অর্ক দে, খড়গপুর: আইআইটি খড়গপুরে এবার ভরতি না হয়েও পেতে পারেন পড়ার সুযোগ! এমনই অভিনব ঘোষণা করলেন ডিরেক্টর। ব্যাপারটা কী?
আসলে ছাত্রছাত্রীদের কাছে স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান আইআইটি খড়গপুর। যেখানে ভরতি হতে গেলে দিতে হয় কঠিন পরীক্ষা। জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার টপাররাই একমাত্র সেই সুযোগ করে নিতে পারেন। আর একবার ভরতি হলেই খুলে যায় স্বপ্নের দুয়ার। জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার চাবিকাঠি তখন হাতের মুঠোয়। যেমনটা হয়েছে এবারও। চলতি ডিসেম্বরে ১৬০০-র বেশি পড়ুয়াকে চাকরি দিয়েছে নামী-দামি সব কোম্পানি। ৪৫ জন সুযোগ পেয়েছেন বিদেশে চাকরি করার। তার মধ্যে ১২ জনের বেতন কাঠামো বছরে এক থেকে ২ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা! সেই আইআইটি খড়গপুরের (Kharagpur IIT) এবার নতুন উদ্যোগ, এই প্রতিষ্ঠানে ভরতি না হয়েও দেশের কোনও ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া পড়তে পারবেন এই ক্যাম্পাসে।
সম্প্রতি এমনই ঘোষণা করেছেন প্রতিষ্ঠানের ডিরেক্টর অধ্যাপক বীরেন্দ্র কুমার তিওয়ারি। দেশ-বিদেশের প্রাক্তনীদের কাছে তৃতীয়বারের জন্য বাৎসরিক রিপোর্ট কার্ড পেশ করতে গিয়ে বিগত বছরগুলির কার্যকলাপের পাশাপাশি আগামী বছরগুলির জন্য আইআইটি খড়গপুরের কিছু পরিকল্পনা পেশ করেন অধ্যাপক বীরেন্দ্র কুমার তিওয়ারি। সেখানেই তিনি এই পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আগামী বছর থেকেই আমরা একটা ব্যবস্থা চালু করতে চলেছি যেখানে বাইরের ইউনিভার্সিটির কোনও পড়ুয়া চাইলে আমাদের প্রতিষ্ঠানে এসে একটি সেমিস্টারের (৬ মাস) জন্য পাঠ নিতে পারবেন। তাঁরা নিজেদের প্রতিষ্ঠানে যে বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করছেন, সেই বিষয় যাতে এখানেও পড়তে পারেন, আমরা সেই সুযোগ করে দেব।”
[আরও পড়ুন: ‘৫টার মধ্যে ৪টে প্রকল্পই আমার’, সদ্য মাতৃহারা মোদিকে সান্ত্বনা জানিয়েও বার্তা মমতার]
পাশাপাশি তিনি এও জানান, আইআইটি খড়গপুরেরও কোনও পড়ুয়া চাইলে একটি সেমিস্টারের জন্য অন্য কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে পাঠ নিতে পারবেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই আদান প্রদানের ফলে আইআইটি খড়গপুর যেমন তাদের পঠনপাঠনের সংস্কৃতি দেশের অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে প্রদান করতে পারবে, তেমন দেশের নামী প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে আইআইটি খড়গপুর নিজেও সমৃদ্ধ হতে পারবে।
এছাড়া আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানান অধ্যাপক তিওয়ারি। বলেন, আইআইটির পড়ুয়ারা যাতে শুধুই চাকরিমুখী না হয়ে নিজেরা অন্যের জন্য চাকরি তৈরি করতে পারেন, তাঁরা যাতে শিল্পমুখী হয়ে উঠতে পারেন, সেদিকটিও ভাবা হচ্ছে। তাই দেশ-বিদেশের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলিতে তাঁরা তাঁদের পাঠ চলাকালীন ৬ থেকে ৮ মাস অবধি শিক্ষার্থী হিসেবে থাকতে পারেন, যা তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর বা গ্রেডের সংগে যুক্ত হবে। তাঁর কথায়, “আমরা আমাদের প্রত্যেকটি ডিপার্টমেন্টকে এভাবেই তৈরি করতে চাইছি যাতে প্রত্যেকেই ছাত্রছাত্রীদের উদ্যোগপতি হতে উদ্বুদ্ধ করে। আমরা আমাদের পড়ুয়াদের দুনিয়ার মুখোমুখি দাঁড়নোর জন্য প্রস্তুত করছি।”