নন্দন দত্ত, সিউড়ি: কী পেলাম! বুধবার বীরভূমের তৃণমূল সভাপতির চোখে চোখ রেখে একথাই বলেছিলেন বুথ সভাপতি গনেশ রায়। যার জেরে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় সভায়। মেজাজ হারান অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mandal)। পদ বুথ সভাপতিকে পদ থেকে সরানোর নিদান দেন তিনি। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা।
বুধবার সকালে সিউড়ি (Suri) ২ নম্বর ব্লক থেকে সভা শুরু করেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। প্রথম ডাকা হয় দমদমা অঞ্চলের বুথ কর্মীদের। মাজিগ্রাম এলাকার বুথ সভাপতি গণেশ রায় উন্নয়ন প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বলেন, "জেলা সভাপতির প্রতিশ্রুতি সত্বেও মাজিগ্রাম থেকে হাতোড়া পর্যন্ত রাস্তা হয়নি। সভায় আসার পথে গ্রামবাসীরা আমাকে জিজ্ঞাসা করল রাস্তায় কি মাছ চাষ করব?" উত্তরে অনুব্রত মণ্ডল জানতে চান, ৩৪ বছরে রাস্তা কেমন ছিল? পালটা উত্তর আসে, "এর থেকে ভাল। অন্তত সাইকেল নিয়ে চলার উপযুক্ত ছিল।" এরপর অনুব্রত বলেন, "আপনাদের আর কী দেব। যতই দিই আপনাদের পেট ভরবে না।" তখনই গর্জে ওঠেন বুথ সভাপতি। পালটা প্রশ্ন ছুড়ে দেন, "কেন? কী পেলাম?" অনুব্রত বলেন, ২ টাকা কেজি চাল, যুবশ্রী, কন্যাশ্রী, বৃদ্ধ ভাতা পাননি? বুথ সভাপতি জানান, পেয়েছি। কিন্তু মানুষের প্রাথমিক চাহিদা রাস্তা, পানীয় জল-যা আমরা পাইনি। এতেই মেজাজ হারান অনুব্রত। বলেন, আপনি এলাকায় ভোট করবেন কী করে। ওনাকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার নিদানও দেন তৃণমূল সভাপতি।
[আরও পড়ুন: বাংলার JEE-NEET পরীক্ষার্থীদের জন্য ট্রেন চালানোর আবেদন করা হয়নি, দাবি রেলের]
এরপরই সভা ছেড়ে বেড়িয়ে যান গনেশবাবু। সভাস্থলের বাইরে স্লোগান দিতে থাকে তাঁর অনুগামীরা। অভিযোগ, সেই সময় অনুব্রত অনুগামীরা বাইরে গিয়ে গনেশবাবুকে হেনস্থা করে। যার জেরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে অঞ্চল সভাপতি বকুল হককে অনুব্রত মণ্ডল বলেন, কোথায় শৌচাগারের রিং হয়নি সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট পাঠাও। অঞ্চলের পর্যবেক্ষক দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়কে নির্দেশ দেন এলাকায় দলের মধ্যে কোনও বিশৃঙ্খলা দেখলে মুখবন্ধ খামে গোপন রিপোর্ট সরাসরি ব্লক সভাপতি নুরুল ইসলামকে ও জেলায় জানানোর। একইসঙ্গে বলেন, যে রাস্তা নিয়ে এত বিতর্ক ইতিমধ্যেই পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ তার সাড়ে চার কিলোমিটারের রাস্তার জন্য ৫ কোটি ৭২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে। ব্লক সভাপতি সে খবর জানেন। সাংগঠনিক সভা শুরুর প্রথম দিনে এমন বিতর্কের পর বাকি সভা কেমন হবে তা নিয়ে চিন্তায় তৃণমূল।