সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজে অনশনে বসেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। এবার তাঁদের সঙ্গে মতবিরোধ তৈরি হল একদল পড়ুয়ার। সোমবার মেডিক্যাল কলেজের প্রশাসনিক ভবনের গেটে তালা মেরে কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে থ্রেট কালচার ও দুর্নীতির অভিযোগে তোলেন কয়েকজন ছাত্র। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, ওই ছাত্রদের বিরুদ্ধেই দুর্নীতি ও থ্রেট কালচারের অভিযোগে তদন্ত হয়েছে। এই ঘটনায় রীতিমত ক্ষুব্ধ সেখানকার অনশনকারী চিকিৎসকরা। তাঁদের দাবি, অনশন আন্দোলন ভাঙতেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এসব করা হচ্ছে। তাঁরা প্রশাসনিক ভবনের গেটে তালা মেরে বিক্ষোভ দেখানোকে সমর্থন করেন না।
এদিন একদল পড়ুয়া আচমকাই মেডিক্যাল কলেজের প্রশাসনিক ভবনের গেটে তালা লাগিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। কলেজ কর্তৃপক্ষের দুর্নীতি ও থ্রেট কালচারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ জানান তাঁরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান ডায়মন্ড হারবারের মহকুমা শাসক অঞ্জন ঘোষ, ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জোনাল) মিতুন কুমার দে-সহ অন্যান্য পদস্থ প্রশাসনিক আধিকারিকরা। কথা বলেন বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে। আলোচনার পর দুপক্ষেরই অর্থাৎ কলেজ কর্তৃপক্ষ ও ছাত্রদের অভিযোগের তদন্ত ও তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। এর পরই বিক্ষোভকারীরা প্রশাসনিক গেটের তালা খুলে দেওয়া দেন। উঠে যায় বিক্ষোভ ও আন্দোলন।
এনিয়ে ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা: উৎপল দাঁ জানান, প্রশাসনিক ভবনের গেটে তালা মেরে যে বিক্ষোভ হয় তা সম্পূর্ণ বেআইনি। এটা কোনও বিক্ষোভই ছিল না। যাঁরা তালা মেরেছিলেন তাঁদের ৮ জনের বিরুদ্ধেই তদন্ত কমিটি গড়ে দুর্নীতি ও থ্রেট কালচারের অভিযোগে তদন্ত হয়। তদন্তের পর কলেজ কাউন্সিলে বৈঠক করে তাঁদের হস্টেল ছাড়ার নির্দেশও দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, এর আগে ওই ৮ জন ছাত্রের বিরুদ্ধেই কলেজ কর্তৃপক্ষ থ্রেট কালচার, প্রশ্ন ফাঁস এবং আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত করেছিল। তার পর গত ৩ অক্টোবর ওই ছাত্রদের কলেজ হস্টেল ছাড়ার নির্দেশিকা দেওয়া হয়। সোমবারই হস্টেল ছাড়ার চূড়ান্ত সময়সীমা শেষ হয়।
প্রশাসন মনে করছে, সেই নির্দেশিকা নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের উপর পালটা চাপ সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা। এদিকে, ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজে অনশনরত আন্দোলনকারীরা প্রশাসনিক ভবনে তালা মেরে বিক্ষোভের বিরোধিতা করেন। ক্ষোভ উগরে জুনিয়র চিকিৎসকরা বলেন, প্রশাসনিক ভবনের গেটে তালা মেরে বিক্ষোভের এই ঘটনাকে তাঁরা সমর্থন করেন না। এর সঙ্গে তাঁরা যুক্ত নন। আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে তাঁদের অনশন আন্দোলন ভাঙতেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এসব করা হচ্ছে। এই আন্দোলনের বিরোধী তাঁরা। দুর্নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ায় নিজেদের বাঁচাতেই তালা মেরে এদিন একদল এই বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বলে মনে করছেন অনশনরত চিকিৎসকরা।