “আবার বন্ধ করে দেওয়া হল উৎপল দত্ত রচিত, দেবেশ চট্টোপাধ্যায় নির্দেশিত, চাকদহ নাট্যজন প্রযোজিত ‘ব্যারিকেড’-এর অভিনয়। আগামী ২৩ শে জানুয়ারি ‘ব্যারিকেড’-এর অভিনয় হওয়ার কথা ছিল নবদ্বীপ রবীন্দ্রভবনে, নবদ্বীপ সায়কের আমন্ত্রণে। নবদ্বীপ পৌরসভা আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে উদ্যোক্তাদের জানিয়ে দেয়, যে ‘ব্যারিকেড’ নাটকটি করা যাবে না। এও জানানো হয়, অন্য নাটক হতে পারে কিন্তু ‘ব্যারিকেড’ করা যাবে না। অথচ, উৎপল দত্তের আরও বেশ কয়েকটি নাটক এই বঙ্গে নিয়মিত অভিনয় হচ্ছে। তাহলে ‘ব্যারিকেড’ বন্ধ করার কারণ কি রাজনৈতিক না অন্য কিছু? আমরা বুঝতে পারছি না।”
এর পরই আবার তিনি লেখেন, “এই প্রশ্ন রাখছি আমাদের থিয়েটার প্রেমী মানুষদের কাছে। আমাদের মতো একটি দলের কাছে এই আঘাত আমাদের চলার পথে এক ভয়ংকর পরিণতি ডেকে নিয়ে আসছে। কিন্তু আমরা কোনভাবেই ‘ব্যারিকেড’-এর মতো নাটক বন্ধ করতে রাজি নই। আমাদের অন্যান্য প্রযোজনার পাশাপাশি ব্যারিকেড নাটকটির অভিনয় করে যেতে চাই। আমাদের বাংলা থিয়েটারের যে প্রতিবাদী সত্ত্বার জন্ম দিয়েছিল এইসব থিয়েটার তাকে বন্ধ করা উচিত? চাকদহ নাট্যজনের পক্ষ থেকে আপামর মানুষের কাছে আমাদের এই প্রশ্ন। আশাকরি আপনারা আমাদের সঠিক পথ দেখিয়ে দেবেন।”
এই খবর শেয়ার করেই দেবেশ চট্টোপাধ্যায় লেখেন, “‘এই বেশ ভালো আছি’ অবস্থানে এ কী কথা শোনালে সুমন? আবার বন্ধ তোমাদের নাটক? প্রথমে আমার নাট্যের উৎসব আর এবার শুধু ‘ব্যারিকেড’। কিছু সময় আগে ‘উইঙ্কল টুইঙ্কল’ নাট্যের একটি পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটিও একইভাবে বন্ধ করা হয়েছিল। অশোকনগর থেকে কল্যাণী হয়ে নবদ্বীপ, চিত্র একই। বাংলার নাট্যজনেরা আশা করি এবারো চুপ থাকবেন। অন্ধ হলে কী প্রলয় বন্ধ থাকে?” সংবাদমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে কৌশিক সেন বলেন, “নবদ্বীপ পুরসভাও যেটা করল সেটা পরিষ্কারভাবে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এটা কোনও কাকতালীয় ঘটনা নয়। ব্যারিকেড নাটকটাও এক্ষেত্রে কোনও ফ্যাক্টর নয়। ফ্যাক্টর হচ্ছে চাকদহ নাট্যজন যে সংগঠনটি এ নাটকটা করছে তাঁদেরকে আটকানোটাই উদ্দেশ্য।”
[আরও পড়ুন: সলমনের কথাই সার, ফের ‘টাইগার ৩’ চলাকালীন প্রেক্ষাগৃহে তাণ্ডব, ছাড়াল শালীনতার মাত্রা]