shono
Advertisement

কোহলিদের তাসের ঘর উড়িয়ে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ী পাকিস্তান

পাকিস্তান: ৩৩৮/৪ (ফাখার-১১৪, আজহার-৫৯, হাফিজ-৫৭*) ভারত: ১৫৮ (পাণ্ডিয়া-৭৬) ১৮০ রানে জয়ী পাকিস্তান সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কনফিডেন্স আর ওভার কনফিডেন্সের এর মধ্যে ফারাক কী? এ প্রশ্নের উত্তরের জন্য গুগল করার দরকার নেই। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ভারত-পাক ম্যাচের দিকে চোখ রাখলেই হবে। খাতায়-কলমে ধারে ভারে এগিয়ে থাকা ভারতের তথাকথিত ‘স্টার’ ব্যাটিং লাইন আপ যে কী করে পাক […] The post কোহলিদের তাসের ঘর উড়িয়ে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ী পাকিস্তান appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 09:17 PM Jun 18, 2017Updated: 03:58 PM Jun 18, 2017

পাকিস্তান: ৩৩৮/৪ (ফাখার-১১৪, আজহার-৫৯, হাফিজ-৫৭*)

Advertisement

ভারত: ১৫৮ (পাণ্ডিয়া-৭৬)

১৮০ রানে জয়ী পাকিস্তান

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কনফিডেন্স আর ওভার কনফিডেন্সের এর মধ্যে ফারাক কী? এ প্রশ্নের উত্তরের জন্য গুগল করার দরকার নেই। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ভারত-পাক ম্যাচের দিকে চোখ রাখলেই হবে। খাতায়-কলমে ধারে ভারে এগিয়ে থাকা ভারতের তথাকথিত ‘স্টার’ ব্যাটিং লাইন আপ যে কী করে পাক বোলিংয়ের সামনে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়তে পারে, তার কোনও ক্রিকেটীয় যুক্তি মেলে না। মেলে মানসিকতার ফারাক। আত্মবিশ্বাস আর অতি আত্মবিশ্বাসের তফাৎ। পাকিস্তান এই ভারতের কাছে হেরেই শুরু করেছিল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি অভিযান। তারপর ধীরে ধীরে নিজেদের গুছিয়ে নিয়ে ঘরে ট্রফি নিয়ে চলে গেল। এটা নিঃসন্দেহে আত্মবিশ্বাস। আর তাদের প্রায় উড়িয়ে দেওয়া ভারতকে দিনের শেষে ফিরতে হল খালি হাতে। এটাই অতি আত্মবিশ্বাস।

[চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০১৭ ফাইনাল: ১৮০ রানে হার ভারতের]

কিন্তু হলটা কী কোহলিদের? ফাখার-হাফিজরা যখন পাকিস্তানকে রানের পাহাড়ে পৌঁছে দিচ্ছেন তখনও কমেন্ট্রি বক্সে বসে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বলছেন, ভারতের রান তাড়া করার ক্ষমতার উপর যথেষ্ট ভরসা আছে তাঁর। একে এই ইংল্যান্ডের মাটিতেই আছে ন্যাটওয়েস্ট ট্রফির জ্বলজ্বলে স্মৃতি। অন্যদিকে ভারতের ব্যাটিং লাইন আপে কোহলি, রোহিত, ধোনি, যুবরাজ কে নেই! অতএব আশা করা অন্যায় নয়। শুধু সৌরভ নন, আপামর দেশবাসীও তাই-ই আশা করেছিলেন। কিন্তু সম্ভবত অতি আত্মবিশ্বাসই কাল হল কোহলিদের। পাক পেসারদের বোলিং চিরকালই সৌন্দর্যের। আর সে বোলিংকে যখন দাপুটে ব্যাটসম্যানরা শাসন করে, তখনই ক্রিকেট কাব্যে দেখা মেলে রোম্যান্টিকতার। কিন্তু শেক্সপিয়রের দেশে ট্র্যাজেডিকে ভুলে গেলে চলবে কী করে! অন্তত এ ম্যাচের পর কোহলিরা তা কখনওই ভুলতে পারবেন না। কোহলি থেকে ধোনি যেরকম হঠকারীর মতো উইকেট ছুড়ে দিয়ে এলেন, তা বোধহয় দুঃস্পপ্নেও তাঁরা কল্পনা করতে পারেননি। মহম্মদ আমের নামের এক দমকা হাওয়ায় তছনছ হয়ে গেল ভারতের সমস্ত প্রতিরোধ।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির গোড়াতেই কোচ নিয়ে মতবিরোধ। কেন এই সময়েই? কেন আইপিএল-এর সময় তা হল না? প্রশ্ন তুলেছিলেন রাম গুহ। কিন্তু কে শোনে কার কথা! মওকা মওকা-য় বুঁদ ক্রিকেটপ্রেমীদের ওসব নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় নেই। কিন্তু মূল্য দিতে হল কোহলিদের। শ্রীলঙ্কা ম্যাচই ছিল অশনি সংকেত। ফাইনাল বোঝাল সে সংকেত চিনতে ব্যর্থ হয়েছেন ভারতীয়রা। বাংলাদেশকে উড়িয়ে দেওয়ার পর এতটাই আত্মবিশ্বাস জমা হয়েছিল আস্তিনে যে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বোধহয় সঠিক হোমওয়ার্কও করেননি তাঁরা। এই আমেরের বলই তো প্রথম ম্যাচে প্রায় দেখতেই পাননি রোহিত শর্মা। এদিনও পেলেন না। তাঁর মতো বড় ব্যাটসম্যানের কাছে কি এটাই প্রত্যাশিত ছিল? কোহলির মতো তুখোড় ব্যাটসম্যান একই ভুল দু’বার করলেন। ধুঁকতে থাকা ভারতের হাল ধরার কথা যাঁদের, সেই ধোনি নেহাত পাড়া ক্রিকেটের মতো লোফা ক্যাচ তুলে দিলেন! আর যুবরাজের প্যাড এগিয়ে এল সাদাব হোসেনের লেগ স্পিনের সামনে! জাদেজা-পাণ্ডিয়ার যে ভুল বোঝাবুঝি হল তা সচরাচর পাড়া ক্রিকেটেই হয়ে থাকে। ভারতীয়দের একসময় মনেই হচ্ছিল না, এ আইসিসি-র ম্যাচ না কোনও পাড়া টুর্নামেন্টের খেলা চলছে! এসবই চাপের মুখে নতিস্বীকার? এতটুকু স্নায়ুর জোর নেই ভারতের? নাকি গণ্ডগোল অন্য কোথাও? অন্য কোনও চাপের ছায়া এসে পড়ল কি ফাইনালে? রাম গুহর প্রশ্নে ক্রিকেটমোদি আমজনতা কান না দিলেও, ক্রিকেটের স্বার্থে অন্তত ক্রিকেটারদের মন দেওয়া উচিত তাতে। এদিনের পর তা জোর দিয়েই বলা যায়।

