shono
Advertisement

Breaking News

Purulia

জিনাতের টানেই পুরুলিয়ার সীমানায় রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার! এলাকাজুড়ে অসংখ্য পদচিহ্ন

পালামৌ থেকে এসেছে বাঘটি, অনুমান ঝাড়খণ্ড বনবিভাগের।
Published By: Sucheta SenguptaPosted: 11:14 PM Jan 03, 2025Updated: 11:50 PM Jan 03, 2025

সুমিত বিশ্বাস ও অমিত সিং দেও, পুরুলিয়া ও মানবাজার: দীর্ঘ কয়েকদিনের টানাপোড়েন পর অবশেষে সুস্থ অবস্থায় বাংলা থেকে ওড়িশার সিমলিপালে নিজের ডেরায় ফিরে গিয়েছে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগ্রেস জিনাত। কিন্তু তার ফেলে আসা পথে এবার ফের আনাগোনা শুরু হয়েছে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের! বাঘিনীর পিছু নিতেই তার খোঁজ করছে ওই বাঘ। এমনই অনুমান ঝাড়খণ্ড বনবিভাগের। শুক্রবার বাঘের একের পর এক পায়ের ছাপ থেকে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে, পুরুলিয়া লাগোয়া ঝাড়খণ্ডে গবাদি পশুর উপর হামলা চালানো ওই বন্যপ্রাণী আর কেউ নয়, রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারই।

Advertisement

প্রথমে লেপার্ড বা চিতাবাঘ কিংবা বাঘিনীর তত্ত্ব সামনে এলেও শুক্রবার কার্যত তা খারিজ করেছে ঝাড়খণ্ড বনবিভাগ। ঝাড়খণ্ডের সরাইকেলা-খরসোওয়া বনবিভাগের চান্ডিল রেঞ্জ ও খুঁটি বনবিভাগের তামাড় রেঞ্জ সীমানায় প্রায় ১০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধ জুড়ে যে বন্যপ্রাণীর পায়ের ছাপ মিলেছে, তা বাংলার বাঘ, রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। ফলে সরাইকেলা-খরসোওয়ার চান্ডিল বনাঞ্চলে জারি হয়েছে রেড অ্যালার্ট। এদিকে, পুরুলিয়া বনবিভাগের ডিএফও অঞ্জন গুহ এদিন ঝাড়খণ্ড ছুঁয়ে থাকা বলরামপুর, মাঠা, বাঘমুন্ডি বনাঞ্চলে গিয়ে সেখানকার রেঞ্জ আধিকারিক ও বনকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। একইভাবে কোটশিলা ও ঝালদা রেঞ্জ আধিকারিকদের সঙ্গেও ভিডিও কনফারেন্সে বৈঠক করে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন ডিএফও। সেইসঙ্গে এদিন থেকেই শিফট অনুযায়ী বনকর্মীদের ২৪ ঘন্টা ডিউটি চালু হয় এই রেঞ্জগুলিতে।

নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে বাঘের পদচিহ্ন সংগ্রহ করছেন ঝাড়খণ্ডের বন কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র।

এখন পর্যটনের ভরা মরশুম। তার মধ্যেই বাঘ-আতঙ্ক। তাই পর্যটকরা যাতে ঘন জঙ্গলে যেতে না পারেন সেই জন্য অযোধ্যা পাহাড়তলির ওই রেঞ্জগুলিতে শনিবার থেকে টহল চলবে। একইভাবে অযোধ্যা পাহাড় ও পাহাড়তলির সরকারি, বেসরকারি সমস্ত পর্যটক আবাস, কটেজ, রিসোর্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, পর্যটকরা যাতে বনদপ্তরের নিয়ম-নীতি মেনে চলেন, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। আসলে ওড়িশার সিমলিপালের বাঘিনী জিনাত যেভাবে তিন রাজ্যের বনবিভাগকে নাজেহাল করে, তার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে তাই আগেভাগেই সতর্ক পুরুলিয়া বনবিভাগ।

রাতে টহল বনকর্মীদের। পুরুলিয়ার সীমানা ঝাড়খন্ডের চান্ডিল বনাঞ্চলে। নিজস্ব চিত্র।

চান্ডিল রেঞ্জ আধিকারিক শশীরঞ্জন প্রকাশ বলেন, "শুক্রবার আমরা চান্ডিল ও তামাড় রেঞ্জ এলাকার সীমানায় ১০ কিমি ব্যাসার্ধ জুড়ে যে পায়ের ছাপ দেখেছি তার থেকে স্পষ্ট এটি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। বাঘের ওই পায়ের ছাপগুলি তামাড় রেঞ্জ দিক থেকে আসা। ফলে আমাদের অনুমান, বাঘটি চান্ডিল বনাঞ্চলের জঙ্গলেই রয়েছে। ২৪ ঘণ্টা নজরদারি চলছে। এই এলাকার মানুষজনদেরকে জঙ্গলে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।" ঝাড়খণ্ডের ওই দুই রেঞ্জের সীমানা এলাকা ছাড়াও চান্ডিল ছুঁয়ে থাকা সুবর্ণরেখা নদীর চরে জল পান করতে আসার ও ফিরে যাওয়ার পদচিহ্ন পেয়েছে ঝাড়খণ্ড বন বিভাগ। এছাড়া বালিডি পাহাড়ে চড়ার পায়ের ছাপও মিলেছে। 

চান্ডিল বনাঞ্চল জুড়ে বাঘের ফুট প্রিন্টগুলি একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে সংগ্রহ করছেন ঝাড়খণ্ড বনবিভাগের কর্মীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, পায়ের ছাপের পরিমাপ ১০ সেন্টিমিটারের বেশি। এর থেকেই বোঝা যায় ওই বন্যপ্রাণী রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। এছাড়া মৃত গবাদি পশুর গলায় দাঁতের কামড়ে যে ক্ষত রয়েছে তাও বাঘেরই। ওই পদচিহ্ন থেকে আরও একটি বিষয় স্পষ্ট, একরাতে ওই বাঘ প্রায় ১২ থেকে ১৫ কিমি হাঁটছে। রয়্যাল বেঙ্গলের ওই টেরিটরি থেকে সড়কপথে পুরুলিয়ার বলরামপুরের দাঁতিয়ার সীমানা ২৪ কিমি। আকাশপথে দূরত্ব মাত্র ১৫ কিলোমিটার। ফলে আতঙ্ক বাড়ছে ঝাড়খন্ড ছুঁয়ে থাকা পুরুলিয়ার বলরামপুর, বাঘমুন্ডির গ্রামগুলিতে।

সিমলিপালের বাঘিনী জিনাত। ফাইল ছবি।


ঝাড়খণ্ডের ব্যাঘ্র বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বাঘ পালামৌ থেকে আসতে পারে। যেহেতু তিন বছরের সদ্য পূর্ণ বয়স্ক সুন্দরী জিনাত এই এলাকা দিয়ে ঘুরে গিয়েছে। তাই সেই টানেই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের আগমন। জিনাতের ফেলে আসা পথে তাকে না পেয়েই চান্ডিল বনাঞ্চল কার্যত চষে বেড়াচ্ছে ওই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। এমনই অনুমান ঝাড়খন্ড বনবিভাগের।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • বাঘিনী জিনাতের টানে এবার পালামৌ থেকে পুরুলিয়া সীমানায় রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার?
  • ১০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধ জুড়ে পায়ের ছাপ পরীক্ষা করে নিশ্চিত বিশেষজ্ঞরা।
Advertisement