স্টাফ রিপোর্টার: জ্বর-সর্দিতে আক্রান্ত কলকাতার অধিকাংশ শিশু। সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতালে শয্যাসংকট। অবস্থা এতটাই জটিল যে, সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে একটি বেডে একাধিক শিশু। অবস্থা সামাল দিতে বি সি রায় শিশু হাসপাতালে চিকিৎসকদের ছুটি আপাতত বাতিল করা হচ্ছে। আক্রান্তদের বেশিরভাগের বয়স ০-৫ বছরের মধ্যে। তবে বারো বছর বা বেশি বয়সের বাচ্চার সংখ্যাও কম নয়।
স্বাস্থ্যভবন থেকে ইতিমধ্যে মেডিক্যাল, এনআরএস ও বি সি রায় শিশু হাসপাতাল ঘুরে গিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। স্বাস্থ্যভবনের কর্তাদের অভিমত, ফি বছর ঋতু পরির্বতনের সময় ৫ বছর পর্যন্ত বাচ্চাদের জ্বর-সর্দির সংক্রমণ বাড়ে। কিন্তু এবার যেন বেলাগাম পরিস্থিতি। অ্যাডিনো ভাইরাসের সফট টার্গেট শিশুদের ফুসফুস। প্রথমে ঘুসঘুসে জ্বর, সঙ্গে কাশি। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মারমুখী চেহারা নিচ্ছে জ্বর-সর্দি-কাশি। ফুসফুসে সংক্রমণ এমন অবস্থায় যে, বাচ্চা হাঁ করে শ্বাস নিচ্ছে, বললেন বি সি রায় শিশু হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. দিলীপ পাল। দিলীপবাবুর কথায়, “হাসপাতালের ৮০টি বেড এবং আইসিইউ ভরতি। অবস্থা সামাল দিতে সব চিকিৎসকের ছুটি বাতিল করা হচ্ছে।” কয়েকটি সরকারি হাসপাতালে একটি বেডে একাধিক বাচ্চাকে রাখা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: SSC Scam: হিসেবের খাতায় থাকা কোড নামের আড়ালে কে? জানতে ফের কুন্তলকে জেরা ইডি’র]
গত দেড়মাসে মেডিক্যালে অন্তত তিনটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে জ্বর-সর্দিতে। একই অবস্থা এনআরএস বা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. প্রভাসপ্রসূন গিরির কথায়, ‘‘যার বাড়িতে বাচ্চা রয়েছে সে-ই জানে কী সমস্যা চলছে। কলকাতায় বাচ্চাদের জ্বর-সর্দি যেন মহামারীর আকার নিয়েছে। শুরুতেই বাচ্চাদের ফুসফুসে আক্রমণ শানাচ্ছে ভাইরাস। রক্তে অক্সিজেন সংবহন বাধা পাচ্ছে। কোষে অক্সিজেন কমছে। ফলে ২-৩ দিনের মধ্যে বাচ্চা নেতিয়ে পড়ছে।’’ ডা. গিরির কথায়, ‘‘শুরুতেই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। বাচ্চাদের সাধারণত অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয় না। কিন্তু সুস্থ করতে অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়াও পথ নেই। তাই ডোজ ঠিক করতে হবে। অন্যথায় শ্বাসকষ্ট কমলেও পরে ওই ওষুধ কাজ না করতেও পারে।’’ মেডিক্যাল কলেজের শিশুরোগ ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞ ডা. মিহির সরকারের কথায়, ‘‘অ্যাডিনোর মতো মেটানিমো ভাইরাসের সংক্রমণ থেকেও বাচ্চারা অসুস্থ হচ্ছে। দশ-বারো দিনের আগে বাচ্চা সুস্থ হচ্ছে না। তবে একবছরের কম হলে আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।’’ মিহিরবাবুর আশঙ্কা, সম্ভবত বড়দের থেকেই সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। যেহেতু প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। তাই দ্রুত অসুস্থ হচ্ছে।’’