গৌতম ব্রহ্ম ও অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়: কাশ্মীদে জঙ্গিদের গুলিতে শহিদ বাংলার ব্রিজেশ থাপা। দুঃখপ্রকাশ করে এক্স হ্যান্ডেলে বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস।
জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে যাওয়ার আগে শেষবার বাড়িতে ফোন করেছিলেন। বাবা-মা কে জানিয়ে গিয়েছিলেন এই লড়াই শেষ করে চলতি মাসেই বাড়ি ফিরবেন। তার পর বাবা-মাকে নিয়ে মণিপুর, মেঘালয় ঘুরতে যাবেন ক্যাপ্টেন ব্রিজেশ থাপা। কিন্তু জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে সোমবার রাতেই কাশ্মীরে প্রাণ হারান তিনি। মাত্র ২৭ বছরে। কাশ্মীরের ডোডায় জঙ্গিদের গুলিতে শহিদ হন তিনি। এদিকে এই খবর পেয়েই কান্নায় ভেঙে পড়ে তার গোটা পরিবার। যদিও দেশের জন্য প্রাণ দেওয়ায় গর্বিত বাবা অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল ভুবনেশ থাপা। মঙ্গলবার রাতেই তাঁর শবদেহ বাগডোগরা বিমানবন্দরে বায়ুসেনার কাছে পৌঁছে যাবে। বুধবার সকালে দেহ নিয়ে দার্জিলিংয়ের লেবংয়ের বড়াগিঙ্গের এলাকায় নিয়ে যাওয়া হবে। দার্জিলিংয়ের পাশাপাশি শিলিগুড়ির শাস্ত্রীনগরেও বাড়ি রয়েছে থাপা পরিবারের। তবে শেষকৃত্য হবে লেবং।
[আরও পড়ুন: আর অনুরোধ নয়, রাজ্যপালের জবাব না পেলে নতুন বিধায়কদের শপথ পড়াবেন স্পিকারই]
পরিবারের সদস্যরা জানান, ব্রিজেশের জন্ম লেবংয়ে। প্রাথমিক পড়াশুনো দার্জিলিংয়ে। বাবা সেনায় ছিলেন সেকারণে পড়াশুনো রাজ্যের বাইরেই। মুম্বইতে নিজের উচ্চশিক্ষা শেষ করেন। সেখানকার কলেজ থেকে বি'টেক শেষ করে কম্বাইন্ড ডিফেন্স সার্ভিস পরীক্ষায় বসেন। ২০১৮ সালে তিনি ওই ডিফেন্স সার্ভিসের শর্ট সার্ভিস কমিশন পরীক্ষায় পাস করেন ও ২০১৯ সালে সেনাতে যোগ দেন। তিনি দু' বছর ১০ রাষ্ট্রীয় রাইফেলসে মোতায়েন ছিলেন। এর পর তাঁকে এক্সট্রা রেজিমেন্টাল ডিউটির জন্য ভারতীয় সেনার বিশেষ বিভাগ ১৪৫ আর্মি এয়ার ডিফেন্সের অধীন জম্মু কাশ্মীরের ডোডা সেনা ছাউনিতে বদলি করা হয়। সেখানে ব্রিজেশ থাপা কোম্পানি কমান্ডার ছিলেন। এই কোম্পানি নিয়েই তিনি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে যান। কিন্তু ওই লড়াইতে ৪জন সেনা প্রাণ হারান। তার মধ্যে ব্রিজেশ থাপাও রয়েছে।
বাবা অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল ভুবনেশ থাপা বলেন, "আমাকে দেখে ছোট থেকেই সেনায় যোগ দিতে চাইত ব্রিজেশ। বি টেক পাশ করার পর ওকে বলেছিলাম সেনা না হয়ে অন্য চাকরি করতে। কিন্তু কোনওভাবেই রাজি হয়নি। তবে দেশের জন্য শহীদ হওয়ায় আমরা অবশ্যই গর্বিত।" মা নিলীমা থাপা বলেন, "আমার শ্বশুর, স্বামী সকলেই সেনায় ছিল। তাই ছেলে যোগ দেওয়ায় আমাদের আপত্তি ছিল না। তবে যাওয়ার আগে ফোন করে বলেছিল এমাসেই ফিরবে। কিন্তু আর ফেরা হলোনা ওর। তবুও দেশের জন্য প্রাণ দেওয়ায় আমরা ওর জন্য গর্বিত। নিজের কাজটা সঠিকভাবে পালন করেছে আমার ব্রিজেশ।"