অতুলচন্দ্র নাগ, ডোমকল: সিনেমায় পলাশ ও সফিকুল হরিহর আত্মা। যাকে কিনা বলে ‘দোস্ত’। স্কুলে যাওয়া, টিফিন ভাগ করে খাওয়া, খেলাধুলা থেকে দুষ্টুমি ওদের সবকিছুই একসঙ্গে। সিনেমার মতোই বাস্তবেও বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা মুর্শিদাবাদের ডোমকলের ভগীরথপুর গ্রামের এই দুই বালক হরিহর আত্মা। পাশাপাশি বাড়িতে থাকে। দুই বাড়ির ব্যবধান স্রেফ একখানি বেড়া। সিনেমার মতো আশিক ও আরিফের বাস্তব ‘ইয়ারি জীবন’ মিলেমিশে যেন একাকার।
একই গ্রামের মাটি মেখে বড় হয়ে ওঠা এই দুই কিশোরের জীবনই যেন বড়পর্দার ‘দোস্তজী’ (Dostojee)। শুক্রবার ছবির মুক্তির পর থেকে গোটা ভগীরথপুর গ্রাম আবেগে ভাসছে। গ্রামের দুই কিশোরকে সিনেমা হলের পর্দায় দেখার আনন্দ চেপে রাখতে পারেননি অনেকেই। ভগীরথপুরের মানুষজন, রাস্তাঘাট, দোকান সবই দেখা গিয়েছে সিনেমায়।
[আরও পড়ুন: কাঁচাপাকা দাড়ি, পাঠানি সুট, দুই প্রাক্তন স্ত্রীকে নিয়ে মেয়ে ইরার বাগদানে হাজির আমির খান!]
গ্রামবাসী লালন শেখ বলেন, “আশিক ও আরিফ ভগীরথপুরের গর্ব। এই গ্রামে সিনেমার যখন শুটিং চলছিল, তখন অনেকেই বলছিল, নায়ক-নায়িকা ছাড়া কি আর সিনেমা হয়! কিন্তু তারপর যখন এত পুরস্কার পেতে শুরু করল, তখন সকলে চুপ।” এলাকার বাসিন্দা ডোমকল পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘গ্রামেও যে প্রতিভা লুকিয়ে আছে তার প্রমাণ রেখেছে দুই খুদে অভিনেতা। এতদিন দেখেছি, কলকাতার বিখ্যাত নায়কদের উপর নির্ভর করে সিনেমা হত। সেই জায়গায় পাড়াগ্রামের দুই নাবালকের অভিনীত ছবি আলোড়ন ফেলেছে। এলাকার মানুষ হিসাবে গর্ব বোধ হচ্ছে।”
এমনিতে ডোমকলের জ্যোতি সিনেমা হলে সেভাবে ভিড় হয় না। কিন্তু নিজের এলাকার দুই স্কুল পড়ুয়া যখন সাড়া ফেলে দেওয়া সিনেমার হিরো, তখন এদিন সিনেমা রিলিজে ছিল নজরকাড়া ভিড়। জ্যোতি সিনেমা হলের ম্যানেজার হাবিবুর রহমানের কথায়, “এমনিতেই মানুষ এখন সিনেমা হল-বিমুখ। হাতে গোনা কয়েকজন দর্শককে নিয়ে শো চালাতে হয়।
তবে ‘দোস্তজী’ সিনেমাটি আনায় অন্যান্য দিনের তুলনায় এদিন হলে দর্শক বেশি হয়েছে। বিকেলের ও নাইট শোয়ের টিকিট বিক্রিও বেড়েছে।”
আশিক, আরিফকে গোটা গ্রাম চষে খুঁজে বের করেছিলেন পরিচালক প্রসূন। হাবিবুর জানান, আপাতত এক সপ্তাহের বুকিংয়ে ছবিটি আনা হয়েছে। দর্শক ভাল হলে সময় বাড়ানো হবে। রবিবার চমক আছে। সিনেমাটির প্রচারে ডোমকলের জ্যোতি সিনেমা হলে আসছেন টলিউডের নায়ক প্রসেনজিৎ। সঙ্গে পরিচালক প্রসূন চট্টোপাধ্যায়ও থাকবেন।