সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আফগানিস্তানে তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দিল চিন! তালিবান মনোনীত আধিকারিককে বেজিংয়ে নিযুক্ত আফগানিস্তানের রাষ্ট্রদূতের মর্যাদা দিল জিনপিং প্রশাসন। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে তালিবান সরকারকে ‘কূটনৈতিক স্বীকৃতি’ দেওয়া প্রথম দেশ হল চিন।
পিটিআই সূত্রে খবর, মঙ্গলবার এই বিষয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে চিনের (China) বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি আফগানিস্তানকে আন্তর্জাতিক মহল থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া উচিত নয়।” এর আগে কাবুল থেকে প্রকাশিত কয়েকটি রিপোর্টে বলা হয়েছিল, চিন তালিবান মনোনীত বিলাল করিমিকে রাষ্ট্রদূতের মর্যাদা দিয়েছে এবং এখানে তিনি বিদেশমন্ত্রকের কাছে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন।
[আরও পড়ুন: ‘ইহুদি বলেই চুপ?’, হামাসের হাতে মহিলাদের ধর্ষণ নিয়ে রাষ্ট্রসংঘকে তোপ নেতানিয়াহুর]
জিনপিং প্রশাসনের এই পদক্ষেপের স্বপক্ষে ওয়াং বলেন, “আমরা আশা করছি বিশ্বের প্রত্যাশাগুলো পূরণে আফগানিস্তান সচেষ্ট হবে। একটা উন্মুক্ত রাজনৈতিক পরিকাঠামো গড়ে তুলবে। সমস্ত ধরণের সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা করবে। অন্যান্য দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করবে। বিশেষ করে প্রতিবেশি দেশগুলোর সঙ্গে।”
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, ২০২১ সালে আফগানভূমে তালিবান ক্ষমতায় আসার পর অন্য কোনও দেশ তাদের স্বীকৃতি দেয়নি। মানবাধিকার লঙ্ঘন ও মহিলাদের অধিকার হনন করার জন্য মোল্লা আখুন্দজাদার সরকার সমালোচিত হয়েছে। কিন্তু রাশিয়া ও পাকিস্তানের মতো চিনও কাবুলে তাদের দূতাবাস খুলে রেখেছিল। বর্তমানে চিন ও রাশিয়ার হাতে তামাক খাচ্ছে তালিবান বলেও একাধিক রিপোর্টে বলা হয়েছে। ফলে চিনের এই পদক্ষেপে ভারত উদ্বিগ্ন। আফগানিস্তানে বিপুল বিনিয়োগ রয়েছে দিল্লির। তালিবান শাসকরা আশ্বাস দিয়েছে, উন্নয়নের স্বার্থে ভারতের কাজে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না তারা। নয়াদিল্লিও পর্দার আড়ালে আলোচনা চালাচ্ছে তালিবানের সঙ্গে। ফলে বিশেষ সুবিধা করতে পারছে না পাকিস্তান। মনে করা হচ্ছিল কাবুলে পালাবদলের পর কাশ্মীর অশান্ত হয়ে উঠবে। তা হয়নি। এবার ভারতকে চাপে ফেলতে ছায়াযুদ্ধে তালিবানকে হাতিয়ার করতে পারে কমিউনিস্ট দেশটি।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে আফগানিস্তান (Afghanistan) থেকে আমেরিকা সেনা প্রত্যাহার করলে ক্ষমতা দখল করে তালিবান। যাকে কাজে লাগিয়ে আফগানভূমের খনিজ সম্পদ আহরণে উদ্যোগী হয়েছে চিন। তালিবানের সঙ্গে আমেরিকার তিক্ত সম্পর্ককে হাতিয়ার করেই আধিপত্য বিস্তার করতে চাইছে বেজিং। গত সেপ্টেম্বর মাসে ৬৫০ কোটি মার্কিন ডলারের সাতটি খনি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে বলে জানিয়েছিল তালিবান শাসকরা। যে যে সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাবুলের চুক্তি হয়েছে সেগুলোকে স্থানীয় কোম্পানি বলে দাবি করে তালিবান প্রশাসন। কিন্তু এই কোম্পানিগুলোর শিকর রয়েছে চিনে।