সুকুমার সরকার, ঢাকা: দশ মাসে ৭৪ ছাত্রীর বাল্যবিবাহ। বাংলাদেশের (Bangladesh) মাদ্রাসার কাণ্ড ঘিরে শোরগোল। করোনা মহামারীর সুযোগ নিয়ে দেশের উত্তরাঞ্চলের পিছিয়ে থাকা জেলা কুড়িগ্রামের চিলমারি উপজেলায় বাল্যবিবাহের হিড়িক লেগেছে বলে খবর।
[আরও পড়ুন: রোহিঙ্গারা আশ্রয় পেলে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নির্যাতিত কেন? প্রশ্ন বাংলাদেশের হিন্দু সংগঠনের]
জানা গিয়েছে, গত ১০ মাসে চিলমারি উপজেলার একটি মাদ্রাসার ৭৪ ছাত্রীই বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছে। অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেও একই উদ্বেগজনক চিত্র পাওয়া গিয়েছে। প্রায় দেড় বছর পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার পর অনেক স্কুলেই পড়ুয়ারা আর ফিরে আসেনি। এমনই কাণ্ড ঘটেছে উত্তরের আরেক জেলা নাটোরের বনলতা সেন খ্যাত বাগাতিপাড়া উপজেলার পেড়াবাড়িয়া দাখিল মাদ্রাসায়। সেখানেও সব ছাত্রীর বিয়ে হয়ে যায়। করোনা কালে স্কুল বন্ধ থাকায় ছাত্রীদের বিয়ের পিঁড়িতে বসানো হয়। ওই মাদ্রাসার প্রধান জানান, করোনা মহামারীতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সব পরীক্ষার্থীদের বিয়ে হয়ে যাওয়ায় কেউ সম্প্রতি পরীক্ষায় অংশ নেয়নি।
ব্রহ্মপুত্র নদের তীব্র ভাঙনের শিকার কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারি উপজেলায় দারিদ্র্যতা প্রকট। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের তিনটি ইতিমধ্যে নদীর বুকে কার্যত বিলীন হয়ে গিয়েছে। বাকি তিনটিরও অর্ধেক গ্রাস করেছে ব্রহ্মপুত্র। অবশ্য দারিদ্রের পাশাপাশি মোবাইল ফোনে প্রেমকেই বাল্যবিবাহের জন্য দায়ী করেছেন স্থানীয়রা। মেয়েদের পাশাপাশি স্কুলপড়ূয়া অনেক ছেলেও করোনা কালে বিয়ে করে ফেলেছে।
অবশ্য বেসরকারি সংস্থা আরডিআরএস বাংলাদেশের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ থেকে ২০২১ পর্যন্ত চিলমারি উপজেলায় বাল্যবিবাহ হয়েছে ১৩৮টি। এহেন ৭০টি ঘটনা আটকানো সম্ভব হয়েছে। শিক্ষকদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, করোনা কালে নটারকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪০ জনের বেশি, দক্ষিণ খাউরিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজে শুধু নবম ও দশম শ্রেণির ২০ জনের অধিক ছাত্রছাত্রী এবং চিলমারি ইউনিয়নের কড়াই বরিশাল নিম্ন মাধ্যমিক স্কুলের ৭ম ও ৮ম শ্রেণির প্রায় ২০ ছাত্রীর বিয়ে হয়েছে। স্কুলছুট অনেক ছেলেমেয়েরও বিয়ের হিসাব কেউ রাখছে না। চিলমারি উপজেলার ইউএনও ও উপজেলা বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মাহবুবুর রহমান গত সেপ্টেম্বরে থানাহাট, রমনা ও রানিগঞ্জ ইউনিয়নকে প্রাথমিকভাবে শতভাগ বাল্যবিবাহ মুক্ত ঘোষণা করেন। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, দেশে করোনার কারণে বিয়ের হার বেড়েছে।