অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: সুইমিং পুলে সাঁতার শিখতে গিয়ে জলে ডুবে মৃত্যু হল ৯ বছরের এক শিশুর। শুক্রবার রথের দিন বিকেলে মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে চ্যাটার্জিহাটের ড্রেনেজ ক্যানাল সাইট রোডে ডুমুরজলা স্পোর্টস কমপ্লেক্সের ধারে ‘স্বামীজি সংঘ’ নামে একটি ক্লাবের সুইমিং পুলে। অন্যান্য দিনের মতোই এদিন এখানে সাঁতার শিখছিল বিদিপ্ত ঘোষ (৯) নামে শিশুটি। তখনই ঘটে দুর্ঘটনাটি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সুইমিং পুলে সাঁতার শেখার সময় শিশুটিকে আচমকা উপুড় হয়ে ভাসতে দেখা যায়। যে ক্লাবের তত্বাবধানে ওই প্রশিক্ষণ হয় সেই ক্লাবের কেয়ারটেকার কাম লাইভ সেভিং এক্সর্পাট কৃষ্ণগোপাল সাহা বলেন, ‘‘বাচ্চাটা যখন জলের মধ্যে সাঁতার কাটছিল তখন আমি দেখতে পাই ও কিছুক্ষণ জলের মধ্যে উপুড় হয়ে ভেসে আছে। আমার সন্দেহ হওয়ায় আমি নেমে ওকে ওপরে তুলে প্রাথমিক চিকিৎসা করতে চেষ্টা করি। ওর পেট থেকে প্রচুর জল ও বমি বের হয়। কিন্তু তাতেও কিছু না হওয়ায় আমরা সবাই মিলে ওকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে সন্ধেয় মৃত্যু হয়।’’
[আরও পড়ুন: পড়াশোনার চাপে খাওয়াদাওয়া প্রায় বন্ধ, মায়ের বকাবকির পর আত্মঘাতী মেধাবী কলেজছাত্রী]
শিশুটির পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন চ্যার্টাজিহাটে থানা এলাকার বাসিন্দা ওই শিশুটি অন্যান্য দিনের মত মায়ের সঙ্গে ওই ক্লাবে সাঁতার শিখতে এসেছিল। বিকাল ৫টা থেকে ৬টার ব্যাচে আরও ৩০জনের সঙ্গে সাঁতার শিখতে নেমেছিল। এদিন শিশুটির মা কাঁদতে কাঁদতে জানান, শিশুটি এদিন সাঁতারে আসতে চাইছিল না। বাড়িতে লুকিয়ে পড়ছিল। ওকে প্রায় জোর করেই তিনি সাঁতারে এনেছিলেন। কিন্তু এমন ঘটনা ঘটে যাবে তা স্বপ্নেও ভাবেননি। কাঁদতে কাঁদতে আক্ষেপ করতে থাকেন তিনি।
ওই ক্লাবের সম্পাদক তপন দাস বলেন, ‘‘ঠিক কী করে ঘটনাটি ঘটেছে বুঝতে পারছি না। তবে প্রশিক্ষণের সময় ৭ জন প্রশিক্ষক ছিলেন। আর ওর মা-ও পুলের ওপরে বসে ছেলেকে লক্ষ্য রাখছিলেন। আমার ধারণা ও সাঁতার শেখার সময় হাঁপিয়ে গিয়ে অনেক জল খেয়ে নিয়েছিল তাই এই ঘটনা ঘটেছে।’’ ওই ক্লাব সূত্রে জানা গিয়েছে, বিদীপ্ত ওই ক্লাবে গত তিনমাস ধরে সাঁতার শিখতে আসছিল, সাঁতার মোটামুটি জানে। কিন্তু তারপরেও কী করে এটা ঘটলো? তা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই ঘটনার তদন্তে নেমেছে চ্যাটার্জিহাট থানার পুলিশ।