এদিন পাক ক্রিকেটাররা ভারতীয়দের নিয়ে যা করলেন, তাকে এক কথায় বেইজ্জতিই বলে। কাশ্মীর থেকে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক- দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রায় তলানিতে। এ পরিস্থিতিতে এরকম মহারণ প্রত্যাশিতভাবেই ক্রিকেট থেকে অন্য মাহাত্ম্যে উত্তীর্ণ হয়েছিল। জাতীয়তাবাদের সংযোগ কখন যে ম্যাচের সঙ্গে স্থাপিত হয়েছিল, তা কেউ খেয়ালই করেননি। কিন্তু হয়ে যে ছিল, তা সোশ্যাল মিডিয়ায় চোখ রাখলেই বোঝা যায়। অথচ যে হারে জাতীয়তাবাদের ফাঁপা বেলুন ফুলেছিল, সে হারে নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি কোহলিরা। প্রশ্ন উঠতে পারে, একদিনের ব্যর্থতায় কি এত প্রশ্ন তোলা সঙ্গত? বরং উলটে বলতে হয়, আপাত কিছু সাফল্য দিয়ে প্রশ্নগুলো ঢাকা পড়েছিল। আজ এই ভারতীয় ক্রিকেটের অসহায় আত্মসমর্পণের দিনে সেগুলোই দাঁত-নখ বের করে সামনে চলে এল। না, যেভাবে পাকিস্তানের সামনে মাথা নত করলেন কোহলিরা, তার দায় এড়াতে পারেন না কোহলিরা। ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য এ যে ভাল বিজ্ঞাপন নয় তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

[জাপানি শাটলারকে হারিয়ে ইন্দোনেশিয়া ওপেন চ্যাম্পিয়ন শ্রীকান্ত]

ক্রিকেট অনিশ্চয়তার খেলা নিঃসন্দেহে। কিন্তু দক্ষতা কখনও সেই অনিশ্চয়তাকে কাটিয়ে পরিস্থিতি নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিতে পারে। এদিন পাক ক্রিকেটাররা তারই নমুনা দেখালেন। ব্যাটে-বলে ভারতকে সব দিক থেকেই টেক্কা দিলেন তাঁরা। নাহ, ভারত এ ম্যাচ হারেনি। পাকিস্তান তাঁদের সর্ব অর্থেই হারিয়েছে। ফাখার, আমেররা সোশ্যাল মিডিয়ায় চোখ রাখেন কিনা জানা নেই, তবে এদিন তাঁদের দক্ষতা যেন প্রতি মুহূর্তে জানিয়ে দিল, ক্রিকেট মাঠে কোনও সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হয় না। পাকিস্তানের জার্সি গায়ে তোলা মানেই কেউ জঙ্গি হয়ে যায় না। যা হয় তা গোটা বিশ্ব দেখল। হয়তো মনেও রাখবে। শুধু ভারতীয়রাই চাইবে, এ স্মৃতি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যেন ভুলে যাওয়া যায়।

The post কোহলিদের তাসের ঘর উড়িয়ে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ী পাকিস্তান appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement